দুঃসময়ের মােকাবিলার জন্যই ধান সংগ্রহ অভিযান চলছে
কৃষিমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদ বােরাে ধান সংগ্রহ অভিযানকে পুরাপুরি সাফল্যমণ্ডিত করে ভােলার জন্য রাজনৈতিক ও সমাজকর্মীদের প্রতি সরকারের সাথে পূর্ণ সহযােগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মন্ত্রী গত মঙ্গলবার এখানে রফিনগরে এক জনসমাবেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। এর আগে তিনি ধান সংগ্রহ অভিযানের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের জন্য আজমেরীস্থ এবং শাল্লার ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলাে পরিদর্শন করেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন যে, বর্তমানে খাদ্যের পর্যায় মজুদ গড়ে তুলে পরবর্তীকালে ঘাটতির সময় দেশে খাদ্যশস্যের সরবরাহ বৃদ্ধি করাই হচ্ছে বােরাে ধান সংগ্রহ অভিযানের উদ্দেশ্য। ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে জনসাধারণ খাতে অহেতুক অসুবিধার সম্মুখীন না হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মচারী ও জননেতাদের উপদেশ দেন। এ মন্ত্রী হাওড় এলাকার কৃষি সমস্যাবলী উল্লেখ করে স্থানীয় উদ্যোগে যথাসময়ে বাস্তব ভিত্তিক প্রকল্প গ্রহণের আহ্বান জানান যাতে আগামী বােরাে মওসুমের পূর্বেই এগুলাের বাস্তবায়ন সমাপ্ত করা যায়।
দেশে উচ্চহারে জনসংখ্যা বৃদ্ধির মারাত্মক পরিনামের প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন যে, কৃষি জমি বিভক্তিকরণ এবং ঘর বাড়ি সম্প্রসারণের ফলে কৃষিযােগ্য জমির পরিমাণ দ্রুত হারে হ্রাস পাচ্ছে। তিনি জনসাধারণকে সতর্ক করে দেন যে, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে অচিরেই উল্লেখযােগ্য পরিমাণ কৃষিযােগ্য জমি অনুৎপাদনমূলক কাজে ব্যবহৃত হবে এবং এর ফলে দেশে কৃষি উৎপাদন বহুল পরিমাণে হ্রাস পাবে।
জনাব আদুস সামাদ আজাদ আরাে বলেন, আমরা একটি বিস্ফোরন্মুখ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আমাদের সমুদয় জীবন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাবে এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার জাতীয় লক্ষ অর্জনও অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
কৃষিমন্ত্রী জনসাধারণের প্রতি বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাকে পুরােপুরি সাড়া দিয়ে মওজুদদার, মুনাফাখখার, কালবাজারী ও সমাজ বিরােধী ব্যক্তিদের উচ্ছেদের জন্য অবিরাম সংগ্রাম চালনার আহ্বান জানান। তিনি বলেন যে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছানুযায়ী সর্ব প্রকার শােষণমুক্ত একটি সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের জন্য দুস্কৃতিকারীদের অবশ্যই সমাজ থেকে উচ্ছেদ করতে হবে।
সূত্র: বাংলার বাণী, ২৩ মে ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত