ডেইলি টেলিগ্রাফ, ২ এপ্রিল ১৯৭১
বাংলার ট্রাজেডি
প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পশ্চিম পাকিস্তানের সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে প্রবেশ করেছে। তারা গত ডিসেম্বরের নির্বাচনের ফলকে বানচাল করার চেষ্টা করছে যেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। সেনাবাহিনীর প্রথম কাজ ছিল সব বিদেশী সংবাদদাতাদের বের করে দেয়া। শুধুমাত্র ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেইলি টেলিগ্রাফ এর সাইমন ড্রিং কিছুদিন অবস্থান করতে পেরেছেন। তার কাছ থেকে পাওয়া সেনাবাহিনীর নির্মমতার ও নিষ্ঠুরতার খবর আমরা গত মঙ্গলবারের সংস্করণে ছেপেছি। তার পর থেকে সেখানে কি ঘটছে সে ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য কোন সংবাদ আমরা পাচ্ছিনা। পাকিস্তান সরকার যদি ভুল রিপোর্ট সম্পর্কে প্রতিবাদ করেন তাহলে পুরোটাকেই ভুল বলতে হবে।
এটা সম্ভাব্য মনে হচ্ছে যে; সেনাবাহিনী পুর্বঅঞ্চলের রাজধানী ঢাকা সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রণে রেখেছে এবং অন্যত্র বাঙ্গালীদের প্রতিরোধ ভঙ্গুর অবস্থায় আছে। যেহেতু বাঙালিরা সামরিক লোক নয় তারা গৃহযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিলোনা। তাই প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের আদেশে পূর্ব বাংলায় কর্তৃত্ব ধরে রাখতে পাঞ্জাবি সেনা পাঠানো হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেখানে আরও রক্তপাত হতে যাচ্ছে; হয়ত দ্রুত নয় তবে কখনো কখনো। আমাদের আজকের প্রাপ্ত রিপোর্টে জানা যায় পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনা তাদের সংলগ্ন ভারতের পশ্চিম বঙ্গে অলোড়ন তুলেছে। অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়তে পারে।