You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.27 | ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ | আজকের এদিনে (with references) - সংগ্রামের নোটবুক

1971.09.27 | ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ | আজকের এদিনে (with references)

২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ আজকের এদিনে

প্রেসিডেন্ট এর ক্ষমা ঘোষণায় আখতার সোলায়মান এর সন্তোষ প্রকাশ

লন্ডনে এক বিবৃতিতে সোহরাওয়ারদী কন্যা আখতার সোলায়মান পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক গোলযোগের সময় যে সকল লোক বিপথগামী হয়েছে তাদের ক্ষমা করায় ইয়াহিয়ার প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন উত্তেজনা বশত বা চাপের কারনে জনগণ এরুপ ভুল করে থাকে। যারা এই রুপ ভুল করেছে তাদের জন্য সাধারন ক্ষমা তাহাদের স্বগৃহে ফেরত আসার সুযোগ করে দিয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানে বেসামরিক শাসন বেবস্থা প্রতিষ্ঠার পথে ইহা একটি শুভ পদক্ষেপ। সীমান্ত অতিক্রম করে যারা ভারত গমন করেছেন তাদের ফিরে আসার জন্য তিনি আহবান জানান। সলায়মান বলেন পাকিস্তানের পক্ষে প্রচারনার অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহে তিনি জেনেভা যাচ্ছেন।

তিনি বলেন ভারত শরণার্থী প্রত্যাবর্তনে বাধা সৃষ্টি করছে এবং বিপথগামীদের অস্র দিয়ে সাহায্য করছে। তিনি লন্ডন প্রবাসী এক সিলেটীর উদাহরন দিয়ে বলেন মার্চে তিনি সিলেটে ছিলেন তিনি নিজ চোখে দেখে এসেছেন বিদ্রোহীদের কিভাবে ভারত অস্র দিয়ে সাহায্য করেছে। [**]

ওয়ালী খান

ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ন্যাপ এর অল পাকিস্তান প্রধান ওয়ালী খান শেখ মুজিবের মুক্তি দাবি করেছেন। সুত্রঃ ব্রিগ্রেঃ এ আর খান

মওলানা মান্নান নিয়াজী বৈঠক

মওলানা এম.এম.মান্নানের নেতৃত্বে মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির ২৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদল ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লে: জেনারেল নিয়াজীর সাথে দেখা করেন। সাক্ষাতে মওলানা মান্নান বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এটি ইসলামের খেদমতের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন পাকিস্তানের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনীকে সংগঠনের ২৫০০০ মাদ্রাসার শিক্ষক পূর্ণ সহযোগিতা করবেন।
তিনি লে: জেনারেল নিয়াজীকে একখানা কোরআন শরিফ উপহার দেন। নিয়াজি ইসলামকে রক্ষা ও উহার উন্নতির জন্য উলেমা সম্প্রদায়ের অবদানের জন্য তাদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি দেখান। [**]

শেখ মুজিবের বিচার সম্পর্কে মন্তব্য

পাকিস্তানের সামরিক প্রশাসকের দপ্তর থেকে এই দিন জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জনগণকে সতর্ক করে বলে দেওয়া হয় যে কোনোক্রমেই নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবের বিচার সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করা যাবে না। [**]

বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণ

পাকিস্তান সরকার বলেছে বিপুল সংখ্যক বাঙ্গালী ইবিআর,ইপিআর,পুলিশ সদস্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। [**]

নিয়োগ বদলী

সিএসপি কফিল উদ্দিন মাহমুদকে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব (উন্নয়ন) পদে বদলী করা হইয়াছে। বর্তমানে চীফ সেক্রেটারি মুজাফফর উদ্দিন পশ্চিম পাকিস্তানী। [**]

যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে শাহ আজিজ

সাবেক বিরোধী দলীয় উপনেতা পাকিস্তান ন্যাশনাল লীগ নেতা এবং জাতিসংঘে পাকিস্তানী প্রতিনিধিদলের সদস্য শাহ আজিজ যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে পাকিস্তান স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন ফান্ড রেইজিং ডিনারে বলেন ভারত শরণার্থীদের ফিরতে বাধা দিতেছে। শরণার্থীদের ফিরাতে ভারতকে চাপ দেয়ার জন্য তিনি বৃহৎ শক্তি বর্গের কাছে আহবান জানান। অনুষ্ঠানে অনেক গণ্যমান্য মার্কিন নাগরিক উপস্থিত ছিলেন। [**]

কাজী কাদের ও ঠাণ্ডা মিয়া ভূট্টোর সাথে দেখা করেছেন

কাইউম মুসলিম লীগের দুই শীর্ষ নেতা কাজী কাদের ও ওয়াহিদুজ্জামান ঠাণ্ডা মিয়া ভুটটো এর করাচীর ক্লিফটন রোডের বাসায় সাক্ষাৎ করেছেন। দুই নেতা সাংগঠনিক কাজে করাচী অবস্থান করছেন। তারা পূর্ব পাকিস্তানের সহ তাদের দলীয় কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন।[**]

ইন্দিরা গান্ধী

ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশ সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য তিনদিনের সরকারী সফরে মস্কো পৌঁছেছেন। বিমান বন্দরে তাকে স্বাগত জানান সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী আলেক্সি কোসিগিন। প্রধানমন্ত্রীর সচিব ডিপি ধর তাহার সফর সঙ্গী হিসেবে আগেই মস্কো পৌঁছেছেন। এ সফরে ৯ আগস্ট সম্পাদিত মৈত্রী চুক্তির বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রস্তুত করা হবে। প্রথম দিনেই ইন্দিরা গান্ধী বেসরকারি বৈঠকে কোসিগিনের সাথে বৈঠক করেছেন। মস্কোতে ভারতের প্রধান মন্ত্রী ক্রেমলিন প্রাসাদে অবস্থান করবেন। ইন্দিরা গান্ধীর সফরে বুলগেরিয়া সফররত সোভিয়েত কম্যুনিস্ট পার্টি প্রধান ব্রেজনেভ দেশে ফিরে এসেছেন। সফরে ইন্দিরা গান্ধির দুটি অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে এর একটি হল স্তানিলাভিস্কি থিয়েটারে ব্যালে নৃত্য অনুষ্ঠান এবং রাতের রাষ্ট্রীয় ভোজ। এর পরিবর্তে তিনি সন্ধ্যায় দুতাবাস কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে মিলিত হন। [*]

জগজীবন রাম

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগজীবন রাম শ্রীনগরে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন বাংলাদেশকে ভারত স্বীকৃতি দিলেই যে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে ফেলবে এমন গ্যারান্টি কেউ দিতে পারে না। তিনি বলেন স্বাধীনতার অর্থই যে স্বীকৃতি দান সে বিষয়ে কারোর কোন সন্দেহ নেই। তিনি বলেন মুক্তিবাহিনীকে মোকাবেলা করতে হলে পাকিস্তানকে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তানে সৈন্য ও রসদ পাঠাতে হবে। এসব চট্টগ্রাম বন্দরে পৌছার সম্ভাবনা খুবই কম। তিনি বলেন পূর্ব পাকিস্তানে গেরিলা তৎপরতা যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে পাকিস্তান আর বেশীদিন পূর্ব পাকিস্তান ধরে রাখতে পারবে না। পরে তিনি পাতিয়ালায়/রাজপুরায় রাতে এক জনসভায় তিনি বলেন পাকিস্তানের হুমকির মোকাবেলায় ভারত সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছে। তিনি বলেন ভারতের ঘাড়ে এখন ৯০ লাখ শরণার্থীর বোঝা তাদের পিছনে প্রতিদিন দুই কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। তিনি বলেন তারা স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে যাবেন কারন পাকিস্তানীরা আর বাংলাদেশ ধরে রাখতে পারবে না। তিনি বলেন পূর্ব বঙ্গে পাঞ্জাবী মুসলমানেরা বাঙ্গালী মুসলমানদের হত্যা করছে এতেই প্রমানিত ধর্ম ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ গড়ে তোলা যায় না। [*]

বোম্বাই এর বুদ্ধিজীবী

বোম্বাই এর বুদ্ধিজীবীরা এক সম্মেলনে মিলিত হয়ে বাংলাদেশে পাক বাহিনীর গণহত্যার নিন্দা জানিয়েছে। সম্মেলন উদ্বোধন করেন মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রী রফিক জাকারিয়া। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানের একমাত্র ছোট ভাই শেখ নাসের। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন প্রখ্যাত উর্দু কবি কিষান চন্দর। সভায় বুদ্ধিজীবীরা পাকিস্তানে আটক শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তিদাবী করে এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহবান জানায়। সম্মেলনে বাংলাদেশের গায়ক আব্দুল জব্বার নিমন্ত্রিত অতিথি হয়ে দুটি গান পরিবেশন করেন।
সল্টলেক শরণার্থী শিবিরে নবনিযুক্ত কর্মচারীদের দুর্নীতি অসহনীয় পর্যায়ে চলে গিয়েছে। তাদের উৎপাতে শিবির কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল এইচ চক্রবর্তী পদত্যাগ করেছেন। শুক্রবার রেশন বণ্টন নিয়ে গোলযোগের শুরু হয়। শরণার্থীদের অভিযোগ এ সকল কর্মচারীরা রাজনৈতিক কর্মী [সিপিআই] এবং তাদের মনোভাবের সমর্থকদের রেশনে সুবিধা বেশী দেয়। তাদের বাইরের লোকেরা লাইনে দাঁড়ালেও রেশন পান না। কয়েকদিন আগে তাদের সাথে শরণার্থীদের মারামারি হলে ১০ জন আহত হয়। ব্যারাকপুর এস ডি ও এখানে রেশনের কাউন্টার বৃদ্ধির আদেশ দিলেও তা পালন করা হয়নি। [*]

সরণ সিং

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তৃতাকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরদার সরণ সিং বাংলাদেশের পরিস্থিতি উল্লেখ করে ভারতে অবস্থানকারী শরণার্থীদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি ও আওয়ামী লীগের সাথে একটি মীমাংসায় আসার জন্য পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানান। সরদার শরণ সিং সব বাধা উপেক্ষা করে বাংলাদেশ পরিস্থিতির পটভূমি এবং তারই পরিণামে ৯০ লাখ শরণার্থী ভারতে আশ্রয় নেওয়ায় উদ্ভূত জটিল অবস্থার জোরালো বিবরণ দেন। সদস্য রাষ্ট্র গুলোকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ইসলামাবাদের সামরিক শাসকদের সবাই যেন বুঝিয়ে বলেন যে নির্যাতন চালিয়ে সফল হওয়া যাবে না। সরণ সিং বলেন, পাকিস্তানের সামরিক চক্র বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়ে জাতিসংঘের সনদ যেভাবে লঙ্ঘন করেছে, তাতে বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের ঘরোয়া ব্যাপার নেই। যে দল পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গড়ত, তারাই আজ সামরিক আদেশে নিষিদ্ধ।
সরদার সরণ সিং এর বক্তৃতার সময় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দুইবার বাধা দেয়া হয় তা সত্ত্বেও সরদার সরণ সিং তার বক্তৃতা অব্যাহত রাখেন। সরণ সিং বক্তব্য দেওয়ার সময় পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আগা শাহী বৈধতার প্রশ্ন তুলে বাধা দিয়ে বলেন, তাঁর মাধ্যমে বাংলাদেশে সংঘর্ষের কারণ বর্ণনার মাধ্যমে ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে মাথা ঘামাচ্ছে।
সউদি প্রতিনিধি জামিল বারুদিও ও মাঝে মাঝে সরদার সরণ সিংকে বিবৃতি প্রদানে বাধা দেন এবং বিবৃতি পাঠ না করার জন চাপ দেন। সরদার সরণ সিং সউদি দাবী তাৎক্ষনিক প্রত্যাখ্যান করে তার বিবৃতি পাঠ সমাপ্ত করার চেষ্টা করেন।
সাধারন পরিষদের সভাপতি ইন্দোনেশিয়ান আদম মালিক ও তার বক্তৃতায় হস্তক্ষেপ করেন এবং পয়েন্ট অব অর্ডারে পাকিস্তান প্রতিনিধিকে বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দেন। পাকিস্তানের বক্তব্য এর সময় ছিল ১ অক্টোবর। [*]

মাহমুদ আলী

জাতিসংঘ সাধারন পরিষদে পাকিস্তান প্রতিনিধিদল নেতা মাহমুদ আলী জাতিসংঘ সাধারন পরিষদে বলেন পাক ভারত এর মধ্যে সংঘর্ষ এড়াতে হলে বিশ্ব রাষ্ট্রবর্গের উচিত তারা যেন ভারতকে তার গুরুতর পরিনাম সম্পর্কে জানায় এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার নীতি পরিহার করতে প্রভাব খাটাতে বলেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরন সিং পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে বক্তব্য দেয়ায় তারা বাধা দিয়েছিল এধরনের বক্তব্য জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন। তিনি বলেন ভারতের মন্ত্রী আবার বক্তব্ব দিতে আসবেন কিনা তা তিনি জানেন না। পাকিস্তান প্রতিনিধিদল নেতা মাহমুদ আলী তার ভাষণে বলেন ভারত সীমান্তকে সশস্র সংঘর্ষের ক্ষেত্রে পরিণত করেছে এবং অন্যান্য সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করছে। বিচ্ছিন্নবাদীরা ভারতেই আশ্রয় পেয়েছে। তিনি বলেন আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গের সাথের সীমান্ত দৈনিক গোলাগুলির ক্ষেত্রভুমিতে পরিনত হয়েছে। এ সকল এলাকায় ভারত আগে থেকেই সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করে আসছিল। এটা এখন পরিস্কার ভারত মুক্তিবাহিনীকে প্রশিক্ষন, সাজ সরঞ্জাম এবং অর্থ প্রদান করছে। এ ব্যাপারে তিনি সরন সিং এর তাদের পার্লামেন্ট এ দেয়া ভাষণের উদাহরন দেন। তিনি ভারত সরকার প্রকাশিত শরণার্থী সংখ্যা নিয়ে বলেন ৯০ লাখ সত্য নয়। প্রকৃত সংখ্যা হল ২০ লাখ ২ হাজার ৬ শত ২৩ জন মাত্র। তিনি বলেন ভারত গত চার মাসে বিদেশে অনেক প্রতিনিধি পাঠিয়েছে যাদের উদ্দেশ্য কোন মানবিক ছিল না তারা পাকিস্তানকে ভাঙ্গার ব্যাপারে কথা বলতেই সে সফর আয়োজন করেছিল। তিনি বলেন শরণার্থীদের পূর্ব পাকিস্তানে গ্রহন করার জন্য ২১ টি অভ্যর্থনা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। তিনি প্রেসিডেন্ট এর গৃহীত ব্যবস্থার প্রশংসা করে শরণার্থীদের ফিরে আসার আহবান জানান। তিনি বলেন প্রেসিডেন্ট শুধু শরণার্থীদের নয় দল ত্যাগী সামরিক বাহিনীর লোকদেরও ক্ষমা করেছেন। তিনি ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জগ জীবন রামের বক্তৃতার নিন্দা করে বলেন তার দেশ দেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হতে দেবেন না দেশের প্রতিটি নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। তারা এক দেশ এবং এক জাতি হিসেবে বসবাস করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। [**]

ভারতে শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশন প্রতিনিধি টমাস

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার প্রিন্স সদরুদ্দিন আগা খান বলেছেন তারা ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য সদস্য দেশ গুলোর কাছে আরও সাহায্য চাবে। ভারতে শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশন প্রতিনিধি টমাস দিল্লীতে এ কথা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন বিশ্ববাসীর সাহায্য ছাড়া জাতিসংঘের পক্ষে এ সমস্যা মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন বাংলাদেশের শরণার্থী বাবদ তাদের এ পর্যন্ত সংগ্রহ ১১ কোটি ৪০ লাখ ডলার। তিনি বলেন মে মাসে ৬০ লাখ শরণার্থীদের জন্য ৪০ কোটি ডলার সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। এখন প্রয়োজন ৯০ লাখ শরণার্থীর জন্য। [*]

সুত্রঃ
[*] যুগান্তর, কালান্তর ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
[**] পূর্ব পাকিস্তানের সকল পত্রিকা ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭১