ইত্তেফাক
২১শে মে ১৯৬০
চাপে পড়িয়া বিবৃতি প্রদানে বাধ্য হইয়াছি
শেখ মুজিবুরের মামলায় বাদীপক্ষের প্রধান সাক্ষীর উক্তি
(ষ্টাফ রিপাের্টার)
গতকল্য (শুক্রবার) ঢাকা বিভাগের স্পেশাল জজ জনাব এ, এস, এম, রাশেদের এজলাসে শেখ মুজিবুর রহমান ও তদীয় ভ্রাতা শেখ আবু নাসেরের বিরুদ্ধে আনীত মামলায় সরকার পক্ষের মূল সাক্ষী জনাব মুজিবুর রহমান চৌধুরী তাঁহার সাক্ষ্যে বলেন যে, পুলিসের চাপে পড়িয়া ও বাধ্য হইয়া তিনি শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ আবু নাসেরের বিরুদ্ধে ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট বিবৃতি প্রদান করেন। জনাব মুজিবুর রহমান চৌধুরীর সাক্ষ্যে সন্তুষ্ট হইতে না পারিয়া সরকার পক্ষ প্রমাণ আইনের ১৫৪ ধারা মােতাবেক সাক্ষীকে “প্রতিকূল” ঘােষণা করিয়া জেরা করেন।
গতকল্য সাক্ষী জনাব মুজিবুর রহমান চৌধুরী সাক্ষ্য প্রদানকালে বলেন যে, তাহাদের আবেদনপত্রের গুণাগুণ বিচার করিয়া সরকার তাহাদিগকে বস্ত্র ক্যালেণ্ডারিং মিল স্থাপনের অনুমতি প্রদান করেন। সাক্ষী বলেন যে, এ ব্যাপারে তিনি সেক্রেটারিয়েটের বাহিরে কাহারও নিকট যান নাই। সাক্ষী আরও বলেন যে, এক সঙ্গে ব্যবসায় করার উদ্দেশ্যেই শেখ আবু নাসেরকে “আল-আমিন ইণ্ডাষ্ট্রিজ”-এর পার্টনার করা হইয়াছে। তিনি বলেন যে, শেখ। আবু নাসের হইতে প্রয়ােজন ছিল না বলিয়া কোন পুঁজি গ্রহণ করা হয় নাই।
গতকল্য সরকার পক্ষে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটার জনাব আজিজুদ্দীন। আহমদ সাক্ষীকে “প্রতিকূল” ঘােষণা ও জেরা করার পর বিবাদী পক্ষের প্রধান কৌসুলী জনাব সােহরাওয়ার্দী দণ্ডায়মান হইয়া আদালতকে এই মামলার অসারতা সম্পর্কে অবহিত করেন। জনাব সােহরাওয়ার্দী বলেন যে, সরকারী নথিপত্র হইতে আমাদের নিকট এতসব প্রমাণ রহিয়াছে যে, এই ব্যাপারে আগাগােড়া শেখ মুজিবুর রহমানের কোন হাত ছিল না। জনাব সােহরাওয়ার্দীর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পেশের পর আদালতের কাজ এই দিনের মত শেষ হইয়া যায়।
অদ্য (শনিবার) পূর্বাহ্নে একই আদালতে জনাব আবুল মনসুর আহমদের বিরুদ্ধে আনীত মামলার আর এক দফা শুনানীর পর শেখ মুজিবুর রহমানের মামলার শুনানী পুনরায় শুরু হইবে।
শুনানীর বিবরণ
গতকল্য শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ আবু নাসেরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযােগে আনীত শুনানী শুরু হইলে সরকার পক্ষের প্রথম সাক্ষী জনাব মুজিবুর রহমান চৌধুরীকে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য হাজির করা হয়। জনাব মুজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন যে, ১৯৫৬ সনে পাবনার হাজী সেকান্দার আলী ও তার ছেলে জনাব আনােয়ার আলী ও জনাব গােলাম হায়দার চৌধুরী এবং সাক্ষী স্বয়ং আল-আমিন ইণ্ডাষ্ট্রীজ” নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। প্রথমােক্ত দুই ব্যক্তি ফাইনান্সিয়ার পার্টনার এবং সাক্ষী ও গােলাম হায়দার চৌধুরী ম্যানেজিং পার্টনার হিসাবে টাঙ্গাইল মহকুমার সাথীহাটিতে একটি বস্ত্র ক্যালেণ্ডারিং কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত করেন। ১৯৫৬ সনের আগস্ট মাসে তাঁহারা উক্ত শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য পূর্ব পাকিস্তান সরকারের শিল্প ডিরেক্টরের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট অনুমতি প্রার্থনা করেন। কিন্তু এ সম্পর্কে কোন অনুমতি পাওয়া যায় নাই। এই সময়ে প্রদেশে নয়া শিল্প ইউনিট স্থাপনের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করিয়া খবরের কাগজে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তি অনুসারে তাঁহারা পূর্ববর্তী আবেদন পত্রের উল্লেখক্রমে প্রাদেশিক সরকারের নিকট ১৯৫৭সনের ৫ই মার্চ একখানা তাগিদপত্র প্রদান করেন। শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ার ব্যাপারে অনুমতি লাভের জন্য প্রথম হইতে আমার উপর চেষ্টা করার ভার ছিল। আমি এই ব্যাপারে প্রাদেশিক সেক্রেটারিয়েটে যাওয়া-আসা করি এবং তাগিদ ইত্যাদি প্রদান করি। অবশেষে আমাদের দরখাস্তের গুনাগুণের উপর উপরােক্ত ক্যালেণ্ডারিং কারখানা স্থাপনের অনুমতি প্রদত্ত হয়।
এই সময়ে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করেন যে, তাহারা সেক্রেটারিয়েটের বাহিরে কাহারও নিকট আনাগােনা করিয়াছেন কিনা। তদুত্তরে সাক্ষী বলেন যে, তিনি সেক্রেটারিয়েটের বাহিরে কোথাও চেষ্টা তদবীর করার জন্য যান নাই।
অতঃপর সাক্ষী বলেন যে, দরখাস্ত করার পর এবং অনুমতি লাভের পূর্বে তাঁহারা শেখ আবু নাসেরকে পার্টনার হিসাবে গ্রহণ করিয়া তিন আনা অংশ দেওয়ার শর্তে একটি পার্টনারশীপ দলিল সম্পাদন করেন। স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর শেখ আবু নাসের কোন মূলধন দিয়াছিলেন কি-না জিজ্ঞাসা করিলে সাক্ষী বলেন যে, তাহার কোন মূলধন ছিল না। কারণ তখন মূলধনের প্রয়ােজন ছিল না। সাক্ষী আরও বলেন যে, হাজী সেকান্দর আলী ও জনাব আনােয়ার আলী আল-আমিন ইণ্ডাষ্ট্রীজের ফাইনান্সিয়ার পার্টনার হিসাবে প্রাথমিক খরচপত্র প্রদান করিতেছিলেন।
এই সময়ে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর জিজ্ঞাসা করেন যে, তবে শেখ আবু নাসেরকে কেন পার্টনার করিয়াছিলেন?
উত্তরে সাক্ষী বলেন যে, একসঙ্গে ব্যবসা করার উদ্দেশ্যেই তাঁহাকে পার্টনার করা হয়।
সাক্ষী বলেন যে, এই শেষােক্ত পার্টনারশীপ দলিল ১৯৫৭ সনের ১৪ই নভেম্বর সম্পাদন করা হয়।
সাক্ষী আরও বলেন যে, বস্ত্র ক্যালেণ্ডারিং কারখানা প্রতিষ্ঠার জন্য অনুমতি লাভের পর তাঁহারা আমদানী লাইসেন্স লাভ করেন।
ম্যাজিষ্ট্রেটের সম্মুখে প্রদত্ত বিবৃতি
এই সময় স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর ঢাকার প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব এ, মজিদের সম্মুখে সাক্ষী ইতিপূর্বে প্রমাণ আইনের ১৫৪ ধারা মােতাবেক যে বিবৃতি প্রদান করেন উহা আদালতে পেশ করেন। উক্ত বিবৃতিতে সাক্ষী বলেনঃ “১৯৫৬ সনে আওয়ামী লীগ প্রাদেশিক মন্ত্রিসভা গঠনের পূর্বে ‘আল-আমিন ইণ্ডাষ্ট্ৰীজ টাঙ্গাইলে একটি বস্ত্র ক্যালেণ্ডারিং কারখানা স্থাপনের জন্য অনুমতি প্রার্থনা করিয়া দরখাস্ত দাখিল করে। কিন্তু উক্ত দরখাস্ত সম্পর্কে শিল্প ডিরেক্টরেট কোন ব্যবস্থা অবলম্বন না করিয়া উহা ফেলিয়া রাখে। অতঃপর আওয়ামী লীগ মন্ত্রিসভা গঠন করে। শেখ মুজিবুর রহমান উক্ত মন্ত্রিসভার বাণিজ্য, শ্রম ও শিল্প বিভাগের ভারপ্রাপ্ত হন। এই সময়ে অর্থাৎ ১৯৫৬ সনের ৭ই সেপ্টেম্বর তাহারা শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারী বাসভবনের গিয়া উক্ত শিল্প গড়ার অনুমতি প্রার্থনা করেন। তিনি তকালীন আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারী হিসাবে আওয়ামী লীগ তহবিলে দেড় হাজার টাকা চাঁদা দাবী এবং পরে তাঁহার ভ্রাতা শেখ আবু নাসেরকে বিনা পুঁজিতে প্রতিষ্ঠানের একজন পার্টনার করার শর্ত আরােপ করিয়া উক্ত অনুমতি ও প্রয়ােজনীয় লাইসেন্স ইত্যাদি প্রদানের আশ্বাস দান করেন। তদনুযায়ী সাক্ষী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হইতে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ তহবিলের জন্য শেখ আবু নাসেরের মাধ্যমে নগদ ১৫ শত টাকা চাঁদা প্রদান করে এবং তাহাকে বিনাপুজিতে তিন আনা শেয়ার প্রদানের শর্তে আর একখানা দলিল সম্পাদন করেন। এইরূপে শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগ তহবিলের নামে অথবা ব্যক্তিগত ভাবে উক্ত অর্থ গ্রহণ এবং তাঁহার ভাইকে বিনা পুঁজিতে উক্ত প্রতিষ্ঠানের অংশীদার করার ব্যাপারে সরকারী ক্ষমতার অপব্যবহার করেন।”
অতঃপর স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর সাক্ষীকে জিজ্ঞাসা করেন যে, তিনি ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট “হলফ” করিয়া উপরােক্ত বিবৃতি প্রদান করিয়াছেন কি না?
উত্তরে সাক্ষী বলেনঃ “মামলা তদন্তকালে ম্যাজিষ্ট্রেটের বাসভবনে আমাকে লইয়া যাওয়া হয়। দুর্নীতিদমন বিভাগীয় পুলিসের চাপে বাধ্য হইয়া আমি উক্ত বিবৃতি প্রদান করি। আমি উক্ত বিবৃতি প্রদানকালে ‘হলফ করি নাই।”
সাক্ষীকে প্রতিকূল ঘােষণা
সাক্ষীর উপরােক্ত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটার জনাব আজিজুদ্দিন আহমদ সাক্ষ্য আইনের ১৫৪ ধারা অনুযায়ী সাক্ষীকে “প্রতিকূল” বলিয়া ঘােষণা ও জেরা করার জন্য আদালতের অনুমতি প্রার্থনা করেন। আদালত তাঁহাকে অনুমতি প্রদান করিলে তিনি সাক্ষীকে জেরা করেন।
প্রঃ আমি বলিতে চাই যে, আপনি ঢাকার প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব এ, মজিদের সম্মুখে বিবৃতি প্রদানকালে “হলফ” করিয়াছেন?
উঃ ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট প্রদত্ত বিবৃতিকালে আমি “হলফ” করিয়াছি উহা ঠিক নহে।
প্রঃ আপনি কি বলিতে চাহেন যে, ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট যাহা বলিয়াছেন উহা সত্য নহে?
উঃ পুলিসের চাপে বাধ্য হইয়া আমি উক্ত বিবৃতি প্রদান করিয়াছি। আমি যাহা বলিয়াছি উহ সত্য নহে।
প্রঃ আপনাকে পুলিস চাপ দিয়াছে, উহা আপনি ম্যাজিষ্ট্রেটকে জানাইয়াছিলেন কি?
উঃ আমি ম্যাজিস্ট্রেটকে এ-ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়াছিলাম। এই সময়ে সাক্ষী জনাব আজিজ উদ্দীনের মুখের দিকে তাকাইতেছিলেন। জনাব আজিজ উদ্দীন তখন সাক্ষীকে ধমক দিয়া বলেন “এদিকে চাইবেন না, হাকিমের দিকে চান! (হাস্যরােল)।
প্রঃ আমি বলিতে চাই যে, আপনি বিবাদী পক্ষের ধমক বা বিবাদীর বাধ্য হইয়া এক্ষণে সত্য গােপন করিতেছেন এবং যাহা বলিতেছেন উহা সত্য নহে।
উঃ আমি এখন কোর্টে আছি বিধায় সত্য কথা বলার জন্য প্রেরণা অনুভব করিতেছি। ইহা সত্য নহে যে, আমি এক্ষণে বিবাদীর বাধ্য হইয়া মিথ্যা কথা বলিতেছি।
এই সময়ে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটার ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট প্রদত্ত বিবৃতি পাঠ করেন এবং বলেন যে, উক্ত বিবৃতিতে আপনি শেখ মুজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে আবু নাসেরকে টাকা দিয়াছিলেন বলিয়াছেন।
উঃ আমি যাহা বলিয়াছি পুলিসের চাপে বাধ্য হইয়া বলিয়াছি।
প্রঃ এই মামলায় পূর্ববর্তী দিবসে আপনি সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য কোর্টে আগমন করিয়াছেন?
উঃ হ্যা। গত তারিখেও উপস্থিত ছিলাম।
প্রঃ পূর্ববর্তী তারিখের কয়েকদিন আগে আসামিগণ আপনাকে ধমক প্রদান। করিতেছেন এই মর্মে রমনা থানায় খবর দিয়াছেন।
উঃ পুলিসের জনৈক ইন্সপেক্টর আমাকে রমনা থানায় লইয়া যান এবং তাহার চাপে পড়িয়া উক্ত খবর দিয়াছি।
প্রঃ হাজী সেকেন্দার আলী ও জনাব আনােয়ার আলী ফাইনান্স করিতে অস্বীকার করিয়া আপনাদের সহিত সম্পর্ক ছিন্ন করিয়াছেন কি?
উঃ হাজী সেকেন্দার আলী ও জনাব আনােয়ার আলী ফাইনান্স করিতে অসমর্থ হইয়া কোর্টে এফিডেভিট করিয়া প্রতিষ্ঠানের সহিত সম্পর্কচ্ছেদ করেন। তবে লাইসেন্স পাওয়ার বহু পরে তাঁহারা সম্পর্ক ছিন্ন করিয়াছেন।
প্রঃ আপনারা ফকির চঁাদ নামে এক ব্যক্তিকে উক্ত প্রতিষ্ঠানে গ্রহণ করিয়াছেন। কি?
উঃ হ্যা, আমরা পূর্বাহ্নে সরকারের অনুমতি গ্রহণ করিয়া ফকির চাদ নামে এক ব্যক্তিকে নয়া ফাইনান্সিয়ার পার্টনার হিসাবে গ্রহণ করিয়াছি।
প্রঃ আপনি কি ১৯৬০ সনের ১৮ই মার্চ চট্টগ্রাম হইতে বিমান ডাকে। তদন্তকারী অফিসার জনাব মেহরার আলীকে এই পত্রখানা (কোর্টে দাখিল) প্রেরণ করিয়াছিলেন? উহাতে লেখা রহিয়াছে যে, শেখ আবু নাসের আপনাকে ভীতি প্রদর্শন করিতেছে এবং আপনি তদন্তকারী অফিসারের সাহায্য প্রার্থনা করিয়াছেন।
উঃ হ্যা।
এই সময়ে বিবাদী পক্ষের প্রধান কৌসুলী জনাব হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দী দণ্ডায়মান হইয়া উক্ত পত্রকে নথিভুক্ত করার ব্যাপারে আপত্তি প্রদর্শন করেন। তিনি বলেন, উক্ত পত্র অনুসারে দেখা যাইতেছে যে, শেখ আবু নাসের ও সাক্ষীর মধ্যে তাহাদের ব্যবসায় সংক্রান্ত আভ্যন্তরীণ বিরােধ রহিয়াছে। উল্লেখিত হইয়াছে। কোর্ট সাক্ষীকে জেরা করা সাপেক্ষে নথিভুক্ত করার জন্য উহা গ্রহণ করেন। এই পর্যায়ে সরকার পক্ষের জেরা সমাপ্ত হয়। আদালতের কার্যকাল শেষ হইতে তখন ১০/১২ মিনিট সময় বাকি ছিল। এই সময়ে জনাব সােহরাওয়ার্দী দণ্ডায়মান হইয়া আদালতকে এই মামলার অসারতা সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বলেন যে, সরকারী নথিপত্র হইতে আমাদের নিকট এত প্রমাণ রহিয়াছে যে, আগা-গােড়া শেখ মুজিবুর রহমানের এই ব্যাপারে কোন হাত ছিল না। তাঁহার আমলে যে ১৭টি নয়া শিল্প ইউনিট গঠনের অনুমতি প্রদান করা হয় উহার মধ্যে আল-আমিন ইণ্ডাষ্ট্রিজও রহিয়াছে। মাত্র। এই ব্যাপারে যাহা কিছু করার, সংশ্লিষ্ট বিভাগই করিয়াছেন। এই পর্যায়ে আদালতের কার্য গতকল্যকার মত শেষ হইয়া যায়। অদ্য (শনিবার) আদালতের অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে এই মালার শুনানী পুনরায় শুরু হইবে বলিয়া আশা করা যাইতেছে।
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় খণ্ড: ষাটের দশক ॥ প্রথম পর্ব