পুতুল রফতানী করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আসবে: শিল্পমন্ত্রী
শিল্পমন্ত্রী জনাব এ এইচ এম কামরুজ্জামান বলেন, কাপড়ের পুতুল রফতানীর মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতি বছর উল্লেখযােগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারে। তিনি এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কুটির শিল্প কর্পোরেশনকে বিদেশে বাংলাদেশের পুতুল বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
রােববার বাংলাদেশ কুটির শিল্প কর্পোরেশনের ডিজাইন সেন্টার আয়ােজিত কাপড়ের তৈরি পুতুল প্রদর্শনী উদ্বোধনকালে তিনি একথা বলেন। প্রদর্শনী দু’সপ্তাহ চলবে। জনাব কামরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের কাপড়ের তৈরি পুতুল খুবই উন্নতমানের। এইসব পুতুল রফতানীর মাধ্যমে বিদেশে বাঙালি জাতির সংস্কৃতি, চিন্তাধারা ও জীবনযাত্রা প্রণালী তুলে ধরা যাবে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, কাপড়ের পুতুল তৈরি ও পুতুল শিল্প বিকাশের দ্বারা শুধু অর্থনৈতিক লাভই হবে না, পাশাপাশি যে বিপুলসংখ্যক মহিলা এই কারুশিল্পের সাথে জড়িত রয়েছেন তাঁদের সৃজনীশক্তি ও প্রতিভার পূর্ণ সদ্ব্যবহার সম্ভব হবে। তিনি বলেন, যারা এই বৃত্তিতে নিয়ােজিত রয়েছেন, অর্থনৈতিক দিক থেকে লাভবান না হতে পারলে তারা বেশিদিন এই বৃত্তিকে থাকবেন
তাই তাদের এই কারুশিল্প ও পুতুল নির্মাণে অধিকতর আগ্রহী করে তােলার উদ্দেশ্যে তিনি কুটির শিল্প কর্পোরেশনকে তৈরি পুতুল কেনার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কুটির শিল্প কর্পোরেশন যাতে বিদেশে কাপড়ের পুতুল রফতানী করতে পারে সেজন্যে বাংলাদেশ কুটির শিল্প রফতানী সংস্থাকে কুটির শিল্প কর্পোরেশনের সাথে সমন্বিত করা হবে। কুটির শিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান জনাব এ কে এম আজিমুল ইসলাম তার বক্তৃতায় বলেন, বিদেশে বাংলাদেশী পুতুলের বেশ কদর রয়েছে।
কুটির শিল্প কর্পোরেশনের চারু ও কারুশিল্প বিভাগের পরিচালক শিল্পী কামরুল হাসান বলেন, একদা বাংলাদেশে পুতুল তৈরি ছিল অবহেলিত। কালের বিবর্তনে আজ পুতুল তৈরি দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছে।
জনাব কামরুল হাসান জানান যে, আজ পর্যন্ত ডিজাইন সেন্টার থেকে প্রায় একশত মহিলা। পুতুল তৈরি শিখেছেন। প্রায় ৫০জন শিল্পী এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের তৈরি ১৮০টি মনােরম ও আকর্ষণীয় পুতুল প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। প্রদর্শিত কাপড়ের তৈরি পুতুল থেকে বাছাই করে মােট ৮জন শিল্পীকে পুরস্কার দেয়া হয় যারা পুরস্কার পেয়েছেন তারা হচ্ছেন: প্রথম পুরস্কার মিসেস রােকসানা বারী, ২য় পুরস্কার মিস গুলশানা খাতুন এবং তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন যথাক্রমে মিস আফসারী বেগম ও মিসেস নীলিমা সিনহা। সান্ত্বনা পুরস্কার পেয়েছেন: মিস আতিয়া সুলতানা বেগম, শেফালী পারভিন, রােকেয়া খাতুন ও রাশিদা খানম।
সূত্র: দৈনিক বাংলা, ৭ জুলাই ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত