জনসংখ্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করুন- কামারুজ্জামান
শিল্পমন্ত্রী জনাব এ এইচ এম কামারুজ্জামান গতকাল বাকশাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নবনিযুক্ত জেলা বাকশাল সম্পাদকবৃন্দকে সরকারের জনসংখ্যা পরিকল্পনা ও শ্রম বিনিয়ােগ কর্মসূচীকে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে বাস্তবায়িত করার আহ্বান জানান। তিনি জেলা বাকশাল সম্পাদকবৃন্দেগর ছয়দিন স্থানরী প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর তৃতীয় দিবসের প্রথম অধিবেশনে দ্বিতীয় বিপ্লবের অধীনে জনসংখ্যা পরিকল্পনা ও শ্রম বিনিয়ােগ কর্মসূচী শীর্ষক মূল প্রতিবেদনে বলেন, জাতীয় সমস্যা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। যে পরিমান জনসংখ্যা সে অনুযায়ী সম্পদ না থাকলে জাতীয় জীবনে কল্যাণ সাধন করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। এ প্রসঙ্গে শিল্প মন্ত্রী বর্তমান বাকশাল নেতৃত্বেকে ভাবীকালের বাকশাল কর্মী ও নেতাদের সচেতন ও উৎসাহী করে তােলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সম্পদ ও জনসংখ্যা সঙ্গতিপূর্ণ হলে জনসংখ্যা কোন সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় না। প্রসঙ্গেক্রমে তিনি বলেন গণচীন ও জাপানাে অতীত জনসংখ্যা ও সমস্যার সাথে সমকালীন অবস্থার তুলনামূলক আলােচনা করেন। তিনি বলেন, জাপানের লােক সংখ্যা দশ কোটি কিন্তু সেই দেশের চাষযােগ্য জমি আমাদের দেশের তুলনায় এক তৃতীয়াংশ মাত্র। এতদাসত্বেও সেখানে খাদ্য ঘাটতি নেই। শিল্পমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন যে, আমাদের যে জমি আছে তা যদি সুনিয়ন্ত্রিত উপায়ে চাষ করা হয় তবে সাড়ে সাত কোটি লােক কোন সমস্যাই নয়। জনাব কামরুজ্জামান দেশবাসীকে গ্রম হতে শহরে আসার প্রবণতা ত্যাগ করার অনুরােধ জানান। তিনি বলেন, এ প্রবণতা গ্রাম বাংলার হাজার হাজার বছরের ঐতিহ্যের প্রতি আঘাত হানবে। গ্রাম ভিত্তিক অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি হবে। শিল্পমন্ত্রী বাকশাল কর্মী ও নেতৃবৃন্দকে বঙ্গবন্ধুর ঘােষিত বিশেষ সমবায় পদ্ধতিকে জনপ্রিয় করে তােলার জন্য আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সমবায় পদ্ধতির সুফল বাকশাল নেতা ও কর্মীদেরই প্রমাণ করতে হবে। জনাব কামারুজ্জামান প্রসাশন ও জাতীয় দলের কর্মীদের একাত্ম হয়ে কাজ করার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরােপ করেন। তিনি বলেন, আদর্শ নীতি ও কর্মপন্থা নির্ণয় বিশেষ গুরুত্ব আরােপ করেন। তিনি বলেন, আদর্শ নীতি ও কপন্থা নির্ণয় করবে দল, বাস্তবায়িত করবে প্রশাসন। তিনি বলেন কেন্দ্র হতে যে পরিকল্পনাই দেয়া হােক না কেন তা যদি স্থানীয় ভিত্তিতে প্রয়ােগ না করা হয় তবে সেই পরিকল্পনা নিরর্থক হয়ে যাবে।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ১৪ আগস্ট ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত