শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ করাই নয়া ট্রেড ইউনিয়ন ব্যবস্থার লক্ষ্য
বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী জনাব ফজলুল হক মণি বলেছেন, শিল্প ব্যবস্থাপনা, উৎপাদন কার্যক্রম এবং দেশের নেতৃত্বে যথাযােগ্য দায়িত্ব পালনে সকল শ্রমিককে ঐক্যবদ্ধ করার জন্যই নয়া ট্রেড ইউনিয়ন ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়েছে।
মঙ্গলবার অপরাহ্নে খালিশপুরে একটি সিনেমা হলে সমবেত শ্রমিকদের এক বিরাট সভায় তিনি বক্তৃতা করছিলেন। জাতীয় শ্রমিক লীগের খুলনা-যশাের আঞ্চলিক শাখার উদ্যোগে আয়ােজিত এই শ্রমিক সভায় বক্তৃতাকালে জাতীয় দলের সেক্রেটারী বলেন, অতীতে ঔপনিবেশিক শাসনামলে পুঁজিপতির নিজেদের স্বার্থে মেহনতি শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্যেই শিল্প কারখানাগুলিতে বহু ইউনিয়ন ব্যবস্থা চালু রেখেছিলেন। তিনি বলেন, জাতীয় দলের একটি ফ্রন্টরূপে জাতীয় শ্রমিক লীগকে প্রতিষ্ঠিত করার ব্যবস্থা হয়েছে।
শেখ ফজলুল হক মণি বলেন, প্রত্যেক শ্রমিককে সচেতন থাকতে হবে জাতি স্বার্থবিরােধী শ্রমিক স্বার্থবিরােধী ব্যক্তিদের ঘৃণ্য তৎপরতা সম্পর্কে। যারা উৎপাদনে বিঘ্ন সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত যারা শ্রমিকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির তৎপরতায় লিপ্ত তাদের ওপর সদা সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী জনাব আবদুর রাজ্জাক ও বক্তৃতা করেন। তিনি বলেন, একচেটিয়া পুঁজিপতিদের অধিকার খর্ব করে বঙ্গবন্ধুর জাতীয় নীতিতে শিল্প কারখানায় জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিক্রিয়াশীল ও পুঁজিপতিরা কলকারখানায় শ্রমিকদের মধ্যে আঞ্চলিকতা, গােলযােগ বিশৃঙ্খলা ও অনৈক্যের বীজ ছড়িয়ে এই শ্ৰমিকমুখী পদক্ষেপকে বানচাল করার চেষ্টা করছে। তিনি প্রতিক্রিয়াশীল ও পুঁজিপতিদের এই ঘৃণা তৎপরতার বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, বাংলাদেশ কোন মূল্যে এই অপচেষ্টা প্রতিরােধ করবে।
জাতীয় দলের সেক্রেটারী জনাব আবদুর রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেক দেশপ্রেমিক নাগরিকই জাতীয় দলের সদস্যপদ লাভ করতে পারবেন এবং জাতীয় পুনর্গঠনের কাজে সক্রিয় অংশ নিতে পারবেন।
সূত্র: দৈনিক বাংলা, ৩১ জুলাই ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত