ইত্তেফাক
২২শে মার্চ ১৯৬৪
শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে আবার মামলা শুরু
(ষ্টাফ রিপাের্টার)
ঢাকার এস, ডি, ও (নর্থ) গতকল্য (শনিবার) আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারী শেখ মুজিবর রহমান, অন্যতম আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সেক্রেটারী এডভােকেট শাহ আজিজুর রহমান এবং এন, ডি, এফ-এর জনাব শামসুল ইসলাম, এডভােকেট-এর জামিনের আবেদন শ্রবণের পর তাহাদের প্রত্যেককে ৫০০ টাকার জামিনে মুক্তি দেন।
অভিযােগের বিবরণে প্রকাশ, গত জানুয়ারী মাসে প্রাদেশিক গভর্নর জনাব মােনেম খান সাভার দাঙ্গা-দুর্গত শিবির পরিদর্শন করিয়া যখন ঢাকা প্রত্যাবর্তন করিতেছিলেন, তখন সাভারগামী একটি জীপ হইতে তাঁহার গাড়ীর উপরে এক বান্ডিল প্রচারপত্র নিক্ষিপ্ত হয়। উক্ত বান্ডিল গভর্নরের গাড়ীর কাঁচে আঘাত করে এবং তাহার জীবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। জীপখানি শেখ মুজিবর রহমান, শাহ আজিজুর রহমান এবং জনাব শামসুল ইসলামের দুইখানি প্রাইভেট গাড়ীর পিছনে পিছনে সাভার যাইতেছিল।
ঢাকার ডেপুটি কমিশনার উক্ত জীপ আটকাইয়া তাহা হইতে মুদ্রণকারী ছাপাখানার নামহীন কিছু সংখ্যক প্রচারপত্র উদ্ধার করেন। উক্ত প্রচারপত্রের শিরােনাম ছিল “পূর্ব পাকিস্তান রুখিয়া দাঁড়াও”।
এই ব্যাপারে ঘটনাস্থলে জনাব নূরুল ইসলাম ও জনাব শফিউল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ ঘটনা তদন্তের পর শেখ মুজিবর রহমান, শাহ আজিজুর রহমান, জনাব শামসুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক জনাব তাজুদ্দীন আহমদ, জনাব নূরুল ইসলাম, জনাব শফিউল ইসলাম এবং জনাব মনসুর আলীর বিরুদ্ধে প্রেস এণ্ড পাবলিকেশন্স অর্ডিন্যান্স ও পাকিস্তান দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারার অপরাধ অনুষ্ঠান ও অনুষ্ঠানে সহায়তার অভিযােগে চার্জশীট দাখিল করে। এই ৭ জনের মধ্যে জনাব তাজুদ্দীন আহমদ ছাড়া বাকী সকলেই জামিনে মুক্ত আছেন।
জনাব তাজুদ্দীনের পক্ষ হইতে কোন জামিনের আবেদন পেশ করা হয় নাই। প্রকাশ, অপর কোন একটি ব্যাপারেও তাঁহাকে গ্রেফতার করা হইয়াছে। জনাব আতাউর রহমান খান, জনাব জহিরুদ্দীন আহমদ, সৈয়দ আজিজুল হক, খােন্দকার মুস্তাক আহমদ, জনাব আনােয়ারুল হক, জনাব আবুল হােসেন এবং মঞ্জুরুর রহিম প্রমুখ আইনজীবী গতকল্যকার জামিনের আবেদন পেশ করেন।
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব