স্বাধীনতা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রী
বাংলাদেশ শান্তি ও জোটনিরপেক্ষ নীতিতে অবিচল থাকবে
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড: কামাল হােসেন পুনরায় শান্তি এবং জোটনিরপেক্ষ পররাষ্ট্র নীতির জন্য দেশের নিঃশর্ত অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করেছেন। বিশ্বের সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপনের ব্যাপারে বাংলাদেশের অব্যাহত প্রচেষ্টার কথাও তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে উল্লেখ করেন।
গত সােমবার রাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪র্থ বার্ষিকী উপলক্ষে সােভিয়েত দূতাবাসের সংস্কৃতি বিভাগে আয়ােজিত এক অনুষ্ঠানে ড: কামাল ভাষণ দিচ্ছিলেন। বাংলাদেশ-সােভিয়েত মৈত্রী সমিতির সবানেত্রী বেগম সুফিয়া কামাল অনুষ্ঠানে সভানেত্রীত্ব করেন। অন্যান্যের মধ্যে বাকশাল নেতা জনাব জিল্লুর রহমান, শ্রী মণি সিংহ, শ্রী পঙ্কজ ভট্টাচার্য এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত সােভিয়েত রাষ্ট্রদূত মি: আটদ্রে ফোমিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সােভিয়েত ইউনিয়ন এবং বাংলাদেশের বন্ধুত্ব গভীর থেকে গভীরতর হয়ে উঠবে এ আশা প্রকাশ করে ড: কামাল দু’দেশের ক্রমবর্ধমান দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের পরিধির এক বিবরণ দেন।
তিনি সন্তোষের সঙ্গে উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার অব্যবহিত পর সােভিয়েত ইউনিয়ন শুধু বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতেই এগিয়ে আসেনি, তারা এ উপমহাদেশের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রচেষ্টাকেও সমর্থন করেছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে সােভিয়েত সমর্থনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘৭২ সালের প্রথম ভাগে বঙ্গবন্ধুর সােভিয়েত ইউনিয়ন সফরের ফল রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কারিগরি ক্ষেত্রে এ দুই বন্ধু দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযােগিতার সূচনা হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘটনাপ্রবাহ স্মরণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতপক্ষে এ সংগ্রাম ছিল ঔপনিবেশিক শােষণ এবং আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে পয়নির্ভরশীল করে তােলার গভীর ষড়যন্ত্রের অবসানকল্পে গৃহীত এক গণসংগ্রাম। এ বিপদের সময় সােভিয়েত ইউনিয়ন আমাদের পাশে এগিয়ে এসেছিল, একথা বলে তিনি সােভিয়েত ইউনিয়নের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
সােভিয়েত রাষ্ট্রদূত তার বক্তৃতায় বাংলাদেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সােভিয়েত ও অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জনণকে অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন। এ খবর এনা’র।
সূত্র: সংবাদ, ২৬ মার্চ ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত