রাঙ্গামাটিতে বঙ্গবন্ধুর ঘােষণা
সংখ্যালঘুদের অধিকার অবশ্যই রক্ষা করা হইবে
প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমান আজ এখানে ঘােষণা করেন যে, জাতীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার অবশ্যই রক্ষা করা হইবে এবং তাঁহাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ধর্মের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হইবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, উপজাতীয় প্রধানগণ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এক সমাবেশে ভাষণ দানকালে প্রেসিডেন্ট বলেন যে, সংখ্যালঘুদের ধর্ম, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য সরকার গভীর আগ্রহশীল।
তিনি বলেন যে, উপজাতীয় জনসাধারণের উপর কোন মহলের নির্যাতনই সরকার বরদাশত করিবেন না। তিনি ঘােষণা করেন যে, তাঁহাদের জমি ও ধন-সম্পত্তি কাহাকেও স্পর্শ করিতে দেওয়া হইবে না।
বঙ্গবন্ধু আরও ঘােষণা করেন যে, উপজাতীয় অধিবাসীরা অন্যদের মতই দেশের সমান নাগরিক।
স্থানীয় সমস্যাবলী সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট বলেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য কর্মসূচী রচনা করা হইয়াছে। ইতিমধ্যেই পার্বত চট্টগ্রামকে ৩টি জেলায় ভাগ করা হইয়াছে।
তিনি বলেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম হইতে অবিলম্বে পুলিশ বাহিনীতে ৩০০ এবং রক্ষী বাহিনীতে ১০০ যুবক নিয়ােগের জন্য তিনি নির্দেশ দিয়াছেন।
তিনি প্রকাশ করেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে নূতন জনপদ গড়িয়া তােলা হইবে এবং চাষের জন্য বিনামূল্যে জমি দেওয়া হইবে। এইসব জনপদে স্কুল ও দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করা হইবে।
উপজাতীয় ছাত্রদের বৃত্তি দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু দুই লক্ষ টাকা মনজুর করিয়াছেন। বনজ সম্পদের অনভিপ্রেত বিনষ্টিতে জাতির জনক উদ্বেগ প্রকাশ করেন। নূতন নূতন এলাকায় বন। সৃষ্টির উপর তিনি বিশেষ গুরুত্ব আরােপ করেন।
তিনি বলেন যে, জরুরী ভিত্তিতে দেশের মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা হইবে।
বঙ্গবন্ধু আশ্বাস দেন যে, ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাকুরীর ক্ষেত্রে স্থানীয় অধিবাসীরা বঞ্চিত হইবেন না।
অপরাহ্নে প্রেসিডেন্ট বিভিন্ন গােত্রের উপজাতীয় প্রধানদের সহিত সাক্ষাৎ করেন। স্থানীয় কলেজ ছাত্রদের একটি প্রতিনিধি দলও তাহার সহিত দেখা করেন। পূর্বাহ্নে তিনি কাপ্তাই হ্রদ পরিদর্শন করেন।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত