জুলম প্রতিরোধ সাবকমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে বঙ্গবন্ধুর বিবৃতি
১০ জানুয়ারি ১৯৪৯, ঢাকা।
৮ই জানুয়ারি ছাত্র ধর্মঘট সম্পর্কে পূর্ব পাকিস্তানের উজিরে আজমের বিবৃতি দেখিয়া আমরা কিছুমাত্র বিস্মিত হই নাই। তিনি ফেলিস্তিন, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশের দোহাই দিয়া ছাত্রদের ন্যায়সঙ্গত দাবীকে উড়াইয়া দিয়াছেন। পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র সমাজের উপর নানা রকমের অকথ্য জুলুম চলিতেছে এবং তাকে আমরা সমস্ত জিলার ব্যাপারই জানাইয়াছি। যদিও তিনি অন্যান্য ছয়টি জেলার ছাত্রদের উপর অনুষ্ঠিত জুলুমের কথা ব্যক্ত না করিয়া কেবলমাত্র রাজশাহীর ঘটনাই উল্লেখ করিয়াছেন। বারম্বার স্মারকলিপি দেওয়া সত্ত্বেও তিনি ছাত্রদের ন্যায্য দাবী না মানাতেই আমরা বাধ্য হইয়া জুলুম প্রতিরোধ দিবস ঘোষণা করিয়াছি। তিনি গোটা ছাত্র সমাজকে “রাষ্ট্রের দুশমন” এবং জুলুম প্রতিরোধ দিবসে বাষ্ট্রের পৃষ্ঠে “ছুরিকাঘাত” বলিয়া আখ্যায়িত করিয়াছেন। জনাব নুরূল আমীন সাহেব যে ছাত্র লীগকে কমিউনিষ্ট ও পঞ্চম বাহিনী বলিয়াছেন, সেই ছাত্রলীগকেই তিনি ১০০/- সাহায্য করে পূর্ব পকিস্তানে মুসলিম ছাত্র লীগের সংহতি বাঁচাইয়া রাখিয়াছেন। বিগত ১১ই মার্চের আন্দোলনেও এইসব খেতাব দেওয়া হইয়াছিল কিন্তু পরিশেষে তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী জনসাধারণের ন্যায্য দাবীকে সুস্থ্য জ্ঞানে মানিয়া লইয়া ছিলেন। ছাত্রসমাজ ও জনসাধারণকে “রাষ্ট্রের দুশমন” প্রভৃতি মামুলি বুলি দিয়া ভুল বুঝান অসম্ভব। এবার জনসাধারণের পূর্ণ সহানুভুতি ও সমর্থন আমাদের পিছনে রহিয়াছে, এ সম্বন্ধে আমরা সুনিশ্চিত। [1, p. 75]
Reference:
[1] S. Hasina, Secret Documents of Intelligence Branch on Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, Vol I 1948-1950. Hakkany Publisher’s, 2018.