প্রায় ৬ কোটি পাউণ্ড চা রফতানীর লক্ষ্য নির্ধারিত
গতকাল (শনিবার) এক সরকারী তথ্য বিবরণীতে বলা হয় যে, সরকার ১৯৭৫-৭৬ মৌসুমের (এপ্রিল, ‘৭৫ হইতে মার্চ ‘৭৬) চা নীতি প্রণয়ন করিয়াছেন। চা শিল্পের উৎপাদন ক্ষমতা, উৎপাদন ব্যয়, রফতানীযােগ্য চা, আনুমানিক রপ্তানী মূল্য এবং আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া বর্তমান মৌসুমের চা-নীতি প্রণীত হইয়াছে। চা উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণের জন্য বর্তমানে চা-শিল্প যে সমস্ত সুযােগ-সুবিধা লাভ করিয়া আসিতেছে। সেইগুলি এই নীতি প্রণয়নকালে পুনরিক্ষিত হইয়াছে।
১৯৭৫-৭৬ চা মৌসুমে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ছয় কোটি পাউণ্ড স্থিরিকৃত হইয়াছে। তবে উৎপাদন সম্পর্কে সঠিক মূল্যায়ন সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ করা যাইতে পারে। আভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটাইয়া এবং মৌসুম সমাপনী মজুত বাবদ চা-এর ব্যবস্থা করিয়া এই মৌসুমে প্রায় ৬ (ছয়) কোটি পাউণ্ড চা রুপ্তানী করা যাইবে। এই পর্যন্ত বর্তমান মৌসুমের ২টি নিলাম চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হইয়াছে। ইহাতে প্রতি পাউণ্ড চা গড়ে ৬০০ (ছয়) টাকা হারে বিক্রয় হইয়াছে। টাকার মান পুন: নির্ধারণের পরই এই নিলামদ্বয় অনুষ্ঠিত হইয়াছে। গত বৎসর চট্টগ্রাম নিলামে প্রতি পাউণ্ড চায়ের গড় দাম ছিল ৩৪২ (তিন টাকা বিয়াল্লিশ পয়সা)।
রপ্তানীর লক্ষ্য অর্জনের জন্য নগদ বিক্রি এবং বিনিময় বাণিজ্য—উভয় ব্যবস্থাই চা রপ্তানীর জন্য গ্রহণ করা হইবে। চা রপ্তানী বৃদ্ধির জন্য মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার চা ক্রয় বাজার প্রসারের সম্ভাব্য সকল প্রচেষ্টা চালান হইবে।
রপ্তানীযােগ্য চায়ের প্রচলিত শুল্ক মওকুফ প্রথা অব্যাহত থাকিবে।
চা বাগানগুলিকে ব্যাঙ্কসমূহ প্রচলিত অনুকূল সুদের হারে প্রয়ােজনীয় শস্য বন্ধকী ঋণ প্রদান করিবে। উপকরের হার বর্তমানের প্রতি পাউণ্ডে আড়াই পয়সা হইতে এক পয়সা বৃদ্ধি করিয়া আগামী পহেলা জুলাই হইতে প্রতি পাউণ্ডে সাড়ে তিন পয়সা হারে ধার্য করা হইবে।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ২৯ জুন ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত