রাত দিন দুর্গত মানুষের সেবা রত, কোনও নির্বাচনী প্রচারণা করেন নি। মওলানা ভাসানী দৰ্গত এলাকা ঘুরে এসে পল্টনের জনসভায় বললেন, ওরা কেউ আসে নি। বক্তৃতার সময় তিনি যেভাবে হাত তুলেছেন তার পাঞ্জাবির হাতার নিচে শত শত লাশের ছবি পত্রিকাতে ছাপা হল। কবি শামসুর রাহমান কবিতায় প্রকাশ করলেন, মওলানার আস্তিন দিয়ে ঢেকে কেবল লাশগুলাে কাফন দেওয়া হয়েছে। এদিকে ভারত থেকে এই ডিজেস্টারের কথা প্রথম প্রকাশ পায়। ভারতীয় সাহায্য চট্টগ্রাম বন্দরে এসে ফিরে যায়। পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ ভারতীয় সাহায্য গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। এল সােভিয়েত রাশিয়া থেকে বিমান বােঝাই ত্রাণসামগ্রী। অনেক ধানাই-পানাইয়ের পর সেগুলাে দুর্গত এলাকায় বিতরনের জন্য যায়। ফলে যত লােক ঘূর্ণিঝড়ে মরেছিল তার দ্বিগুণ মরেছে না খেতে পেয়ে এবং সময়মতাে চিকিৎসা না পেয়ে। এক মাস ধরে সারা এলাকায় লাশের গন্ধে বিষময় আবহাওয়াও পরিস্থিতি বিরাজ করেছিল । বাংলার জনগণ এবার প্রত্যক্ষ উপলব্ধি করল যে জনগণের বন্ধু কে। পাকিস্তান এদেশের জনগণের কোনও স্বার্থ দেখছে না এবং দেখবে না। ইয়াহিয়া খান যে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন ঘােষণা করেছেন সেটাও জনগণের আন্দোলনের কারণে। তবু মনে করা হয়েছিল পাকিস্তান মুসলিম রাষ্ট্র তাই স্বৈরতন্ত্রই এই রাষ্ট্রের কপাল ভাগ্য হিসেবে চিরদিন থাকবে। সামরিক রাজা-বাদশার শাসন চিরদিন এতে চলতে থাকবে। মানুষের মনে ইসলাম যেভাবে আছে নির্বাচন দিলেও যা, না দিলেও হেরফের কিছু হবে তবু ভুল করে পরীক্ষামূলকভাবে ইয়াহিয়া খান নির্বাচন ঘােষণা করে বসলেন। ইসলাম গণতন্ত্র স্বীকার করে না, কোনও ইসলামি দেশে গণতন্ত্র নেই। কিন্তু বাঙালিদের পূর্ব পাকিস্তানে এর ব্যত্যয় হবে না এমন প্রাকৃতিক বিমুখতা হলেও। সারাদেশে নির্বাচন, পূর্ববঙ্গ থেকে আওয়ামী লীগ একক নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে আর অন্য পাকিস্তানি রাজনৈতিক দলগুলাের পূর্ববঙ্গ শাখা থেকে প্রার্থী দিয়েছে। যেমন মুসলিম লীগের ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপ থেকে, জামায়াতে ইসলামি থেকে, ওরা কোমর বেঁধে ইসলামের ধুয়া তুলে নামল। মুজিবের আওয়ামী লীগ ছয় দফা কর্মসূচি নিয়ে নামল। আওয়ামী লীগ পুতদের সেবায় পড়ে রইল, মনে হল যেন তারা নির্বাচনে পরাজিত হবে জেনে নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে এ কাজ করছে। অন্য দলগুলাে এ সুযােগে কেবল ইসলামের দোহাই হাড়তে লাগল আর আওয়ামী লীগ কাফের, তাদের ভােট দিলে বিবি তালাক হয়ে যাবে, তাদের ভােট দিলে মসজিদে কেউ আজান দিতে পারবে না, তারা ইন্ডিয়াকে দিয়ে পূর্ব বাংলাকে ইন্ডিয়া বানাবে- দিন-রাত মাঠে-ময়দানে বকতে লাগল। এরই মাঝে হঠাৎ একদন রেডিও-টিভিতে বঙ্গবন্ধু ইলেকশন-পূর্ব তার দলের পক্ষ থেকে ভাষণ দেবার পেলেন।
প্রত্যেক দলের জন্য এমন সুযােগ ছিল। বঙ্গবন্ধু স্থির-ধীর উদাত্ত কণ্ঠে পূর্ব বাংলার স্বার্থ ভাষণে প্রকাশ করলেন। ভাষণ শুনে সকলের শিরদাড়া ক হয়ে গেল। কিন্তু এ সময় নির্বাচনের মাঠ থেকে শেখ মুজিবকে সরানাে যায় না। পূবে ছােটখাটো ইসলামি দলগুলােকে সামরিক গােয়েন্দারা মুসলিম লীগ ও “মতের পক্ষে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দিয়েছে। তারা গােপনে জনমত ৫টি আসনের বেশি নির্বাচনে ম লীগ ও জামায়াতিরা ভাগ করে যাচাই করে পেয়েছিল যে মুজিব ও আওয়ামী লীগের ৪০-৪৫টি আসনের বেশি বেরিয়ে আসবে না। পূর্ব বাংলায় বাকি আসনগুলাে মুসলিম লীগ ও জামায়াতি নেবে। বিদেশি এক সংস্থা এক্সহিবিট পােলের তথ্য প্রকাশ করেছিল আওয়ামী ৯, বাংলায় ১১০-১১৫ আসন পেতে পারে। পশ্চিম পাকিস্তানে শূন্য। সামরিক সরকার। ভড়কে গেলেও পূর্ব ও পশ্চিম হিসেবে আওয়ামা লীগ ঠাই পাবে না এই ধারণা তাদের মূল ছিল। তাই নাকে খাটি সরষের তেল দিয়ে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিশ্চিন্ত রইল। রে কারচুপি করার দিকে নির্বাচন কর্মকর্তা কিংবা প্রশাসনিক পর্যায়ে কোনও তাগিদ দিল না। ফলে পাকিস্তানের বুকে এই প্রথম আমার ভােট আমি দিব, যাকে খুশি তাকে দিব’। সত্যযুগের এই বিধি-ব্যবস্থা দেখা গিয়েছিল আর সেদিনই হিসেব করে ফলাফল ঘােষণা। বাংলার মানুষ এমন হয়েছিল সামান্য পােলিং অফিসার থেকে রিটার্নিং অফিসার সকলেই নৌকার পক্ষে ভােট চেয়েছিল; ভােট দিতে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে এক জামায়াত সমর্থন বুঝল লাইনের সবাই নৌকার, অন্যরাও তাকে ফিসফিস করে নৌকায় দিতে বলছিল, তাই জামায়াত সমর্থক পােলিং বুথে এসে চিল্কার করে বলল আমি গােপন কক্ষে সিল দিতে যাব না, সর্বসমক্ষে এখানেই দাড়ি-পাল্লায় মারব। পােলিং অফিসার দৃঢ়ভাবে বললেন, তা আপনি করতে পারেন না বলে তার হাত এমনভাবে চেপে ধরলেন সিল পড়ে গেল নৌকায়। জামায়াতি ফ্যালফ্যাল তাকিয়ে রইল, পােলিং অফিসার নিজে গিয়ে স্লিপটি নিয়ে বাক্সে ভরে দিলেন। সকাল আটটা থেকে বিরতিহীন বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চুপচাপ লাইনে দাঁড়িয়ে নখে রঙ লাগিয়ে পােলিং অফিসার থেকে স্লিপ চেয়ে গােপন বাক্সে ফেলে আসাে। পুলিশ লাইন করার সাহায্য করছে, অদূরে ডিউটিরত মিলিটারিরা দাড়িয়ে তামাশা দেখছে, নতুবা তাঁবুতে গিয়ে ঘুমিয়ে থেকেছে, কোনও গ্যাঞ্জাম নেই। ঠিক পাঁচটায় বাক্স খুলে ভােটপত্র দেখে মার্কা ওয়াইজ গণনা শুরু। হল। একচেটিয়া নৌকা, ভুল-ভ্রান্তিতে দু’একটা অন্য মার্কা পেয়েছে। তাতে কী, গণনা করতে দেড়-দুই ঘণ্টার বেশি লাগল না, ওপর থেকে জালিয়াতি করার নির্দেশও নেই, মিলিটারিরাও চড়াও হয়ে ভােট কেন্দ্র দখল করে নিল না। সারাদেশে রাত দশটার ভেতর রেডিও-টিভিতে ফলাফল সম্পূর্ণভাবে ঘােষিত হয়ে গেল। কি সর্বনাশ! পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামা লীগ কেন্দ্রের ১৬৯ আসনের ভেতর ১৬৭টি আসন লাভ করল, পূর্ব পাকিতাল প্রাদেশিক পরিষদে ৩০০ আসনের ভেতর ২৮৮টি আসন পেয়ে গেল। পাকিস্তান গণপরিষদ বা কেন্দ্রীয় সংসদের ৩১৩টি আসন, তাই কী হল? সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন আগুন লীগ পেয়ে গেল। পশ্চিম পাকিস্তানে জুলফিকার আলী ভুট্টোর নবগঠিত দল পাক পিপলস পার্টি অদ্ভুতভাবে ৮৩টি আসন পেয়ে যায়। যদিও তা আওয়ামী লাগে চাইতেও কম তবু লাফালাফিটা দেখা গেল দ্বিগুণ। মুসলিম লীগ বলতে গেলে ৭ গেল। যে নুরুল আমিনকে ১৯৫৪ সালে খালেক নেওয়াজ কবর দিয়েছিলেন সে আমিন অদ্ভুতভাবে জিতে গেল, অন্য একটি আসন পেল স্বতন্ত্র প্রার্থী ত্রিদিব রায়। আ কবর দিয়েছিলেন সেই নুরুল আওয়ামী লীগের জয় এমনি হয় নি, পূর্ব বাংলায় পাকিস্তান ভেতরে একদম পাশ্চম পাকিস্তানেও কিছুটা পচেছে। পশ্চিম পাকিস্তানে যারা বাঙালি ছিল তারা সে ভেতরে একদম পচে গেছে, নে যারা বাঙালি ছিল তারা যে কতটা কষ্ট পেয়েছে, চাকরির খাতিরে কিংবা অন্য কারণে সেখানে গিয়েছে, তাদের গাদ্দার, চতিয়া বঙ্গাল বলে তাে গালাগাল দিয়েছে। বাঙালি মেয়েরা শাড়ি পরে রাস্তায় নামলে হিন্দুকা আওরত বলেছে, অথচ পূর্ব পাকিস্তানে তারা রাজা-বাদশার হালে থাকে।
পাকিস্তানে তারা বাংলা কথা কাউকে বলতেই দেয় না, আর পূর্ব বাংলায় এসে তারা। বাঙালিকে বাধ্য করে উর্দু জবানে কথা বলতে। তাহলে বাঙালিরা বুঝে গেছে পাকিস্তান কী। চিজ নির্বাচনের পর পরই বিদেশি পত্রিকা মন্তব্য করল, বাংলার মানুষের জয়কার হঠাৎ একটা নাটকীয় সম্ভাবনাকে তুলে ধরেছে। আজ না হলে কাল এটা সত্যি হবে যে, পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পৃথক হয়ে যেতে পারে। ওদের মাঝখানে রয়েছে দেড় হাজার মাইলের ব্যবধান। তাছাড়া ভাষা-সংস্কৃতি-আচরণ ও মানসিক অবস্থা মােটেই এক নয়, ধর্মবােধও তাদের এক নয়। পাকিস্তানিরা যেমন কট্টর, বাঙালিরা উদার। আর তাদের মাঝখানে রয়েছে শত্রুভাবাপন্ন ইন্ডিয়া, বলতে গেলে একটা পরাশক্তি। যদিও ধারণা করা হয়েছিল নির্বাচনে সামরিক বাহিনী হস্তক্ষেপ করবে, শেষ পর্যন্ত করে নি নানা কারণে। সামরিক বাহিনীর ভেতর অন্তর্কোন্দল ছিল, পাঞ্জাবিদের শ্রেষ্ঠতা যা আইয়ুব খান বেশি করে সৃষ্টি করে দিয়েছে। তার ওপর তাদের একটা ফালতু জনমত জরিপ হাতে ছিল, হয়তাে সেটাই সঠিক ছিল কিন্তু এক মাস আগে যে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় হয় তাতে তছনছ করে দিয়েছে সব কিছু। এতটাই হবে স্বয়ং বঙ্গবন্ধু নিজেও আশা করেন নি। তিনি নির্বাচনে বেশিরভাগ কলাগাছ প্রার্থী দিয়েছেন, কলাগাছই জিতে গেছে, অর্থাৎ মানুষ কলাগাছকে ভােট দেয় নি, ভােট দিয়েছে বঙ্গবন্ধুকে। এদিকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির কোনও আদর্শ নেই, নির্বাচনী মেনিফেস্টো পর্যন্ত তারা দিতে পারে নি, কেবল আইয়ুবের সঙ্গে ভুট্টোর বিরােধের কারণে এই অঘটন ঘটে গেছে। সিন্ধুর লারকানার নবাবপুত্র ভুট্টো ছিল লন্ডনে, আইয়ুব খান তাঁকে ডেকে নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী করেছিলেন। ভুট্টো যা যা চেয়েছিল আইয়ুব তাকে যােগান দিয়েছিলেন। কিন্তু হাতে চাদ চাইলে তাে তা খসিয়ে এনে দিতে পারে না। যে শিশু খুব দুর্ভাগা সে পিতামাতার কাছে যা চায় তা পায়; একদিন চাদ খসিয়ে এনে দিতে বললে বাপ তা করতে পারে না। ফলে সে বাপকে খুন করে পিতৃহারা হয়। চার বছর ভুট্টো আইয়ুবের পেয়ারি বালক হিসেবে যা ইচ্ছা তাই করেছে, বলতে গেলে বিশ্বক্ষেত্রে আইয়ুবকে ডুবিয়েছে। আইয়ুব একবার লন্ডন গিয়ে কূটনৈতিকভাবে জুততা খেয়ে এসেছেন, সঙ্গে করে পেয়ারি লোককে নিয়ে ইসলামাবাদ বিমানবন্দরে নামলেন বটে, নেমেই এক লাথিতে ভুট্টোকে সরিয়ে দিলেন। এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রাসাদেও প্রবেশ করতে দিলেন না। ভুট্টো সােজা অমল স্টেশনে চলে গেলেন। ট্রেনে চেপে করাচির উদ্দেশে রওনা হলেন। যদিও এক্সপ্রেস ” জনতার চাপে প্রায় প্রত্যেক স্টেশনে সেই ট্রেনকে থামতে হয়েছিল।
প্রায় তিন দিন পরে যখন ভুট্টো করাচি গিয়ে নামলেন তখন তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। করাচি ২ তিনি পাকিস্তান পিপলস পার্টির নাম ঘােষণা করেন। কেউই ভাবতে পারেনি এই *পিপলস পাটি অবিশ্বাস্যভাবে নির্বাচনে এতগুলাে আসন পেয়ে যাবে। নীতিহীন কোনওরকম বাছ-বিচার না করে নির্বাচিত হওয়া মাত্র ঘােষণা দিলেন, খুতেই নয়, উঁইফোড় পিপলস পাটি আ দাম্ভিক ভুট্টো কোন ও রকম মুজিবকে কিছুতেই নয়, আমাকেই প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। এই অসম্ভব ও অমার্জনীয় দাবি শুনে ইয়াহিয়া খানের পেটের নাড়িভুড়ি মােচড়ে উঠল, ঢেকুর তুলে বললেন , বেশক বেটা! জুলফিকার আলী ভুট্টো কিছুতেই শেখ মুজিবকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী তা পাকিস্তানের নেতা বলতে রাজি হলেন না। বাঙালিরা চিরদিন চাকরবাকর, কী করে তা হুকুমে পাকিস্তান চলতে পারে? দেখা গেল কোনও পাকিস্তানি চায় না যে মন্দিত. বেতমিজ’ লােক পাকওয়াতানের উজিরে আজম হােক। ইচ্ছা থাকলেও ইয়াহিয়া, পাকিস্তানিদের চাপে পড়ে শেখ মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে রাজি হলেন না। নির্বাচনের পর পরই ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা কিন্তু এক মাস, দুমাস, আড়াই মাস হয়ে গেলেও সমস্যার কোনও সুরাহা হল না। ইয়াহিয়া খান ও পাকিস্তানি কায়েমি স্বার্থবাদীরা ভেবেছিল নির্বাচন দিয়ে পাকিস্তানে শত্রু বিচ্ছিন্নতাবাদী শেখ মুজিব ও তার দল আওয়ামী লীগকে পরাজিত করে চিরদিনের জন্য পাকিস্তান থেকে মুছে ফেলবে; পাকিস্তানি শাসক শােষকদের তল্পিবাহক কয়েকটি ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দলের নেতারা বাংলাদেশে শােচনীয় ভাবে পরাজয় বরণ করে। ভােটের বিপ্লবের মাধ্যমে স্বাধিকারকামী বাঙালি গােপনে দেশের ভাগ্য শেখ মুজিবের হাতে তুলে দেয়, এটা ভােট গণনা শেষ হওয়ার আগে কেউ ধারণা করেনি। এমনকি ইয়াহিয়া ভুট্টো ও অন্যান্য হােমড়া চোমড়া সকলেই একটা হিসেব করে রেখেছিল, বড়। জোর শেখ মুজিব কয়েকটি আসন পাবে ইলেকসানের আগে বিদেশি একটা জনমত সমীক্ষা প্রকাশিত হলে ইয়াহিয়া খান পরিস্থিতি কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিলেন। কিন্তু অনেক দেরিতে। তবে পাকিস্তানে কেবল তিনি একটা মহৎ কাজ করে গেছেন, তা হল মিলিটারি ও কায়েমি স্বার্থবাদীদের চাপ সত্ত্বেও নির্বাচন ওলট পালট করে দেওয়ার জন্য। নির্বাচন কমিশনকে বাধ্য করেন নি। আর যিনি বঙ্গবন্ধুকে বাঙালি জাতির অবিস্মরণীয় নির্বাচিত করে দিলেন, এক নেতা এক দেশ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ বলতে গেলে তারই অবদান, সে কথা ভেবে মনে হয় ইয়াহিয়ার দানব, কার্টুন চেহারা কামরুল হাসান না। আঁকলে পারতেন।
সূত্র : বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ বিজয় ও বঙ্গবন্ধুর জীবন উৎসর্গ – শামসুল আলম সাঈদ