You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.08.11 | ভারত ও পাকিস্তানে বিশ্বসংস্থার পরিদর্শক প্রেরণ—একটী ষড়যন্ত্র | দৃষ্টিপাত - সংগ্রামের নোটবুক

ভারত ও পাকিস্তানে বিশ্বসংস্থার পরিদর্শক প্রেরণ—একটী ষড়যন্ত্র
-শ্ৰীত্রিপাটী—

আসামের অর্থমন্ত্রী শ্রীকামাখ্যা প্রসাদ ত্রিপাটী একটি বক্তব্যে বলেন ভারত ও পাকিস্তানে পরিদর্শক প্রেরণের জন্য ইউ এন সেক্রেটারী জেনারেল যে প্রস্তাব করেছেন তাতে বাংলাদেশের জন্য মুক্তিফৌজের আন্দোলনকে বিপন্ন করা এবং লক্ষ লক্ষ শরণার্থীকে দেশে ফিরে যাওয়ার পথে অন্তরায় সৃষ্টি করার জন্য একটী জাল পাতা হয়েছে মাত্র।
শ্ৰীত্রিপাটীর সম্পূর্ণ বক্তব্য হচ্ছে—
ভারত ও পাকিস্তানে পরিদর্শক প্রেরণের জন্য ইউনাইটেড নেশনস সেক্রেটারী জেনারেল একটী প্রস্তাব করেছেন।
ইহা একটি জাল ফেলা মাত্র। ইহাতে শরণার্থী আগমন রােধে কোন সুরাহাই হইবে না বরং মিলেটারীদের খােলা ময়দান পাওয়ারই সম্ভাবনা।
শরণার্থীদের ফিরিয়ে পাঠানাের ব্যাপারে ভারতকে বাধা সৃষ্টি করা হবে। এবং ইহাতে মুক্তি সংগ্রামকে শুধু মাত্র বিপন্ন করা হবে।
ভারতে ৭০ লক্ষ শরণার্থী বৃদ্ধি হয়ে ১ কোটীতে উঠবে কিন্তু এই পরিদর্শকরা এই শরণার্থী আগমন ব্যাহত করতে পারবেন না। তাহারা শুধু ভারতকে বাধাদান এবং মুক্তিফৌজকে বিপন্ন করতেই চেষ্টা করবেন। কিন্তু আভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে পাকিস্তানের অত্যাচারের তাহারা হস্তক্ষেপ করবেন না।
লক্ষ লক্ষ অস্ত্রহীন নরনারী শিশু যখন বিপর্যস্ত হল বিশ্ব সংস্থা তখন নীরব দর্শক ছিল ইহা অকাট্য সত্য। এমন কি এখন পর্যন্ত এই অত্যাচার বন্ধ করার জন্য তাহারা পাকিস্তানের উপর কোন চাপ সৃষ্টি করছেন না।
বর্তমানে উহাকে ভারত-পাকিস্তানের দ্বন্দ্বরূপে রং ফলিয়ে এই অত্যাচারকে ঢাকতে চেষ্টা নিতেছেন। শুধু ইহাই নয় ভারত যাহাতে শেষ পর্যন্ত শরণার্থীদের চিরতরে গ্রহণ করেন সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হইতেছে।
একটী যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর পরিদর্শক পাঠানাে হইতেছে। একদেশে অত্যাচার চলিতে দিয়া অন্য দেশে শরণার্থী ঠেলিয়া দেওয়ার জন্য পরিদর্শক প্রেরণের কথা কেহ কখনও শুনিয়াছেন কি? এই ব্যবস্থা অনির্দিষ্টকাল ধরিয়া পাকিস্তান কর্তৃক ভারত আক্রমণে সহায়তা করার সামিল হইবে।

সূত্র: দৃষ্টিপাত, ১১ আগস্ট ১৯৭১