সিলেট রণাঙ্গনে গত সপ্তাহে বহু পাক সৈন্য নিহত ও বিমান বিধ্বংস
গত সপ্তাহে মুক্তিফৌজের মাত্র ছয় জন সৈনিক শালটিকর বিমান ঘটীতে শত্ৰু ব্যহ ভেদ করে বিরাট পরিবহন বিমান ১৩০ কার্গো প্লেনটিকে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত করে দেয়। এতদঞ্চলে ইহাই প্রথম বিমান বিধ্বংস। এই বিমানটী ট্যাঙ্ক ও ভারী যন্ত্রপাতি পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হত।
বিমান ঘাঁটির চারিদিকে পাকিস্তানের অতি সতর্ক প্রহরার দৃষ্টি এড়িয়ে মাত্র ছয়জন মুক্তিসেনা জেলের ছদ্মবেশে তিনটা ডিঙ্গী নিয়ে বিমান ঘাটীর নিকটে অপেক্ষা করতে থাকে। প্রায় ৪ ঘণ্টা তাদেরকে সময়ের অপেক্ষায় থাকতে হয়। এই সময়ে তারা মাছ ধরার ভান করে সুদীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে থাকে। প্রতীক্ষিত সময়ে উক্ত কার্গো প্লেনটী শালুটিকর ঘাটী থেকে উড়ে অপেক্ষারত তিনটী ডিঙ্গী নৌকার উপরে আসামাত্র ৬টী মেশিন গান একই সঙ্গে গর্জে উঠে আর নিমেষেই আকাশে বিমানটীতে আগুন লেগে যায়। আকাশে আগুন দেখে নিকটবর্তী গ্রামবাসীরা ভয়ে পালাতে থাকে। এই সুযােগে মুক্তিসেনারাও পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়। এই ঘটনার পরই পাকসেনারা অকারণেই তিনটী গ্রাম জ্বালিয়ে ভস্মীভূত করে দেয়।
৬ই আগষ্ট রাত্রিতে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের অতীব গুরুত্বপূর্ণ জুলাই সেতুটী মুক্তিবাহিনী ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেয়। ইহার ফলে সিলেট জকিগঞ্জ সড়ক যােগাযােগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। উক্ত সেতুটীর প্রহরায় নিযুক্ত ২০/২৫ জন রাজাকার প্রাণভয়ে পালিয়ে গিয়ে আত্মরক্ষা করে। সুনামগঞ্জ মহকুমার জগন্নাথপুরে তুমুল লড়াইয়ের পর মুক্তিসেনারা জগন্নাথপুর দখল করতে সক্ষম হয়।
সূত্র: দৃষ্টিপাত, ১১ আগস্ট ১৯৭১