দশ হাজার মণ গম লােপাট
খাদ্য বিভাগের জনৈক পরিবহণ ঠিকাদার ১০ হাজার ১৭৯ মণ গম আত্মসাৎ করেছে। সাইলাে থেকে এসব গম এ মাসেই বিভিন্ন এল এস ডি গুদামে পাঠানাে হয়েছিল। কিন্তু সাইলাে গুদামের কতিপয় কর্মচারীর সাথে যােগসাঞ্জসে করে পরিবহণ ঠিকাদার এসব গম কালােবাজারে বিক্রি করে দিয়েছে বলে অভিযােগে প্রকাশ।
চট্টগ্রাম খাদ্য বিভাগের পরিবহণ ঠিকাদার মেসার্স হাফিজুর রহমান এণ্ড কোম্পানীর মালিক জনাব হাফিজুর রহমানকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে তলব করা হয়। চাঁদপুর, কক্সবাজার, সন্দীপ, বদরখালী ও মহেশখালী এল এস ডি গুদামে পৌঁছানাের নির্দেশসহ ২০ দিন আগে তাঁকে যেসব খাদ্যশস্য ডেলিভারী দেওয়া হয়েছিল ঠিকাদার সেসব খাদ্যশস্যের হিসাব দিতে ব্যর্থ হন। খাদ্য নিয়ন্ত্রক আজ তার অফিসকক্ষ থেকে উক্ত পরিবহণ ঠিকাদারকে পুলিশের হাতে ন্যস্ত করেন।
খাদ্য বিভাগ সূত্রে প্রকাশ, উক্ত ঠিকাদার ৫ই মে বদরখালী এল এসডির জন্যে ৯১০ বস্তা (২০৭২ মণ), ১০ই মে মহেশখালীর জন্যে ৩৯৮০ বস্তা (৮৮৮ মণ) গম ডেলিভারী দেন। এসব মাল যথাস্থানে পৌঁছেনি। হিসাব দেওয়ার জন্যে গত এক সপ্তাহ ধরে ঠিকাদারকের চাপ দেওয়া হয়। এ উক্ত ঠিকাদার বদরখালীর জন্যে দেওয়া গম পতেঙ্গা আউটার এনকোরেজের কাছে নৌকা থেকে লুঠ হয়েছে বলে পুলিশ ও খাদ্য বিভাগের নিকট অভিযােগ করে খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে নৌবাহিনীর মাধ্যমে তদন্ত করেন। ঠিকাদারের অভিযােগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। মহেশখালীর জন্য ডেলিভারী দেওয়া গম কালুরপুল পুলিশ বীটের কাছে লুট হয়েছে বলে ঠিকাদার অভিযােগ করেন। তদন্তে এই অভিযােগের অসত্যতাও ধরা পড়ে।
আরাে জানা গেছে, ১লা মে ঠিকাদার যে ৮শ বস্তা গম ডেলিভারী নিয়েছিলেন তার কোন হিসাব নেই। অনুরূপভাবে ২৪২০ বস্তা অর্থাৎ ৬৬১৮ মণ গম নিয়েছিলেন সন্দীপ পৌছানাের জন্য। পরিবহণ ঠিকাদার এসব গমের কোনাে হিসাব দাখিল করেননি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনাে প্রকার ইনভয়েস ছাড়াই ঠিকাদারকে গম ডেলিভারী দেওয়া হয়। ইনভয়েস না থাকায় ঠিকাদারের পক্ষে কারচুপি করা সহজ হয়েছে। অতীতেও এ ধরনের বিপুল পরিমাণ গম সাইলাে থেকে চুরি হয়েছে। ফলে পরিবহণ ঠিকাদার উল্লিখিত ১০১৭৯ মণ গম আত্মসাৎ করতে উৎসাহী হয়েছে। একটা সংঘবদ্ধ দল গম কেলেংকারীর সাথে জড়িত রয়েছে। বলে অনেকেই সন্দেহ পােষণ করেন।
সূত্র: বাংলার বাণী, ২১ মে ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত