জনতার প্রহারে এক সপ্তাহে ৮ জনের মৃত্যু
সম্প্রতি এক সপ্তাহে ডাকাতির অভিযােগে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মহকুমার দুটি থানায় জনতার পিটুনীতে আট জন নিহত ও মােট ২১ জনকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া ডাকাতদের কাছ থেকে কয়েকটি রাইফেল সহ অন্যান্য ধারাল অস্ত্রাদি উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে গত ২রা মে কোতয়ালী থানার বিজয়পুর বাজারে। সেখানে জনতার পিটুনীতে ২ জন নিহত ও অপর তিনজন একটি ৩০৩ রাইফেল সহধৃত হয়। প্রকাশ যে, রামচন্দ্রপুর গ্রাম থেকে ঘটনায় পূর্ববর্তী রাতে আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত একদল ডাকাত ক্ষেতের বিপুল পরিমাণ পাকা ধান কেটে নেওয়ার সময় গ্রামবাসীরা তাদের ধাওয়া করে ধরার চেষ্টা করলে ডাকাতেরা বেপরােয়া গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু পরদিন ভােরে একদল গ্রামবাসী রামচন্দ্রপুর সহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রাম ঘেরাও করে পাঁচজন ডাকাতকে একটি ৩০৩ রাইফেল সহ ধরে বিজয়পুর বাজারে নিয়ে আসে। তারপর লুকিয়ে থাকা আরা একদল ডাকাতকে গ্রামবাসী ধরে বেদম প্রহার করলে একজন মারা যায়। পরে পুলিশ অন্যান্যদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্যে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন সেখানে আরাে একজন মারা যায়।
অপর ঘটনাটি ঘটেছে বড়রা থানার পয়ালগাছা ইউনিয়নের শরা গ্রামে গত ৮ই মে। সেখানে জনতার পিটুনিতে একজন নিহত ও দুটি রাইফেল এবং অন্যান্য ধারালাে অস্ত্রাদি সহ আরাে দশ জনকে আটক করে পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন। গত ৭ই মে ডাকাত দলটি বড়রা থানার বাঙ্গিনী গ্রামে ডাকাতি করে। পরে কলাখাল নামে এক গ্রামে ডাকাতদল আশ্রয় নেয়। গােপন সূত্রে খবর পেয়ে কয়েকশত লােক ডাকাত দলকে ঘেরাও করে। কিন্তু তারা তখন গুলী ছুঁড়তে ছুঁড়তে পালাবার
ষ্টা করে। কিছু দূরে শূভ্রা গ্রামের মাঠে পৌছে ডাকাত দলের গুলি ফুরিয়ে গেলে জনতার পিটুনীতে ছয়জন ডাকাত ঘটনাস্থলে নিহত হয়।
স্থানীয় এম.পি. জনাব আবদুল হাকিম পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জনতা পরে দলের সর্দার সহ আরাে ৪ জনকে খুঁজে বের করে। কুমিল্লা থেকে পুলিশ বাহিনীর একটি স্কোয়াড পরে সেখানে গিয়ে নিহত ডাকাতদের মৃতদেহ, ধৃত ডাকাতদের গ্রেফতার ও উদ্ধারকৃত অস্ত্র নিয়ে আসে। এ ব্যাপারেও কোতয়ালী থানাতে অপর একটি মামলা দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: বাংলার বাণী, ২৬ মে ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত