শ্রীহট্টের রণাঙ্গনে মুক্তিফৌজ তৎপর
বহু পাক সেনা হতাহত
১৩ই জুন স্বাধীনতা সংগ্রামী গেরিলা সৈনিকরা সিলেট মৌলভীবাজার রাস্তায় শেরপুরে পাক সেনাদের অতর্কিত আক্রমণ করে প্রায় ৫০ জন পাক সেনাকে খতম করে অনেক অস্ত্রশস্ত্র দখল করেছে।
হবিগঞ্জ মহকুমার মনতলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি ছাউনির দিকে পাক সেনারা এগুবার চেষ্টা করলে মুক্তিযােদ্ধারা তাদের বাধা দেয়। দীর্ঘ তিন দিন লড়াইয়ের পর দস্যু হানাদাররা মুক্তি সংগ্রামীদের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পালিয়ে গেছে। এ এলাকা মুক্তি সেনারা নিজেদের দখলে এনেছেন। [ গত মঙ্গলবার তেলিয়াপাড়ায় মুক্তিযােদ্ধারা এক আক্রমণ চালিয়ে ১৬ হানাদারের রক্ত পিপাসা চিরতরে মিটিয়ে দিয়েছেন। আসাম পাড়ায় অন্য একটি আক্রমণে প্রায় ৬০ জন শত্রু সেনা খতম হয়েছে। জৈন্তপুর এলাকায়ও মুক্তিবাহিনীর তীব্র আক্রমণে পাক সেনাদের দিশেহারা করে তুলছে।
গত ১৫ই জুন আখাউড়া থেকে সিলেটের দিকে যাওয়ার সময় সাহাবী বাজারের কছে মুক্তিসেনাদের মাইন ফেটে সৈন্যভর্তি একটি রেলগাড়িকে উড়িয়ে দেয়। এতে কমপক্ষে ১৫০ জন জন পাকসেনা খতম হয়েছে বলে মুক্তিফৌজ সদর দপ্তর থেকে জানানাে হয়েছে। | গত ১৬ই জুন সকালে বড়লেখা থানার শাহবাজপুরে পাক সেনাদের ছাউনির উপর আক্রমণের ফলে ১৩ জন শত্রুসৈন্য প্রাণ দিয়েছে মুক্তিসেনাদের হাতে।
হানাদারদের উপর আক্রমণের সাথে সাথে যােগাযােগের সব ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে চলেছেন। মুক্তিসেনারা। বুধবারে মুক্তিযােদ্ধারা শাহবাজপুর বড়লেখা রাস্তার একটি সেতু মাইন দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছেন, তারপর দিন শাহবাজপুর জলঢুপ রাস্তায় “হুইরপুল” নামক সেতুটিও উড়িয়ে দিয়েছেন। এবং গতকাল মুডাউলের কাছে একটি রেলসেতুরও ধ্বংস করা হয়েছে। ফলে হানাদাররা শাহবাজপুরে কোনােঠাসা হয়ে পড়েছে।
খােদ সিলেট শহরেই নাইয়র পুতুলের কাছে ডিনামাইট দিয়ে একটি সেতু ধ্বংস করেছে মুক্তিফৌজের জওয়ানরা। এই সাথে দুটো সৈন্যবাহী জীপও ধ্বংস করেছে।
গত ১৮ই জুন মুক্তিফৌজের একটি গেরিলা দল বড়লেখা থানার জুডিতে পাকসেনাদের উপর আক্রমণ চালিয়ে ২৫ জন পাক সেনাকে খতম এবং ৯জন শত্রুসেনাকে জীবন্ত অবস্থায় গ্রেফতার করেছে। জয় বাংলা।
সূত্র: দৃষ্টিপাত, ২৩ জুন ১৯৭১