সমূদ্র সৈকতের বালি হইতে টাইটেনিয়াম নিষ্কাশনের পদ্ধতি উদ্ভাবন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন বিভাগ সমুদ্রসৈকতের বালি হইতে অতি মূল্যবান ধাতু টাইটেনিয়াম নিষ্কাশনের এক পদ্ধতি উদ্ভাবন করিয়াছে।
ফলিত রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফখরুল ইসলাম এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, কক্সবাজার টেকনাফ সমুদ্রসৈকতের বালিতে মূল্যবান টাইটেনিয়াম, টাইটেনিয়াম অক্সাইড, ইলিমিনাইট প্রভৃতি রহিয়াছে। গত পাঁচ বৎসর যাবৎ ফলিত রসায়ন বিভাগ টেকনাফ অঞ্চলের বালি লইয়া গবেষণা করিতেছে। ড. ইসলাম জানান, সমুদ্রসৈকতের বিভিন্ন অঞ্চলের বালিতে উপরােক্ত ধাতু বা ধাতুর আকরিক কম- বেশী হওয়া স্বাভাবিক।
যদিও তুলামূলকভাবে এই বালিতে টাইটেনিয়ামের ভাগ কম তবুও কোন উপায়ে টাইটেনিয়ামের সম্পূর্ণ অংশ নিষ্কাশন করা সম্ভবপর কি না ফলিত রসায়ন বিভাগ তাহার গবেষণা করে। টেকনাফ অঞ্চলের এই বালিতে থােরিয়াম এবং জারকোনিয়াম ধাতুর কোন সন্ধান পাওয়া। যায় নাই। ইহাতে শতকরা ১৩৮ ভাগ আয়রন, ৫ ভাগ টাইটেনিয়াম, ১২ ভাগ ইলিমিনাইট এবং অবশিষ্ট বালি পাওয়া গিয়াছে।
সলভেন্ট এক্সট্রাকশন পদ্ধতিতে এক প্রকার ফ্লোটিং রিএজেন্ট ব্যবহার করিয়া ফলিত রসায়ন বিভাগ যে টাইটেনিয়াম নিষ্কাশন করিয়াছে উহাতে লৌহের পরিমাণ শতকরা প্রায় ‘০১ ভাগ|
টাইটেনিয়াম ধাতু খুবই মূল্যবান। ভারত, অষ্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং সােভিয়েট ইউনিয়ন টাইটেনিয়ামযুক্ত বালি রফতানী করিয়া লক্ষ লক্ষ টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করিয়া থাকে। বিভিন্ন রং, কাগজ, সিরামিক, রাবার, প্লাস্টিক প্রভৃতি ইন্ড্রাষ্টিতে টাইটেনিয়াম ধাতুর ব্যবহার হইয়া থাকে।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ১৬ জুন ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত