You dont have javascript enabled! Please enable it! 1975.01.31 | দিনাজপুরেও তামার নিদর্শন পাওয়া গেছে | দৈনিক বাংলা - সংগ্রামের নোটবুক

দিনাজপুরেও তামার নিদর্শন পাওয়া গেছে

দিনাজপুরের মধ্যপাড়ার ভূ-গর্ভে খনন কাজ চালিয়ে আগ্নেয়শিলার সঙ্গে খনিজ পদার্থ তামার নিদর্শন পাওয়া গেছে। এর আগে রংপুরের পীরগঞ্জে অনুরূপভাবে তামার নিদর্শন পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের এ দুটি স্থানে আগ্নেয়শিলার সঙ্গে ভারতের মালরখন্দ তামা খনির আগ্নেয় শিলার প্রচুর সামঞ্জস্য রয়েছে। এ খবর নির্ভরযােগ্য মহলের।
পীরগঞ্জ ও মধ্যপাড়ায় ভূ-গর্ভে প্রাপ্ত আগ্নেয়শিলার সঙ্গে তামার যে নিদর্শন পাওয়া গেছে। তার সম্ভাব্যতা পরীক্ষার জন্যে নির্ভরযােগ্য বিদেশী বিশেষজ্ঞদের কাছে এর নমুনা পাঠানাে দরকার।
জানা গেছে, আগামী ফেব্রুয়ারী মার্চ ও এপ্রিল মাসে দিনাজপুরের মধ্যপাড়ায় আরাে দুটো খনন কাজ চালানাে হবে। এর একটিতে বাংলাদেশ খনিজ উন্নয়ন সংস্থার পক্ষ থেকে বিদেশী বিশেষজ্ঞগণ ও কাজ করবেন। এর আগে গত বছর এখানে তিনটি খনন কাজ চালানাে হয়। মাটির মাত্র ৪ শত থেকে ৫ শত ফুট নীচে আগ্নেশিলার সঙ্গে তামার নমুনা পাওয়া গেছে।
রংপুরের পীরগঞ্জে মাটির নীচে অনুসন্ধান চালিয়ে ‘ডায়েরইট গ্রানাে-ডায়ােরাইট’ ও ‘মনজোনাইট’ ও ‘মনজোনাইট, আগ্নেয়শিলা পাওয়া যায়। সাধারণভাবে এসব আগ্নেয়শিলায় যে পরিমাণ তামার নমুনা থেকে পীরগঞ্জে প্রাপ্ত আগ্নেয়শিলায় ১৫ গুণ বেশি সঞ্চিত তামার নির্গম আবিষ্কৃত হয়েছে। আমেরিকার বিহােম নিউ মেস্কিকের কালামাজু ফরমােজা চীনের তাইওয়ান কিংবা চিলিতে তামার খর আবিষ্কারের আগে অনুসন্ধান চালিয়ে আগ্নেয়শিলার সঙ্গে একা পরিমাণ সঞ্চিত তামার নিদর্শন পাওয়া গিয়েছিল।
বাংলাদেশের পীরগঞ্জ ও মধ্যপাড়ায় ভূ-গর্ভে প্রাপ্ত আগ্নেয়শিলার সঠিক বয়স নির্ণয় এখনাে সম্ভব হয়নি। তবে প্রাথমিক পরীক্ষার পর এ দুটি স্থানে আগ্নেয়শিলার বয়স প্রায় ৬ কোটি বছর হবে বলে এখনাে বিশেষজ্ঞগণ ধারণা করছেন। খনিজ দ্রব্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেশের উত্তরাংশে মাটির নীচে অফুরন্ত শক্ত পাথর অর্থাৎ আগ্নেয়শিলা সম্পদ আবিষ্কারের কথা ইতিপূর্বে ‘দৈনিক বাংলায় ছাপা হয়েছে। এর উত্তোলন সম্ভাবনা ও ব্যবহার সম্পর্কে ও মূল্যবান অভিমত। পাওয়া গেছে। বিশেষ করে যমনা সেতু নির্মাণের জন্য প্রয়ােজনীয় শক্ত পাথর এসব এলাকা। থেকেই সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।
অভিজ্ঞ মহল মনে করেন যে, বাংলাদেশে ভূ-তাত্বিক জরিপের দীর্ঘমেয়াদী ও ব্যাপক কর্মসূচী নেওয়া উচিত। রত্নগর্ভা বাংলাদেশের মাটির নীচে কি অমূল্য সম্পদ সঞ্চিত আছে তা একমাত্র এ ধরনের ভূ-তাত্ত্বিক জরিপের মাধ্যমে জানা সম্ভব।

সূত্র: দৈনিক বাংলা, ৩১ জানুয়ারি ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত