হিমাগারের প্রয়ােজন থাকলেও স্থাপনের উদ্যোগ নেই: পরিবহন ব্যবস্থার দুর্দশা আজো ঘােচেনি
অপরদিকে জলপথ হচ্ছে আম পরিবহণের উৎকৃষ্টতম মাধ্যম। কিন্তু মান্ধাতার আমলেও নৌকা ছাড়া উন্নততর জলযানের কোন ব্যবস্থা আজো করা হয়নি।
সাধারণত মহাজনেরা মহকুমার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আম কিনে মহকুমা সদরে নিয়ে আসে। এখনাে ঘরবাড়ি কিংবা মাথায়ই বেশীর ভাগ আম বয়ে আনতে হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চল দূরে থাকা আমের বিরাট কেন্দ্র রহনপুরেও ট্রাক যেতে পারে না। রহনপুরের সাথে ট্রেনে যােগাযােগ রয়েছে। কিন্তু সেখানেও রয়েছে ওয়াগন সমস্যা। বিশেষ ব্যবস্থা করেও নাকি ওয়াগন পাওয়া যায় না। ফলে প্রতি বছর এই রহনপুরেই প্রতি বছর লাখ লাখ টাকার আম পচে নষ্ট হয়। এর মাশুল দিতে হয় আম ক্রেতাদের।
পার্কিং ব্যবস্থা উন্নত না হওয়ার কারনেও অনেক আম নষ্ট হয়। এই অবস্থার উন্নতি করা হলেও অনেক আম পচার হাত থেকে রক্ষা করা যায়। আমের মূল্য অধিক হওয়ার পিছনে দালালঠিকাদারদেরও কালে হাত রয়েছে। তাদের উৎপাত উৎখাত করতে পারলে আমের মূল্য অনেকটা যুক্তিসঙ্গত ও স্থিতিশীল করা যায়। বিশেষ করে আম উৎপাদনকারীদের সমবায় সমিতিভুক্ত করতে পারলে মধ্যস্বত্বভােগীদের উৎপাত সহজে কমান যাবে। তাতে আমের মূল্যহ্রাস পাবে।
সমবায় মার্কেটিং সােসাইটিকে এ ব্যাপারে নিয়ােগ করলে। অনেকটা ভাল ফল পাওয়া যেতে পারে। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আম বিদেশে রফতানী করা যায়। তাতে শুধু এই মহকুমার আম রফতানী করেই চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। প্রতিবেশী ভারতও শুধু একটি জেলার আম রফতানী করে প্রতি বছর ৪/৫ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে।
সূত্র: দৈনিক বাংলা, ২৮ জুলাই ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত