পররাষ্ট্র নীতি পূর্ণ জনসমর্থন লাভ করেছে -কামাল
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব কামাল হােসেন সােমবার সরকারের পররাষ্ট্র নীতির প্রতি জনসমর্থনের গুরুত্বের উপর জোড় দেন। তিনি গভীর সন্তোস প্রকাশ করে বলেন, আমাদের পররাষ্ট্র নীতি জনগণের পূর্ণ সমসর্থন লাভ করেছে। বাসস পরিবেশিত খবরে প্রকাশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী গতকাল বঙ্গভবনে জেলা গবর্নরদের উদ্দেশ্যে ভাষণকালে একথা বলেন। তিনি বলেন, অপরাপর দেশের সাথে সম্পর্ক গড়ে তােলার স্বার্থকতা নিয়েও জনগণের শুভেচ্ছা ও সহানুভুতির ওপর নির্ভরশীল। দুদেশের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ন হলে দুদেশের সরকারের মধ্যে বন্ধুত্ব গভীর হতে পারে। এবং এজন্য পররাষ্ট্র নীতির ভিত্তি জনগণের কাছে ব্যাখ্যা করে বােঝাতে হবে। অন্যান্য দেশের সাথে আমাদের দেশের যে সম্পর্ক, যেসব চুক্তি আমরা সাক্ষর করি এবং যে সহযােগিতা ও কর্মপন্থা আমরা গ্রহন করি, তা জনগণকে জানাতে হবে। যাতে করে তাদের মদ্যে কোন ভুল বােঝাবুঝির অবকাশ না থাকে। এবং যাতে করে তারা বুঝতে পারে এসব চুক্তি কিভাবে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করছে। পররােষ্ট্র মন্ত্রী একই সঙ্গে পররাষ্ট্র নীতির একটি ভিন্ন এবং বৃহত্তর দিক-আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক স্পর্কের ওপর আলােকপাত করেন। তিনি প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি আমদানী ও আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ বিনিয়ােগের জন্য বন্ধুরাষ্ট্রের কাছ থেকে সাহায্য ও সহযােগিতার প্রয়ােজনীয় তার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যদি ও আমাদের মূল উদ্দেশ্য হল রফতানী উন্নয়নের মাধ্যমে আমদের চাহিদা পূরণের জন্য পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা, তবুও কিছু ক্রান্তিকালীন সময়ের জন্য আমাদের অর্থনৈতিক কাঠামাে এবং এর বুনিয়াদকে দৃঢ় ও বিস্তৃততর করতে আমাদের বৈদেশিক সাহায্যের এখনাে দরকার আছে। ১৯৭৫-৭৬ সালে আমাদের রফতানী অভয় আশা করা হচ্ছে ৫শ কোটি টাকা হবে, অন্যদিকে, আমদানী ক্ষেত্রে খরচ হবে প্রায় ২ হাজার ১শ কোটি টাকা। ক বেশী ১৬শ কোটি টাকার এই ঘাটতি বৈদেশিক সাহায্যের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে। তিনি বাংলাদেশের বন, মৎস, কৃষি সম্পদ ও প্রাকৃতিক গ্যাসের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় ভবিষ্যত রয়েছে। কিন্তু এই সম্ভাবনার বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সময়ের দরকার, অর্থ বিনিয়ােগ করা দরকার এবং দরকার শৃঙ্খলা এবং গঠন মূলক প্রচেষ্টা।
সূত্র: দৈনিক বাংলা, ৫ আগস্ট ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত