You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.03.27 | ৭৩ সালে নির্মিত সংগ্রাম ছবিটির কাহিনী প্রায় পুরাটাই সত্যি ঘটনার উপর - সংগ্রামের নোটবুক

২৭ মার্চ ১৯৭১ঃ খালেদ মোশাররফ মার্চ

কনফারেন্সের কথা যখন আমি শাফায়াতের কাছে শুনতে পেলাম তখন আমি যথেষ্ট উদ্বিগ্ন হয়ে যাই এবং তাদের পরিকল্পনা সম্বন্ধে সন্দিহান হয়ে উঠি। আমি শাফায়াতকে তখনই নির্দেশ দিই আমার জন্য অপেক্ষা করনা। প্রয়োজন হলে কর্ণেল খিজির হায়াতসহ সমস্ত পাঞ্জাবী অফিসারকে গ্রেফতার করে ফেল এবং যত পাঞ্জাবী সৈনিক আছে নিরস্ত্র কর। আমি আবার রওনা হয়ে গেলাম। পরে শুনতে পেলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে কি হয়েছে। দশটা বাজার দশ মিনিট আগে কর্ণেল খিজির হায়াত, মেজর নেওয়াজ, ক্যাপ্টেন আমজাদ কনফারেন্সে বসেছিল। এমতাবস্থায় মেজর শাফায়াত জামিল, লে.কবির (বর্তমানে ক্যাপ্টেন), লে. হারুন (বর্তমানে ক্যাপ্টেন ex chief) হঠাৎ সেই কামরায় প্রবেশ করেন এবং পাঞ্জাবী অফিসারদের তাদের অস্ত্র সমর্পণ করার নির্দেশ দেন। মেজর নেওয়াজ নিজে একজন কমান্ডো ছিলেন, তিনি কিছুটা বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন কিন্তু লে. হারুনের ত্বরিত প্রচেষ্টায় তার সে চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং সব পাঞ্জাবী অফিসারকে তারা বাংলাদেশের নামে গ্রেফতার করে। ইতোমধ্যে বাকী বঙ্গশার্দুলরা বাইরে যেসব পাঞ্জাবী সৈনিক ছিল তাদের নিরস্ত্র করে এবং বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দেওয়া হয়। দিনটি ছিল ২৭শে মার্চ। ইতোমধ্যে আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতি সন্নিকটে এসে গেছি। আমার বাহিনী এবং শাফায়াতের বাহিনী বেলা ১১টার দিকে সম্মিলিত হয়। আমি বুঝলাম আমার প্রথম কর্তব্য হল যে সমস্ত এলাকা মুক্ত হয়েছে তা শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করা। আমি প্রথমেই অফিসারদের নিয়ে একা বৈঠক করি এবং এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে কিভাবে কার্যকরী করতে হবে তার সম্বন্ধে আমার পরিকল্পনা জানাই। আমার এই পরিকল্পনায় সিদ্ধান্ত ছিল যে, আমরা মেঘনা নদীকে উত্তরে রেখে পশ্চিম প্রতিরক্ষা লাইন তৈরী করব এবং দক্ষিণে ময়নামতি সেনানিবাস পর্যন্ত মুক্ত করে প্রতিরক্ষা বন্দোবস্ত করব। উত্তর-পূর্বে মৌলভীবাজার থেকে সিলেট পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকা মুক্ত করে সিলেটে আরেকটি ঘাটি স্থাপন করবো। মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সিনেমা গুলি প্রায় সবগুলি কাল্পনিক গল্প নির্ভর। কিন্তু ৭৩ সালে নির্মিত সংগ্রাম ছবিটির কাহিনী প্রায় পুরাটাই সত্যি ঘটনার উপর। কাহিনী সাজানো হয়েছে ৪ ইস্ট বেঙ্গলের বীরত্ব পূর্ণ ঘটনা কেন্দ্রিক। ছবিতে শেষ ১ মিনিটে শেখ মুজিব, জিয়া, শফিউল্লাহ, ও খালেদ মোশাররফ অভিনয় করেন। ছবির সকল অভিনেতার নাম জানি না। তবে দারাশিকো ব্রিগেডিয়ার ইকবাল শফি , খলিল লেঃ কঃ খিজির হায়াতের ভুমিকায় অভিনয় করেছিলেন। সিনেমার ছবি গুলি ঘটনাকে তুলে ধরার জন্য ব্যাবহার করা হয়েছে।