You dont have javascript enabled! Please enable it!

হােম ইকনমিকস্ কলেজ
ডিগ্রী পেলেও ছাত্রীরা চাকরি পায় না

ঢাকার হােম ইকনমিকস কলেজটি গার্হস্থ্য অর্থনীতিতে অভিজ্ঞ শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি তৈরির উদ্দেশ্যে ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু হােম ইকনমিকস-এ দেশের এই একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার তের বছর পরেও দেখা যাচ্ছে, এখান থেকে পাস করা ছাত্রীদের চাকরির ক্ষেত্রে তেমন কোন সুযােগ-সুবিধা নেই।
গত শিক্ষা বর্ষ পর্যন্ত এ কলেজ থেকে বিএসসি’তে ৫০০ জন ও এমএসসি’তে ১৫০ জন ছাত্রী পাস করে বেরিয়েছে। পাস করা ছাত্রীদের কর্মসংস্থানের কোন বিশেষ ব্যবস্থা না থাকায় এ পর্যন্ত মাত্র জন চল্লিশেক ছাত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকরি পেয়েছেন। এই চল্লিশ জনের কুড়ি-পঁচিশজন। রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পুষ্টি প্রতিষ্ঠানে ২ জন, পরিবার পরিকল্পনা দফতরে ৫ জন ও ঢাকার সন্নিকটে জুরাইন ডায়াবেটিক সেন্টারে কয়েকজন চাকরি করছেন বলে জানা গেছে। যদিও ডায়াবেটিক সেন্টরে বিজ্ঞানে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা ছাত্রী দিয়েই কাজ চলতে পারতাে।
এই কলেজের পাস করা ছাত্রীদের কর্মসংস্থানের কোন পথ খােলা না থাকায় ছ’বছর শিক্ষা লাভের পরে কলেজের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে তাদের, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়াতে হয়। শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর তাদের জীবনে আসে হতাশাব্যঞ্জক এক নতুন সমস্যা। তাদের এই ডিগ্রী অর্জনের পেছনে যে আর্থিক ব্যয় তার একটা বিরাট অংশ দেশের দুঃখী মানুষের সম্পদ রাষ্ট্রীয় খাত থেকে আসে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় ও পারিবারিক সম্পদ এবং মেধা শক্তির সমন্বয়ের যে দক্ষ জনশক্তি তৈরি হলাে দেশের গঠনমূলক কাজে তাদের অংশগ্রহণের কোন সুযােগই নেই। এটা নিশ্চয় কারও কাম্য নয়।
জাতীয় ক্ষেত্রে হােম ইকনমিকস শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তা উপলব্ধি করেই কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এবং এখান থেকে পাস করা ছাত্রীদের মাধ্যমে হােম ইকনমিকস শিক্ষার সম্প্রসারণ তখনকার অন্যতম লক্ষ্য ছিল। এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষার সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, মুষ্টিমেয় কয়েকটি কলেজে হােম ইকনমিকল বিষয় পড়ানাে হয়। তিনি অন্যান্য কলেজেও হােম ইকনমিকস বিষয় খােলা এবং স্কুলগুলােতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এখান থেকে পাস করা ছাত্রীদের চাকরির সুযােগদানের কথা বলেন। উল্লেখ্য যে, শিক্ষা সম্প্রসারণ কেন্দ্রে গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ে তিন মাসের সংক্ষিপ্ত কোর্স চালু আছে। স্কুল শিক্ষকরা এই কাজ পেয়ে থাকেন। কিন্তু হােম ইকনমিকস কলেজের ডিগ্রীধারীদের নিয়ােগ করা হয় না।
তা ছাড়া বর্তমানে বিভিন্ন কর্মে প্রায় পাঁচশ ছাত্রী অধ্যয়ন করছেন এবং গত বছর থেকে অনাস ক্লাস খােলা হয়েছে। পাস করার পর এদেরই বা ভূমিকার কি হবে।

সূত্র: সংবাদ, ৩০ মার্চ ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত

error: <b>Alert:</b> Due to Copyright Issues the Content is protected !!