You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.22 | পাক নাশকতায় যাত্রীবাহী ট্রেনে বিরাট দূর্ঘটনা | দৃষ্টিপাত - সংগ্রামের নোটবুক

পাক নাশকতায় যাত্রীবাহী ট্রেনে বিরাট দূর্ঘটনা

১জন নিহত- ১৫ জন আহত- নাশকতায় জড়িত সন্দেহে ৭ ব্যক্তি গ্রেপ্তার
গত ১৫ই সেপ্টেম্বর রাত্রি সােয়া এগারাে ঘটিকায় করিমগঞ্জ রেল স্টেশন থেকে ৩ কিলােমিটার দূরে ধৰ্ম্মনগরগামী একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের চাকার নীচে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্লাষ্টিক বােমার বিস্ফোরণের ফলে লেন্স নায়ক জগদীশ চাঁদের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এবং আরাে ১৭ জন গুরুতর আহত হয়।
ট্রেনটির ছয়টি কামরা লাইনচ্যুত হয় এবং দুইটি কামরা বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইঞ্জিনের পিছনেই একটি তৃতীয় শ্রেণীর কামরার নিচে এই বিস্ফোরণটি ঘটে। কামরাটির পাটাতনের বেশ কিছু অংশ উড়ে যায়। কামরাটিতে মােট যাত্রির সংখ্যা ছিল ৭০। মৃত ব্যক্তির নাম জানা যায়নি। গুরুতর আহতদের মধ্যে আছেন মিয়ারাম, মাল বাহাদুর তামাং এবং শােভাচান্দ।
এই বিস্ফোরণের ফলে রেল লাইনের নীচে প্রায় ৪ ফুট গভীর ও ৫ ফুট বিস্তৃত একটি খাদ সৃষ্টি হয়। পরদিন অনুসন্ধান কার্যের জন্য সৈন্য বিভাগীয় কুকুরকে কাজে লাগান হয়। ঘটনাস্থলের নিকট সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ক্যানিসাইল গ্রামটিতে কুকুরটি প্রবেশ করে। সঙ্গে সঙ্গে সৈন্যবাহিনীর লােকেরা গ্রামটিকে ঘেরাও করে। কিন্তু ইত্যবসরে কয়েকটি লােক গ্রামের পিছন দিকে ধান ক্ষেতের মধ্য দিয়ে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করে। কুকুরটিও গ্রামের পিছন দিকে চলে আসতে থাকে তারা একটি লােককে ধরে ফেলে। সৈন্যরা একটি ফাঁকা আওয়াজ করে বাকী কয়েকজনকে আটক করে ফেলে। শেষ পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রায় ষােল ঘণ্টা এই লাইনে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে লাইনটিকে সরিয়ে ফেলেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখযােগ্য যে, ইতিপূর্বে লামাজুয়ারের ঘটনার যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয় তাহাদের স্বীকারােক্তি থেকে জানা যায় ১২ জন ভারতীয় যুবককে পাকসৈন্যরা সিলেটে ১৫দিন এই নাশকতা প্রশিক্ষণ দেয় এবং পরে প্রচুর মাইন ও বিস্ফোরক সহ প্রত্যেককে ১৫০ টাকা দিয়ে ভারতে প্রেরণ করে।

সূত্র: দৃষ্টিপাত, ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১