একটি সেক্টরে তিন দিনের জনৈক মেজর সমেত ৫০ জন পাকসৈন্য নিহত
বাঙলাদেশের সব রণাঙ্গনে মুক্তিফৌজের তৎপরতা
মুজিবনগর, ২৬ জনু এখানে প্রাপ্ত সংবাদে জানা যায়, গত তিন দিনের মুক্তিফৌজ কমাণ্ডোদের আক্রমণে একজন মেজর সমেত কমপক্ষে ৫৩ জন পাকসৈন্য নিহত হয়েছে।
এছাড়া কমাণ্ডোরা ৭ জন পাক এজেন্ট নিহত করেছে। এর মধ্যে রাজশাহীর হােটেলেই ৪ জন।
জলপাইগুড়ির খবরে প্রকাশ যে, দিনাজপুর সেক্টরের পাঁচগড়ে মুক্তিফৌজের সঙ্গে পাকফৌজের তীব্র সংঘর্ষ হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বগুড়া অঞ্চলে এক তীব্র লড়াইয়ের পর মুক্তিযোেদ্ধারা ১৪ জন পাকসৈন্যকে বন্দী করেছে।
দক্ষিণ-পূর্ব সেক্টরে বৈকারি, ভােমরা, কাগডাঙ্গা, মাধবকুণ্ডি, গােদাগাড়ি এবং কাদিপুরে মুক্তিফৌজের সঙ্গে প্রচণ্ড গুলি বিনিময় হচ্ছে।
শীতলাই রেল স্টেশনে মুক্তিফৌজ দুটি রেল বগী উড়িয়ে দিয়ে যুদ্ধসামগ্রীর প্রচুর ক্ষতি করেছে।
শরণার্থীরা জানিয়েছেন খুলনা জেলার মাধবকালী অঞ্চলে মুক্তিফৌজ ১৪০ জন রাজাকারকে নিহত করেছে। সম্প্রতি পাকফৌজ এই আধা সামরিক সংস্থাটি সংগঠিত করতে।
মুক্তিবাহিনীর দপ্তর থেকে আগরতলায় প্রাপ্ত এক সংবাদে বলা হয় যে, বুধবার কুমিল্লা সেক্টরের গােপীনাথপুরে মুক্তিফৌজের সঙ্গে পাকফৌজের প্রচণ্ড গুলি বিনিময় হয়।
গেরিলারা দাবি করেছেন, ৯০ জন পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়েছে। পরে পাকফৌজ পালিয়ে কর্নেল বাজারে আশ্রয় গ্রহণ করে।
ঐ সূত্রের সংবাদে বলা হয়, বৃহস্পতিবার নােয়াখালী সেক্টরের সােনাইমুরীতে গুলি বিনিময়ে পাঁচজন পাকসৈন্য মুক্তিফৌজের হাতে নিহত হয়।
চট্টগ্রাম সেক্টর থেকে জানানাে হয়েছে, ২২ জুন গেরিলাদের পাতা মাইনের বিস্ফোরণে পাকফৌজের একটি জিপ ধ্বংস হয়। দু’জন অফিসার সমেত ছ’জন সৈন্য নিহত হয়।
নােয়াখালি সেক্টরে ২২ জন পাক টহলদারী একটি দলকে আক্রমণ করে ছাগলনায়ার কাছে ৬ জন পাক সৈন্যকে নিহত করে। ঐ একই দিনে শ্রীহট্ট সেক্টরে গ্রেনেড আক্রমণে আরও ৫ জন সৈন্য নিহত হয়।
এক সূত্রের সংবাদে প্রকাশ যে, দিনাজপুরে সম্প্রতি পাকফৌজ বন্দুকের নল পিঠে লাগিয়ে একদল স্থানীয় লােককে সাঁওতালদের ৪ হাজার ঘর পুড়িয়ে দিতে বাধ্য করে।
শ্রীহট্ট সেক্টরে তিরাই নামে এক গ্রামে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল এই অপরাধে কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে।
সূত্র: কালান্তর, ২৭.৬,১৯৭১