বাঙলাদেশ সমস্যায় অষ্ট্রিয়াও উদ্বিগ্ন ইন্দিরা-ব্রুনাের মতৈক্য
ভিয়েনা, ২৭ অক্টোবর (ইউএনআই)- প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আজ রাজনৈতিক আলােচনার সময় অস্ট্রিয়ার নেতৃবৃন্দ ভারত সীমান্তের সাম্প্রতিক ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং পূর্ববঙ্গের শরণার্থীদের নিরাপদে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের জন্য পরিস্থিতি সৃষ্টি উদ্দেশে শ্রীমতি গান্ধীর সঙ্গে ঐকমত্য প্রকাশ করেছেন।
ইতিপূর্বে প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি গান্ধী এবং অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর ব্রুনাে ক্রোয়াস্কর মধ্যে আজ প্রথম দফার রাজনৈতিক আলােচনা শুরু হয়।
বাঙলাদেশ পরিস্থিতি ছাড়াও ভারত ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে অন্যান্য আন্তর্জাতিক এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে আলােচনা হয়।
উভয় পক্ষের মধ্যে এই আলােচনার সময় শ্রীমতি গান্ধী পূর্ববঙ্গের সমস্যার সমাধান এবং ভারতপাক সীমান্ত সঙ্কটের অবসানের একমাত্র উপায় হিসেবে পূর্ববঙ্গের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের গ্রহণযােগ্য রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলেন।
ভারতে আগত শরণার্থীদের সমস্যা এবং ভারত পাক সীমান্ত অঞ্চলে সমরসজ্জা, মূলত: এই দুটো বিষয়ের উপর উভয় পক্ষের আলােচনা কেন্দ্রীভূত ছিল।
কূটনৈতিক মহল মনে করছেন যে, শ্রীমতি গান্ধী বাঙলাদেশ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য শ্রী ক্রেয়িস্কিকে তাঁর সদিচ্ছা প্রয়ােগের অনুরােধ করতে পারেন। এ ছাড়াও তিনি ৯৫ লক্ষ শরণার্থীর ভরণপােষণের জন্য ভারতকে আন্তর্জাতিক সহায়তাদানের প্রশ্নটিও ঐ আলােচনায় তুলবেন।
আজ রাতেই ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানার্থে একটি ভােজসভা ও সম্বর্ধনা সভার আয়ােজন করা হয়েছে। উল্লেখযােগ্য যে, ঐ আলােচনার আগে শ্রীমতি গান্ধী ও অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রপতি শ্রীজোনাসের মধ্যে একটি সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়। এই সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি শ্রীজোনাস একমাত্র পূর্ব বঙ্গের জনগণের ইচ্ছা অনুসারেই পূর্ববঙ্গের সমস্যার সমাধান হতে পারে। এই মত প্রকাশ করেন বলে জানা গেছে।
ইতিপূর্বে শ্রীমতি গান্ধী বেলজিয়াম সফর শেষে তিন দিনের সফরের উদ্দেশ্য ভিয়েনায় পৌঁছলে বিমান বন্দর তাঁকে বিপুলভাবে সম্বর্ধনা জানানাে হয়।
বাঙলাদেশ সমস্যার সমাধানের জন্য প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত দৈনিক ৩০ থেকে ৪০ হাজার শরণার্থীর আগমন বন্ধ করা। অস্ট্রেলিয়ান সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী একথা জানান।
সূত্র: কালান্তর, ২৮.১০.১৯৭১