কতিপয় নিত্যপ্রয়ােজনীয় ও শিল্প দ্রব্যের আমদানী শুল্ক হ্রাস
সরকার কতিপয় নিত্যপ্রয়ােজনীয় দ্রব্য ও শিল্প সামগ্রীর আমদানী শুল্ক হ্রাস করেছেন। টাকার বিনিময় হার পুন: নির্ধারণ করার পরিপ্রেক্ষিতে জনসাধারণকে সুবিধাদানের উদ্দেশ্যে সরকার এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। এক সরকারী হ্যান্ড আউটে একথা জানান হয়েছে।
টাকার বিনিময় হার পুন: নির্ধারণের ফলে আমদানীকৃত পণ্যের দাম বাড়তে পারে বলে অনুমান করে গত ১৭ই মে থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে।
অপর্যাপ্ত সরবরাহ এবং ব্যবসায় অসাধুতাই … এসব পণ্যের বর্তমান বাজার দর বৃদ্ধির জন্যে অনেকাংশে দায়ী। কিন্তু আমদানী শুল্ক হ্রাস করার সাথে সাথে আর ভবিষ্যতে এই সব দ্রব্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ এবং সরকার কর্তৃক প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে দ্রব্যমূল্য শুধুমাত্র ক্রয় …ক্ষমতার জোরেই থাকবে না, সাথে সাথে সাধারণ মানুষের ওপর চাপও কমবে। আমদানী শুল্ক হ্রাস করার ফলে সরকারের প্রায় ২৮ কোটি টাকা ক্ষতি হবে।
বিশ্ব বাজারে মূল্য হ্রাসের ফলে ভােজ্য তেল, নারকেল তেল ইত্যাদির বর্তমান বাজার দর কমবে বলে আশা করা হয়েছে।
যে সব পণ্যের আমদানী শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে তার নাম নীচে দেওয়া হলাে।
ভােজ্যতেল—শতকরা ৪০ ভাগ থেকে কমিয়ে শতকরা ২৫ ভাগ, মিল্ক ফুড—অধিকাংশ মিলক ফুডের ওপর বর্তমানে শতকরা ২৫ ভাগ আমদানী শুল্ক রয়েছে। এখন থেকে সকল ধরনের মিল্ক ফুডের ওপর শতকরা ১০ ভাগ আমদানী শুল্ক ধার্য করা হয়েছে, নারকেল তেল—শতকরা ৬০ ভাগ থেকে শতকরা ৪০ ভাগ ওষুধ (তৈরী করা কাঁচা মাল ও প্যাকিং সামগ্রী)—শতকরা ১৫ ভাগ থেকে কমিয়ে শতকরা ৯০ ভাগ, কস্টিক সােডা ও সােডিয়াম বাই কার্বোনেট—শতকরা ১১৫ ভাগ থেকে ৭৫ ভাগ নিকেডি শর্তাধীনে আমদানীকৃত বাস-সংযােজিত বাসের মূল্য এবং সাথে সাথে বাস ভাড়া যাতে বৃদ্ধি না পায়, সে জন্যে সরকার বর্তমান আমদানী শুল্ক শতকরা ৪৫ ভাগ থেকে ৩০ ভাগ করেছেন, মােটরযানের খুচরা যন্ত্রাংশ শতকরা ১২০ ভাগ থেকে শতকরা ১০০ ভাগ, বাসট্রাক ও মােটর গাড়ীর টায়ার ও টিউব-শতকরা ১২৫ ভাগ থেকে শতকরা ১০০ ভাগ এবং ভারী মেশিনারী–বর্তমানে মেশিনারী ও যন্ত্রাংশের ওপর সেলস, ট্যাক্স ছাড়াই শতকরা ২৫ ভাগ আমদানী শুল্ক ধার্য করা আছে। এখন এই হার শতকরা ২০ ভাগ নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্র: বাংলার বাণী, ৩১ মে ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত