৫০ হাজার একর জমিতে কৃষি উৎপাদন বাড়বে
চন্দনা-বারাসিয়া পুনর্খনন প্রকল্প সােমবার বঙ্গবন্ধু উদ্বোধন করছেন
রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আগামীকাল সােমবার সকালে হেলিকপ্টারযােগে ফরিদপুর জেলার বােয়ালমারী যাবেন। বঙ্গবন্ধু সেখানে চন্দনা-বারাসিয়া প্রকল্প পুনর্খননের কাজ উদ্বোধন করবেন।
রাষ্ট্রপতির এ সংক্ষিপ্ত সফরে তার সাথে থাকবেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জল সম্পদ এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রী জনাব আবদুর রব সেরনিয়াবাত, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী ফণী মজুমদার, রাষ্ট্রপতির বিশেষ সহকারী জনাব তােফায়েল আহমেদ ও সংসদ সদস্য জনাব আবদুর রাজ্জাক।
রাষ্ট্রপতির ঐ দিনই বিকেলে রাজধানী ফিরে আসবেন।
এক কোটি ষাট লাখ টাকা ব্যয়ে চন্দনা-বারাসিয়া প্রকল্প পুনর্খননের ফলে ফরিদপুর জেলার পাঁচটি থানার পঞ্চাশ হাজার একর জমিতে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং বন্যার হাত থেকে ঐ এলাকা রক্ষা করা যাবে ও সেচ ব্যবস্থারও উন্নতি হবে। এ পাঁচটি থানা হচ্ছে পাংশা, বালিকান্দি, বােয়ালমারী, আলফাডাংগা এবং কাশিয়ানী।
ঐ এলাকার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ছাড়াও প্রকল্পটি চালু হলে যােগাযােগ ব্যবস্থা, নৌসুবিধা, মৎস্য উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের ক্ষেত্রেও ব্যাপক পরিবর্তন আনবে।
এ প্রকল্পের অধীনে পাংশা রেলসেতু থেকে ভাটিয়াপাড়া পর্যন্ত ষাট মাইল দীর্ঘ নদী পুনর্খনন করা হবে।
আগামী অর্থ বছরে এ প্রকল্পে কাজ শেষ হলে দু ‘হাজার সাতশ’ একর পতিত জমিতে চাষাবাদ সম্ভব হবে। এর ফলে প্রকল্পে এলাকায় বার্ষিক কৃষি উৎপাদনের পরিমাণ হবে। ২৮ লাখ ৬২ হাজার মণ, যার মূল্য হবে আনুমানিক পাঁচ কোটি চুয়ান্ন লাখ টাকা। এছাড়া গােটা প্রকল্প এলাকার নিরূপণের বার্ষিক আয় দাঁড়াবে শুধু মাত্র শস্য থেকেই ১ কোটি টাকা।
চন্দনা-বারাসিয়া পুনর্খনন প্রকল্পের উল্লেখযােগ্য দিক হচ্ছে এটি স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে কার্যকরী হবে। প্রকল্পে সর্বমােট ১৩ কোটি ৯০ ঘনফুট মাটি কাটার কাজ হবে।
উল্লেখ্য যে, চন্দনা-বারাসিয়া প্রকল্পটি হচ্ছে ফরিদপুর বরিশাল প্রকল্পের ফরিদপুর ইউনিটের প্রথম পর্যায়। ফরিদপুর ইউনিটের অধীনে মােট নয় লাখ পাঁচ হাজার একর জমির কাজ হাতে নেওয়া হবে। এর মধ্যে পাঁচ লাখ চল্লিশ হাজার একর জমি সেচ ব্যবস্থার অধীনে আনা হবে।
চন্দনা নদী পদ্মা নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে পাংশার কাছে বারাসিয়া নদীতে মিলেছে এবং ভাটিয়াপাড়ার কাছে মধুমতি নদীতে গিয়ে পড়েছে।
চন্দনার মুখে পদ্মা নদীর বয়ে আনা পলি পড়ে চন্দনা এবং বারাসিয়া এই উভয় নদীই মজে গেছে। শীতকালে এলাে একেবারে শুকিয়ে যায়। নদী মজে যাওয়ায় এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় পানি জমা হয়। বন্যার পরে ঐ এলাকায় শীতকালীন শস্যের চাষাবাদের ক্ষেত্রে অসুবিধার সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ইরি চাষের ক্ষেত্রে দারুন অসুবিধা দেখা দেয়। খবর বাসস পরিবেশিত।
সূত্র: সংবাদ, ২ মার্চ ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত