চা বাগানে পােষ্যসহ সকল শ্রেণীর শ্রমিকের জন্য
রেশনে খাদ্যদ্রব্য প্রভৃতি সরবরাহের সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশের চা বাগানের বেকার শ্রমিকগণ এবং তাদের পরিবারবর্গ এবং অস্থায়ী চা বাগানের শ্রমিকগণকে রেশন দরে তাদের প্রয়ােজনীয় খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করা হবে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। নিত্যপ্রয়ােজনীয় দ্রব্যের উচ্চমূল্যস্থ বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট এবং চা বাগানের শ্রমিকদের দুঃখ দুর্দশার কথা বিবেচনা করে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয় ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্তবর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে ওই নির্দেশ অনুযায়ী পূর্ণ রেশনিং ব্যবস্থার আওতায় চা বাগানের সকল শ্রমিককে আনা হয়েছে।
ইতিপূর্বে ১৯৭৪ সালে চা বাগানের শ্রমিকগণ অনিয়মিত সরবরাহ ব্যবস্থার ও অন্যবিধ কারণে যথারীতি রেশনে খাদ্যদ্রব্য থেকে বঞ্চিত ছিল। এদিকে চা বাগানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে, তিনি চাবাগানে প্রতিমাসে রেশনে প্রয়ােজন ৬০ হাজার মণ খাদ্যশস্য সরবরাহের নির্দেশ দেন।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, চা বাগানে কাজে নিযুক্ত শ্রমিকরা রেশনে ভর্তুকি ব্যবস্থাধীনে খাদ্যদ্রব্য অবশ্য আরও স্বল্পমূল্যে পেয়ে থাকেন। ভর্তুকি ব্যবস্থায় অধীন এই স্বল্প মূল্য (প্রতিমণ সাড়ে ১৭ টাকা) অবশ্য বেকার চা শ্রমিক এবং অনিয়মিত শ্রমিকদের ক্ষেত্রে প্রযােজ্য হবে না। তবে তারা রেশন দরে খাদ্যশস্য ছাড়াও ভােজ্য তেল, লবণ, চিনি ও কেরােসিন পাবেন। এ ছাড়া চা বাগানের সকল চা শ্রমিক ন্যায় মূল্যে (এক্স ফ্যাক্টরী ও এক্স মিল হারে) শাড়ি, লুঙ্গি, মার্কিন ক্লথ ইত্যাদি পাবেন।
চা শ্রমিকদের দুঃখ দুর্দশা ও আর্থিক সংকট নিরসনের জন্য বঙ্গবন্ধু রেশনে সকল শ্রমিককে খাদ্যদ্রব্য ও বস্ত্রাদির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহকে নির্দেশ দেন। জানা গেছে যে, চা শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থার অধীনে আনার ফলে বিদেশ গমনেচ্ছু অতিরিক্ত প্রায় এক লাখ তের হাজার শ্রমিক উপকৃত হবেন।
সূত্র: সংবাদ, ২৩ মার্চ ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত