শ্রমিক শ্রেণীর রাজত্ব কায়েম করতে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে
দেশের অভ্যন্তরের কুচক্রীদের সাথে আন্তর্জাতিক কুচক্রীদের যােগসাজকের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমাজতন্ত্রের জন্যে যেমন রয়েছে বিশ্বের জনতা তেমনি বিত্তবানদেরও রয়েছে বিশ্বব্যাপী কালাে হাত। দুই পক্ষের হাতেই অস্ত্র আছে। তাই চূড়ান্তভাবে জয়ের পূর্ব পর্যন্ত শ্রমিকদের রক্ত দিয়ে জয়ের পতাকা ছিনিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মেহনতের শিবিরকে জয়যুক্ত করতে হলে সময়ের যেমন প্রয়ােজন তেমনি প্রয়ােজন ত্যাগেরও।
যুবলীগ প্রধান বলেন, জাতীয় সংসদে শ্রমিকদের স্বার্থ বিরােধী কোনাে ব্যক্তিই বসতে পারবেন না। বিজয়ের চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছানাের জন্য শেখ মনি সুসংহতভাবে শ্রমিকদের এগিয়ে বাবার আহ্বান জানান। এ আইনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভালাে আইন তৈরী করলেও প্রয়ােগ দোষে সেই আইন খারাপ হয়ে যায়। আইন প্রয়ােগকারীদের মধ্যেও কুচক্রীরা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইন যদি উৎপাদনের শত্রু ও বিত্তশালীদের আঁতে ঘা দেয়, তখনই তারা সেই শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের চেষ্টা করে।
শ্রমিকদের রেশন দেবার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেমন করেই হােক শ্রমিকদের রেশন দিতে হবে। যারা সম্পদ তৈরী করে রেশন পাওয়ার নায্য অধিকার তাদের রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরাে বলেন, শুধু রেশনের সংগ্রাম সব নয়। শ্রমিক বিরােধী চক্র রেশন দিতে চাইবে, আরাে লােভের জিনিস দিয়েও তারা তাদের কর্তৃত্ব রক্ষ্য করতে চাইবে।
শেখ মনি বলেন, এ মুহূর্তে আমাদের ৪টি দাবী— সেটা হলাে বেকার শ্রমিকদের কাজ দিতে হবে। প্রত্যেক শ্রমিকের জন্য রেশনের প্রবর্তন করতে হবে। পুরানাে আইন বাতিল করতে হবে এবং কারখানা পরিচালনায় শ্রমিক প্রতিনিধিদেরও আংশ নেওয়ার সুযােগ দিতে হবে। শ্রমিকিদের উৎপাদন বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েও শেখ মনি বলেন, আগামী এক বছরে যেন আমরা বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব সফল করেই ক্ষান্ত না হই, প্রতিটি দেশে শ্রমিক হিসেবে আমাদের মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নতি করতে হবে।
তিনি বলেন, এক নেতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই দেশের সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
সূত্র: বাংলার বাণী, ৭ মে ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত