গেরিলা তৎপরতায় ঢাকা কুমিল্লাসহ বাঙলা দেশের বহু শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন
আগরতলা, ২৬ জুলাই (ইউ এন আই) – গত কয়েকদিনে ঢাকা কুমিল্লাসহ বিভিন্ন শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা মুক্তিফৌজের গেরিলা তৎপরতায় বিচ্ছিন্ন হয়েছে। গেরিলারা বিভিন্ন স্থানের ইলেকট্রিক থামও উঠিয়ে দিচ্ছেন। গত সপ্তাহে গেরিলাদের আক্রমণে কুমিল্লা রণাঙ্গনে ৬০ জন পাকহানাদার নিহত হয়েছে বলে সীমান্তের ওপার থেকে এক নির্ভরযােগ্য সংবাদ এসেছে।
কুমিল্লা রণাঙ্গনের আরাে বিভিন্ন স্থানে পাক-বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর সংঘর্ষের উল্লেখযােগ্য সংবাদ পাওয়া গেছে।
মুজিবনগর থেকে ইউ এন আই প্রেরিত অপর এক সংবাদে বলা হয়েছে যে, তে. ড়ে একটি পাক ট্রেনিং ক্যাম্পে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ চালায়। ঐ ট্রেনিং ক্যাম্পটি মুক্তিসেনারা পুড়িয়ে দিয়েছেন। কানাইঘাটের কয়েকটি সরকারী দপ্তর গেরিলারা ধ্বংস করে দিয়েছেন।
গেরিলা তৎপরতা উত্তরােত্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় পাক-সামরিক কর্তৃপক্ষ উত্তর পশ্চিম সিলেটের কয়েকটি স্থানে পুনরায় সান্ধ্য আইন জারি করেছে।
গত ২১ জুলাই মৌলভিবাজারের দক্ষিণে এক সীমান্ত চৌকি ভবন গেরিলারা ধ্বংস করে দিয়েছেন।
গত ২৩ জুলাই যশাের রণাঙ্গণের মেহেরপুরে মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ২ জন পাক সেনা খতম হয়েছে। ২০ জুলাই পাটগ্রামে মুক্তিবাহিনীর হাতে পাক-সেনারা প্রচণ্ডভাবে মার খেয়েছে।
গত ২২ জুলাই বগুড়ায় ২ জন পাক-সেনা নিহত হয়েছে। গত সপ্তাহে ভুরুঙ্গমারি নাগেশ্বরী রােডের এক সড়কসেতু গেরিলারা ধ্বংস করে দিয়েছেন। ঐ স্থানে চার জন সেতুরক্ষীকে খতম ও ২ জনকে বন্দী করা হয়েছে।
মুক্তিবাহিনী নাগেশ্বরী এলাকায় আরাে একটি সেতু ধ্বংস করে দিয়েছেন।
গত ২২ জুলাই কুমিল্লা রণাঙ্গনে গেরিলারা একটি সেনাবাহী মােটর লঞ্চ ধ্বংস করে দিয়েছেন। ফলে তিন জন পাক সামরিক অফিসার, একজন জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার এবং আট জন পাক সেনা জলে ডুবে মারা গেছে। কিছু যুদ্ধাস্ত্র গেরিলারা দখল করেছেন।
গত ২০ জুলাই কড়কড়িয়া ও রামগড়ের মধ্যে একটি পাক সামরিক দালাল গেরিলাদের হাতে নিহত হয়েছে।
ফরিদপুর জেলার মাদারীপুরে ৩ জন দালালকে খতম করা হয়েছে। ময়মনসিং জেলার বাজিতপুরেও ২জন খতম হয়েছে।
সূত্র: কালান্তর, ২৭.৭.১৯৭১