দ্বিতীয় বিপ্লবের পটভূমিকায় নয়া আমদানী ও রফতানী নীতি অভিনন্দিত
অর্থনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ
১৯৭৫-৭৬ সালের আগে আর্থিক বিনিয়ােগ নীতি ও জুলাই-ডিসেম্বর মৌসুমের আমদানী নীতি দ্বিতীয় বিপ্লবের পটভূমিকায় ও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে বিভিন্ন মহল মনে করেন। তারা বলেন: গত সােমবার বাণিজ্য ও বৰ্হিবাণিজ্যমন্ত্রী খােন্দকার মুশতাক আহমেদ দেশে উৎপাদন বৃদ্ধিকে লক্ষ্য রেখে যে আমদানী ও রফতানী নীতি ঘােষণা করেছেন তা বিভিন্ন কারণে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৭৪-৭৫ সালের তুলনায় ১৯৭৫-৭৬ সালে রফতানী খাতে আয় প্রায় শতকরা ১১ ভাগ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে। অর্থাৎ এই খাতে মােট আয় হবে ৫৫০ কোটি টাকা।
সরকার কর্তৃক রফতানী বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য উপযুক্ত সুদের হারে পর্যাপ্ত ঋণ সরবরাহের ব্যবস্থা আবগারী, আমদানী শুল্ক, বিক্রয় করে রেয়াত অব্যাহত রাখা, ব্যবসায়ীদের বাজার সমাধানের জন্য বিশেষ সুযােগসহ আমদানী লাইসেন্সের অতিরিক্ত এক্সপাের্ট পারফরমেন্স লাইসেন্স প্রদানের ফলে এই লক্ষ্য অর্জন অসম্ভব কিছু নয় বলে তারা মনে করেন। শুধু তাই নয়, সরকার কর্তৃক রফতানী বৃদ্ধিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে আশানুরূপ অগ্রগতি তথা ভবিষ্যতে অধিকতর পণ্য রফতানীর সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করবে।
তারা বলেন: বর্তমান অর্থ বছরে রফতানীর মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা গত অর্থবছরের চাইতে শতকরা ২২ ভাগ বেশি হবার ফলে একদিকে যেমন দেশে বিভিন্ন শিল্প কারখানার জন্য প্রয়ােজনীয় কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ আমদানী সম্ভব হবে অন্যদিকে তেমনি দেশবাসীর জন্য প্রয়ােজনীয় ভােগ্যপণ্য সরবরাহও নিশ্চিত হবে। চলতি অর্থ বছরের প্রথম ছ’মাসে প্রত্যাশিত বৈদেশিক সম্পদের মধ্যে ২০৮ কোটি টাকা আমাদের নিজস্ব সম্পদের মাধ্যমে এবং প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ ও মঞ্জুরী হিসেবে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হয়েছে। এর মধ্যে বৈদেশিক সাহায্য হিসেবে প্রাপ্ত সম্পদের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ দাতা দেশ থেকে আমদানীর শর্তমুক্ত অর্থাৎ আইটাইত্ত ক্রেডিট হবার ফলে তা দেশের অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তারে সমর্থ হবে বলে তারা মনে করেন।
সূত্র: দৈনিক বাংলা, ২ জুলাই ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত