সুষ্ঠু বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে: মােমিন
খাদ্য শস্যের মজুত সন্তোষজনক
রংপুর, ২৯শে মে: খাদ্য, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী জনাব আবদুল মােমিন আজ এখানে বলেন, সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে কৃষকদের কঠোর পরিশ্রমের ফলে এবার ইরি ও বােরাের চাষ আশা ব্যঞ্জক।
গত মওসুমে ১ লাখ ৩০ হাজার টন খাদ্যশস্য সংগ্রহের ফলে বিদেশী দেশগুলাের উৎসাহ বৃদ্ধি পায়। এবং এ কারণে বিদেশ থেকে উল্লেখযােগ্য পরিমাণ খাদ্যশস্য আমদানী করতে আমরা সক্ষম হয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানেন আমাদের মওজুদ খাদ্যশস্যের পরিমাণ সন্তোষজনক।
তিনি আরাে বলেন, আমরা কচ্ছতা অবলম্বন করলে ও সুষ্ঠ বণ্টন ব্যবস্থার নিশ্চয়তা প্রদান করা গেলে ইনশাআল্লাহ আগামী তিন মাস যে দুঃসময় তা আমরা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হব। তিনি বলেন, আউশ ধানের চাষ অনেকটা আশাপ্রদ।
তিনি আজ মধ্যাহ্নে সার্কিট হাউজে স্থানীয় সংসদ সদস্য, বাকশাল নেতৃবৃন্দ ও সরকারী কর্মকর্তাদের এক সভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন। সভায় জেলার সামগ্রিক খাদ্য পরিস্থিতি পর্যালােচনা করা হয়। খাদ্য মন্ত্রী অসাধু ব্যবসায়ীদের কারচুপি প্রতিরােধ করে খাদ্য মূল্য হ্রাস নিশ্চিত করার জন্য নেতৃবৃন্দ ও সরকারী কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
সর্বস্তরের দুর্নীতিবাজদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারী …করে তিনি বলেন, দুর্নীতি একটা সংক্রামক ব্যাধি। সমাজ থেকে এর মূল্যেচ্ছেদ না করতে পারলে কোনাে প্রচেষ্টাই তা যতই মহৎ হােক না কেন, সাফল্য লাভ করতে পারবে না।
তিনি ভুয়া রেশন কার্ড উদ্ধারে জনগণের সহযােগিতা কামনা করেন এবং যারা প্রকৃত রেশন কার্ড পাবার যােগ্য তার নিশ্চিত করার জন্য সরকারী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
মন্ত্রী পূর্বাহ্নে নিলফামারী সার্কিট হাউজে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও সরকারী কর্মকর্তাদের সাথে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচীর অধীনে ১৫ মাইল দীর্ঘ জল ঢাকা থানার কালিগঞ্জ শােলমারী সেচ খাল, পুনঃখননের ও ডিমলা থানার ডিমলা খাল প্রকল্পদ্বয়ের কাজের অগ্রগতি পর্যালােচনা করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, যখন কোন এলাকার লােক অগ্রণী হয়ে কোন খাদ্য উৎপাদনে সহায়ক উন্নয়নমূলক প্রকল্প নেয় তা ত্বরান্বিত করার জন্যই সরকারের কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচী প্রণীত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জনগণের স্বতস্ফূর্ত সাহায্য-সহযােগিতা ছাড়া সরকারের একক প্রচেষ্টায় কোনাে সমস্যার সমাধান বা উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয় না।
মন্ত্রী উল্লেখ করেন, এবার অনেক প্রকল্প জনগণের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে নির্ধারিত অর্থের চেয়েও কম টাকায় খাদ্যের বিনিময়ে কাজ কর্মসূচীর অধীনে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচী প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আগামী মৌসুমে এটি ব্যাপকতর করা হবে। এ ব্যাপারে তিনি সর্বস্তরের জনসাধারণকে শরীক হবার আহ্বান জানিয়ে বলেন যে, এ প্রচেষ্টায় সফলতা আনতে পারলে আমরা ভিক্ষাবৃত্তি সমস্যার সমাধান করতে পারবাে এবং ইহা খাদ্য উৎপাদনে সহায়ক হবে।
সূত্র: বাংলার বাণী, ৩০ মে ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত