বাংলা টাইপিং শিক্ষাদানের জরুরী ব্যবস্থা প্রয়ােজন
সারা দেশে সরকারী ও আধাসরকারী অফিস ব্যাঙ্ক এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান গুলিতে নিয়ােজিত লক্ষাধিক ইংলিশ টাইপিষ্টকে বাঙলা টাইপ রাইটিং শিক্ষা দেওয়ার জন্য জরুরী ভিত্তিতে অন্তত: এক শতটি শিক্ষাদান কেন্দ্র খােলার প্রয়ােজন হইয়া পড়িয়াছে। সরকারী, আধা সরকারী এবং সরকারের অধীন সকল প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক ভাবে বাংলা ব্যবহারের পূর্ণ সফলতা ও দ্রুততার সহিত কার্যকরী করার জন্য এই সব ট্রেনিং কেন্দ্র খােলার প্রয়ােজনীয়তা দেখা দিয়াছে। যে সব টাইপিষ্ট এতদিন ইংরেজীতে টাইপ করিত, তাহারা বাংলায় টাইপ করা শিক্ষার জন্য উদ্যোগ নিতে পারিতেছেন না। কেহ কেহ এই ব্যাপারে উদ্যোগ নিলেও বাংলা টাইপ রাইটিং শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় তাহারা শিক্ষা গ্রহণ করিতে পারিতছেন না। পরিকল্পনা কমিশন, ব্যাংক ও শিল্প সংস্থাসমূহকে বিশ্ব-ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে যােগাযােগ রক্ষা করিতে হয়। এই সব প্রতিষ্ঠানের জন্য স্বাভাবিকভাবে ইংরেজীতেই এই স্কীম তৈয়ার করিতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে বিদেশী কনসালটিং ও ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলিই এইসব স্কীম তৈয়ার করে। ইহাদের সাহায্যের জন্য ইংরেজীতে বিভিন্ন বিষয় লেখা হইয়াছে। নূতন নির্দেশ অনুসারে এই সব স্কীমের বাংলা করিতে হইবে। কিন্তু বাংলা টাইপিষ্টের অভাবে অনুরূপ কার্যাবলী ক্ষতিগ্রস্ত হইতেছে। অনুরূপভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত স্কীমসমূহ বাংলায় লিপিবদ্ধ করার ব্যাপারেও অসুবিধা দেখা দিয়াছে।
বাংলা প্রচলনের জন্য রাষ্ট্রপতির আদেশকে সাফল্যজনকভাবে কার্যকরী করার জন্য লক্ষাধিক টাইপিষ্টকে ট্রেনিং দেওয়ার উদ্দেশ্যে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী পাঁচ-সালা পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়ােজন হইয়া পড়িয়াছে এই মধ্যে সময়ের মধ্যে সকল টাইপিষ্টকে বাংলা টাইপিস্ট শিক্ষা দান অবশ্যই বাধ্যবাধকতাভাবে গ্রহণ করিতে হইবে। ক্রমান্বয়ে বাংলা টাইপ রাইটার প্রবর্তন করিয়া ইংরেজী টাইপ রাইটার কেবল আন্তর্জাতিক কাজের জন্য ব্যবহারের উদ্দেশ্যে রাখা যাইবে। বাংলা টাইপ রাইটিং শিক্ষা কেন্দ্র জরুরী ভিত্তিতে খােলা না হইলে সরকারী, আধা-সরকারী ও সরকারের অধীন শিল্প, ব্যাংকিং ও অন্যান্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে কাজের পরিমাণ খুবই হ্রাস পাইবে।
সূত্র: দৈনিক আজাদ, ৩ এপ্রিল ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত