গিরীশগঞ্জ শরণার্থী শিবির সম্পর্কে অভিযােগ
গিরীশগঞ্জ শরণার্থী শিবিরের ছ’জন আবাসিক কর্তৃক স্বাক্ষরিত একখানা পত্রে কতকগুলি অভিযােগ করা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের যথােচিত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মূল অভিযােগগুলি আমরা নিচে প্রকাশ করলামঃ
প্রত্যেক সপ্তাহে রেশন বিলির তারিখ অতীত হইয়া ৪/৫ দিন চলিয়া যায় এমন কি কোন কোন সপ্তাহে ১০/১৫ দিন পর রেশন বিলি করা হয় অথচ রেশন না পাওয়ার দিনগুলি রেশন পরে আর বিলি করা হয় না। প্রমাণ স্বরূপ বলিতে পারি গত এক সপ্তাহের রেশন অদ্য পর্যন্ত আর পাওয়া যায় নাই।
রেশন নির্দিষ্ট তারিখের একদিন পর ক্রমান্বয়ে বিলি করিলে সাত সপ্তাহে এক সপ্তাহের রেশন উদ্ধৃত্ত হইয়া যায় কিন্তু আমাদের এই শিবিরে যেভাবে রেশন বিলি হইতেছে তাহাতে ৩/৪ সপ্তাহে এক রেশন উদ্ধৃত্ত
হইতেছে এবং এই রেশন শিবির প্রধানের নিয়ােজিত কয়েকজন শ্রমিকের সহযােগে গােপনে রাত্রের অন্ধকারে অন্যত্র পাচার করা হয়। তাহার জলন্ত প্রমাণগত ২৭/০৮/৭১ ইং রাত্রে এইভাবে মাল পাচারের ১৫/২০টি ব্যাগ চিনি, আটা ও চাউল দ্বারা ভর্তি করিয়া রওয়ানা হওয়ার চেষ্টা করিলে আমরা আটক করিয়া বি. ডি. ও. কে জানাইলে তিনি আসিয়া নিজচক্ষে দেখিয়া যান। | ইহা ছাড়া করিমগঞ্জ হইতে রেশন আনার সময় প্রায় সপ্তাহে সাদারাশী ব্লক-এর রাস্তার মুখে ২/১ বস্তা চাউল, ২/১ টিন তৈল ও বেশ কিছু লাকড়ী ফেলিয়া আসা হয়। এ সম্পর্কে আমরা শিবির প্রধান ও ব্লক প্রধানকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম, কিন্তু সদুত্তর পাই নাই।
গতকাল ৩/৮/৭১ ইং করিমগঞ্জ জেলা কংগ্রেস কর্মী শ্রীনৃপতি চৌধুরী প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ গােদামের বারান্দায় পড়িয়া থাকা কয়েক বস্তা পচা আলু ও গলিয়া যাওয়া চিনি তাহাদের নিজচক্ষে দেখিয়া যান।
যাহাই হউক আবার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট কাতর কণ্ঠে আবেদন জানাইতেছি, অবিলম্বে উল্লিখিত অভিযােগ সম্পর্কে তদন্তক্রমে আমাদিগকে এ যন্ত্রণা হইতে অব্যাহতি দিন।
সূত্র: যুগশক্তি, ৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭১