বাংলাদেশের উন্নয়নে আমীরাত সাহায্য দিবে
সংযুক্ত আরব আমীরাতের তৈল ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী জনাব ওতাইবা শনিবার রাতে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সহিত এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের উন্নয়নের চাকা সচল করা ও উহা গতিশীল রাখিবার ব্যাপারে নিজ দেশের অঙ্গীকার পুর্নঘােষণা করেন। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করিতে সহায়তা দানের উদ্দেশ্যে আমীরাত এই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশে অর্থ বিনিয়ােগ করিতে পারিলে খুশী হইবে।
এনা জানান, এক প্রশ্নের উত্তরে মি: ওতাইবা বলেন বাংলাদেশ সর্বদাই স্বীয় পণ্যের জন্য আমীরাতে স্থায়ীবাজার লাভ করিবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, আগামী অর্থবৎসরে উভয দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পাইবে। তিনি সুনির্দিষ্টভাবে বলেন, বাংলাদেশ এমন অনেক পণ্য উৎপাদন করে আমীরাত যাহা আমদানী করিতে ইচ্ছুক।
তিনি বলেন, ধর্মীয় ভ্রাতৃত্বের অচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ দুইটি দেশ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, বাণিজ্য ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে সহযােগিতা গড়িয়া তুলিতে পারে।
সুনির্দিষ্টভাবে কারিগরি সহযােগিতার কথা উল্লেখ করিয়া জনাব ওতাইবা বলেন, বাংলাদেশের কারিগরি জ্ঞান-বিজ্ঞান যথেষ্ট, আমীরাতের উন্নয়নে লাভজনকভাবে ইহা কাজে লাগানাে সম্ভবপর। তাহার দেশে বাংলাদেশের অফুরান জনশক্তি ব্যবহারের ব্যাপারে স্বীয় দেশের ইচ্ছাও তিনি ব্যক্ত করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তৈলদর বৃদ্ধির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র উন্নয়নগামী দেশসমূহকে সাশ্রয় দিবার জন্য তৈল উৎপাদক দেশবর্গ চেষ্টা করিতেছে। তিনি শিল্পোন্নত দেশবর্গকে নিজ নিজ ভঙ্গুর অর্থনীতি টিকাইয়া রাখার উদ্দেশ্যে উন্নয়নগামী দেশবর্গের কাছে সস্তায় নিজ নিজ পণ্য বিক্রয়ের পরামর্শ দেন।
ঢাকা ত্যাগ
সংযুক্ত আরব আমীরাত বাংলাদেশের সহিত শিল্প বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক ভিত্তিতে সহযােগিতা করিবে।
চারদিন সরকারী সফর শেষে আরব আমীরাতের তৈলমন্ত্রী জনাব মানা সাইয়িদ আল ওতাইবা ঢাকা ত্যাগের প্রাক্কালে বিমান বন্দরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের নিকট একথা বলেন।
জনাব আল-ওতাইবাকে বিমান বন্দরে বিদায় সম্বর্ধনা জানান পররাষ্ট্র ও তৈলমন্ত্রী ড. কামাল হােসেন এবং রাষ্ট্রপতির বিশেষ সহকারী জনাব তােফায়েল আহমদ।
অতিথিদল গতকাল ইসলামাবাদের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ২৩ জুন ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত