নিউ ইয়র্ক টাইম, ১৭ নভেম্বর ১৯৭১
আর্মি আক্রমণের পরে পূর্ব পাকিস্তানের শহর
আগুণ আর ধ্বংস
পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাদের একটি টাস্কফোর্স পূর্ব পাকিস্তানের শহর শকহামাগার এসেছিল। তারা ২৭ অক্টোবর আসে এবং এটা ধ্বংস করে। এর জনসংখ্যা ছিল ৮০০০।
দৃশ্যতঃ জানা যায় – বাসিন্দাদের মতে ভুল করেএকটি গেরিলা দল এখানে ছিল, সেনাবাহিনী মোটর লঞ্চ থেকে কোনও সতর্কতা ছাড়াই আক্রমণ করে। ঢাকা থেকে ২০ মাইল দূরত্বের এসে লঞ্চের ইঞ্জিনগুলির শব্দ মানুষকে সতর্ক করে দেয়, ফলে তারা অধিকাংশই কাছাকাছি পুকুর, খাল ও ধান ক্ষেত্রের মধ্যে পালিয়ে যায়।
তারা ঘর এবং কুড়েঘরে গুলি করতে করতে আগাতে থাকে। বাহিনী প্রায় সকল ঘরেই আগুণ দেয়। যারা বেঁচে ছিল তারা কবরস্থান দেখিয়ে বলে যে সেখানে ১৯ জনকে কবর দেয়া হয়েছে।
কংক্রিট স্কুলের আসবাবপত্র এবং দরজা খুলে নিয়ে সন্ধ্যার খাবারের জ্বালানি হিসেবে ব্যাবহার করে সেনাবাহিনী। রাইস মিল ধ্বংস করা হয়। গ্রামবাসীদের সদ্য গুদামজাত চাল পুরীয়ে দেয়া হয় এবং কিছু গরু ও ছাগল জবাই করা হয়।
প্রচুর গম যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে পাঠানো হয়েছিল সেগুলো সৈন্যরা তাদের নৌকায় বোঝাই করে নিয়ে যায়।
ফসফেট সারের একটি গুদাম পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং অধিকাংশ ব্যাগ ধ্বংস করা হয়।
মসজিদের অন্তর্গত বেশ কয়েকটি ভবনে আগুণ জ্বালিয়ে দেয়া হয় এবং হিন্দু মন্দির ধ্বংস করা হয়- সেখানে প্রায় ৪০০ জন হিন্দু ছিল- সব মন্দির আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং মূর্তিগুলির মাথা গুলি করে ফেলে দেয়া হয়।
স্থানীয় পোস্ট অফিসটিও বরখাস্ত করা হয় এবং গ্রামবাসীরা বলে যে সৈন্যরা সেটার স্ট্যাম্প এবং অর্থ নিয়ে যায়।
একজন গ্রামবাসী বলেন, ‘আপনারা দেখুন, তারা আমাদের ফলও ধ্বংস করেছে। এধরনের কলা গাছ বেড়ে উঠতে দীর্ঘ সময় লেগেছে, এবং সৈন্যরা এগুলোর চারপাশে খড় জ্বালিয়ে এগুলো ধ্বংস করেছে।”
অন্য এক ব্যক্তি, কাঁদতে কাঁদতে এই সংবাদদাতাকে বলেছিলেন: “আপনারা আমেরিকানরা সাহায্য দিচ্ছেন – আপনার কি জানেন আমাদের গম এবং তেল ও ওষুধের সাহায্যে কাদের সাহায্য করেছেন? আপনারা কেবল ইয়াহিয়ার হত্যাকারীদের সাহায্য করেছেন।”
শেখরনগরের ভাগ্য সম্পর্কে একজন বিদেশী কর্মকর্তা মন্তব্য করেন: “এটা নিশ্চিতভাবে মনে হয় যে, এই ধরনের ঘটনাগুলোতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও বাইরের জাতিগুলি মানবিক ত্রাণ ক্রস পারপাসে কাজ করছে। আমরা খাদ্য ও সার নিয়ে আসি এবং সেনাবাহিনী সেগুলো জব্দ করে বা পুড়িয়ে ফেলে।’’