You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.19 | ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ | আজকের এদিনে (with references) - সংগ্রামের নোটবুক

1971.09.19 | ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ | আজকের এদিনে (with references)

১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ আজকের এদিনে

পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন ১৯৭১ সালের ২৫ নভেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের ৭৮ টি শূন্য আসনে এবং প্রাদেশিক পরিষদের ১০৫ টি শূন্য আসনে উপ- নির্বাচন ঘোষণা করেন। আসন গুলি হলজাতীয় পরিষদে উপনির্বাচনের আসন সমুহ
রংপুর ১২ টি আসনের ৪টি এন ২, ৯, ১০, ১১। দিনাজপুর ৬টি আসনের ৫টি এন ১৮ বাদে এন ১৩- এন ২০। বগুড়া ৫টি আসনের ২টি এন ২৩, ২৪। পাবনা ৬টি আসনের ২টি এন ২৬, ২৮। রাজশাহী ৯টি আসনের ৫টি এন ৩০, ৩২, ৩৩, ৩৫, ৩৬। কুষ্টিয়া সকল । যশোর সকল। (একটি আসনে নিহত এমপিকে বহাল দেখানোয় নির্বাচন নাই)। খুলনা ৮টি আসনের ৩টি ৫১,৫৩,৫৪। বরিশাল ৯ টি আসনের ৫টি এন ৫৮, ৬০, ৬২, ৬৩, ৬৬। পটুয়াখালী নাই। টাঙ্গাইল ৫টি আসনের ৩টি। ময়মনসিংহ ১৮টি আসনের ৭টি এন ৭৮, ৮৩, ৮৫, ৮৮, ৯১, ৯২, ৯৩। ফরিদপুর ১০টি আসনের ৩টি এন ৯৬, ৯৭, ৯৯। ঢাকা ১৬ টি আসনের ৭টি এন ১০৭, ১০৮, ১১১, ১১২, ১১৩, ১১৫, ১১৭। সিলেট ১১টি আসনের ৬টি ১২৫, ১২৭, ১২৯, ১৩১, ১৩২, ১৩৩। কুমিল্লা ১৪টি আসনের ৫টি এন ১৩৫, ১৩৬, ১৩৮, ১৪৩, ১৪৪। নোয়াখালী ৮টি আসনের ৪টি এন ১৪৬, ১৪৭, ১৫০, ১৫১। চট্টগ্রাম (হিল সহ) ১০টি আসনের ৩টি এন ১৫৩, ১৫৫, ১৫৮।
কুমিল্লায় আত্মসমর্পণের জন্য দুটি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। একটি জেলা শান্তি কমিটি অফিসে অপরটি জেলা সশস্র বাহিনী বোর্ডে। ইতিমধ্যে অনেক আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী ও বিদ্রোহী এসব কেন্দ্রে আত্মসমর্পণ করেছে।
জাতীয় লীগ প্রধান আতাউর রহমান দৈনিক সংগ্রামে প্রকাশিত তার সাক্ষাৎকার দেয়ার বিষয় অস্বীকার করেছেন।
জমিয়তে ওলামা ইসলাম এর কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক মৌলানা গোলাম গাউস হাজারভি পেশোয়ারে বলেছেন পূর্ব পাকিস্তানে জামাতে ইসলামী প্রতিপক্ষের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। তিনি আরও বলেন জামাতিরা তাদের (প্রতিপক্ষ) বিশ্বাসঘাতক হিসাবে চিহ্নিত করেছে। তিনি জামাতের এধরনের ব্যাক্তিদের উপর নজর রাখার জন্য এবং প্রদেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য আলেম ওলামা ও সরকারের প্রতি আহবান জানান। তিনি সরকারের সাধারন ক্ষমা প্রদর্শনের সিদ্ধান্তকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন প্রেসিডেন্ট যেই ব্যবস্থাই নিক না কেন তা যেন পাকিস্তানের সংহতি ও অখণ্ডতার প্রতি যেন হুমকি স্বরূপ না হয়। তিনি বলেন তার দল ওয়ালী ন্যাপ এবং পিপিপির সাথে ঐক্যজোট করবে এবং এ ব্যাপারে দলে কোন বিভেদ নাই। তিনি বলেন ঐক্যজোট এখনও ঘোষণা হয়নি তবে তাতে ফাটল ধরানোর জন্য কেউ কেউ চেষ্টা করে যাচ্ছে।
কাইউম মুসলিম লীগ প্রধান খান আব্দুল কাইউম খান শুক্কুরে বলেছেন শেখ মুজিবের লন্ডন প্লানের সাথে ওয়ালী খান জড়িত আছে। তিনি বলেন ক্ষমতার লোভে পিপিপি সীমান্ত প্রদেশে ওয়ালী খানের সাথে হাত মিলিয়েছে। ওয়ালি খানের পিতা গফফার খান এখন বাংলাদেশের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন গাফফার খানের এ সকল বিবৃতি কাবুল রেডিও এবং আকাশবাণীতে গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করা হয়। তিনি বলেন গফফার খান কাবুলে আর তাদের পূর্ব পাকিস্তান নেতা অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ কলকাতায় বসে পাকিস্তান বিরোধী তৎপরতা চালাচ্ছেন। তিনি বলেন শেখ মুজিব ক্ষমতা পেলে পাকিস্তানের এ অংশেও অনুরূপ ব্যাবস্থা হতে পারত।
শবে মিরাজ উপলক্ষে জামাতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্র সংঘ ও ইসলামী সংগ্রাম পরিষদ যৌথভাবে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। ইসলামী সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মওলানা মাসুম এর সভাপতিত্তে অনুষ্ঠিত সভায় মুল বক্তা ছিলেন গোলাম আজম। সভায় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংঘ মতিউর রহমান নিজামী, প্রাদেশিক ছাত্র সংঘ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলী আহসান মুজাহিদ, ঢাকা জেলা ছাত্র সংঘ সভাপতি সরদার আব্দুস সালাম, ঢাকা বারের এডভোকেট আব্দুল নইম আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন। [সংগ্রাম ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১]
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন অধিবেশনে যোগদানের জন্য পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলের নিউইয়র্ক যাত্রার প্রাক্কালে দলনেতা পিডিপির মাহমুদ আলী করাচীতে পিপিআই এর সাংবাদিককে বলেন, সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের গণহত্যা চালিয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কেননা প্রদেশের সেনাবাহিনীর তৎপরতাকে কোনভাবেই গণহত্যা বলা যায় না।
তিনি বলেন ভারতের ভিত্তিহীন প্রচারনার জবাবের জন্য তার ১৬ সদস্য এর দলই যথেষ্ট। তিনি অভিযোগ করেন ভারত শরণার্থীদের পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে আসার পথে বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন ভারত সর্বক্ষেত্রে মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। গৃহহীন মানুষকে নিয়ে তারা রাজনৈতিক চাল চালছে। তিনি ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ নিউইয়র্কে অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছেন। [পাকিস্তান ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১]
পিডিপি প্রাদেশিক সভাপতি নুরুল আমীনকে লাহোরের এম্বাসেডর হোটেলে তার দল এবং আইনজীবীরা সংবর্ধনা দিয়েছে। [পাকিস্তান ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১]
আবুল কাশেমকে পূর্ব পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী নিয়োগ করায় দলের প্রধান মিয়া মমতাজ দৌলতানা সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। [পাকিস্তান ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১]
বিশিষ্ট বৌদ্ধ নেতা বিশুদ্দানন্দ মহাথেরো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক বিবৃতিতে পূর্ব পাকিস্তানের মন্ত্রীসভা গঠনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। বৌদ্ধ সম্প্রদায় থেকে মন্ত্রীসভায় সদস্য রাখায় তিনি সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। [পাকিস্তান ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১]
প্রাদেশিক কনভেনশন মুসলিম লীগ প্রধান শামসুল হুদা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণায় সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
শ্রম ও স্বাস্থ্য মন্ত্রী এএসএম সোলায়মান মিরপুরে এক জনসভায় ভাষণ দিয়েছেন। মৌলিক গনতন্ত্র মন্ত্রী মোঃ ইসহাক চারটি মাদ্রাসা এবং তিনটি রাজাকার প্রশিক্ষন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। এর আগে তাকে মৌলভীবাজারে সংবর্ধনা দেয়া হয় এবং একটি বিবাহ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ সময় তার সাথে দলের সভাপতি সিদ্দিক আহমেদ এবং সাধারন সম্পাদক মওলানা আশরাফ আলী সাথে ছিলেন। [ইত্তেফাক ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১]

ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় এক জনসভায় বলেছেন বৈরী দেশ গুলোর সাথেও তার দেশ বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়। [যুগান্তর ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১]

দিল্লিতে বাংলাদেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ২য় দিনে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা প্রস্তাব দেন যে, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি জনগণের স্বীকৃতি প্রদর্শনের জন্য তাঁরা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে যাবেন। বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বের মানবসমাজের দায়িত্ব সম্পর্কে গঠিত কমিশনের প্রতিনিধিরা সারা দিন আলোচনার পর তাঁদের প্রতিবেদনে কাবুল থেকে রাওয়ালপিন্ডি পর্যন্ত পদযাত্রার আহ্বান জানান। সিংহলের প্রতিনিধি স্যার সেনার্থ গুনবর্ধনে এ কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করেন। প্রতিনিধিরা আরও সিদ্ধান্ত নেন, পাকিস্তানি বর্বরতার শিকার বাংলাদেশের জনগণের দুঃখ–দুর্দশা নিজেদের চোখে দেখার জন্য শরণার্থীশিবির পরিদর্শন করবেন।
বাংলাদেশ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে প্রতিনিধিরা তিনটি কমিশনে ভাগ হয়ে তিনটি বিষয় পরীক্ষা করে দেখেন। খসড়া কমিটি তিনটি কমিশনের সুপারিশ ২০ সেপ্টেম্বর বিকেলে প্রকাশ্য অধিবেশনে পেশ করবেন। পরে একটি সুসংহত প্রস্তাব নেওয়ার জন্য অধিবেশনে কমিশনের সুপারিশগুলো একত্র করা হবে। ডেনমার্কের নিয়েলসনের নেতৃত্বে একটি কমিশন বাংলাদেশের সমস্যার পর্যালোচনা। এর সংযোগকারী ছিলেন ডা. জয় শেখর। দ্বিতীয় কমিশন কাজ করে মুক্তি আন্দোলন এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সহায়তার উপায় নিয়ে। এর নেতৃত্বে ছিলেন যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির সাংসদ উইলিয়াম মুলয়। সংযোগকারী ছিলেন ডা. মহম্মদ আইয়ুব। তৃতীয় কমিশনের নেতা সিংহলের স্যার সেনার্থ গুনবর্ধনের সংযোগকারী ছিলেন কে পি করুণা করণ। তার বিষয় ছিল বাংলাদেশ প্রশ্নে আন্তজার্তিক সমাজের দায়িত্ব নিরূপণ।
সম্মেলনে যোগদানকারী সব দেশের প্রায় ৪৫ জন প্রতিনিধির অধিকাংশই কোনো না কোনো কমিশনে অংশ নেন। সম্মেলনের সঙ্গে ভারত সরকার জড়িত না থাকলেও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা যোগদানকারী বিশিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে আলাদাভাবে যোগাযোগ করেন।
সম্মেলনে যোগদানকারী সব দেশের প্রায় ৪৫ জন প্রতিনিধি বুধবার ভাড়া করা এক বিমানে কলকাতা আসবেন। কলকাতা পৌঁছেই তারা কয়েকটি শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করবেন। এরই মধ্যে কয়েক সদস্য নিজ উদ্যোগে সীমান্ত ও শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেও ফেলেছেন।
জাম্বিয়া ও সোমালিয়া সফর শেষে ইথিওপিয়া সফরে ভারতের আইনমন্ত্রী এইচ আর গোখলে ইথিওপিয়ার বিভিন্ন স্তরের নেতা এবং কর্মকর্তাদের সাথে বাংলাদেশ বিষয়ে মত বিনিময় করেছেন। এ সকল দেশের প্রতিনিধির সাথে কথা বলার সময় তিনি মুলত শরণার্থী সমস্যা নিয়েই আলোকপাত করেন। আজ তিনি ইথিওপিয়ার পর রাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে বৈঠকের পর কেনিয়া সফর করবেন। [কালান্তর ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১]
বাংলাদেশ ভলান্টিয়ার সার্ভিস কোরের চেয়ারম্যান রহমত আলী কলকাতায় ভারতের সকল শরণার্থী শিবিরে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য শরণার্থীদের প্রতি আহবান জানান। তিনি আজ কয়েকটি শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে শরণার্থীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি বলেন তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনা তিনি শরণার্থীদের দেশে ফিরে যাবার প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানান। [যুগান্তর/কালান্তর ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১]
এদিকে ভারতের বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন শিবির গুলোতে চিকিৎসা সুবিধা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি মধ্য প্রদেশের মানা শরণার্থী শিবিরে বাসী গম খেয়ে অনেকে অসুস্থ হওয়ার পর আন্দোলন শুরু করলে পুলিশের গুলিতে দুই শরণার্থী মারা যায়। [কালান্তর ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১]
কম্যুনিস্ট পার্টির ৯ম বিহার সম্মেলনে দলটি বাংলাদেশ নেতা শেখ মুজিবের মুক্তি দাবী করেছে।
বাংলাদেশ সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হওয়ার জন্য চারজন জাপানী এমপি ভারত সফরে কলকাতা এসে পৌঁছেছেন। বাংলাদেশ শরণার্থী শিবির সমুহ পরিদর্শন করে তারা জাপান সরকারের কাছে তাদের রিপোর্ট পেশ করবেন। [যুগান্তর/কালান্তর ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১]
গুজরাট রাজ্য বাংলাদেশ সহায়ক সমিতি বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য ৫ লক্ষ বস্র প্রেরন করেছে। এর অর্ধেক এর মধ্যে কলকাতা এসে পৌঁছেছে।
মেঘালয় রাজ্য সরকার এক প্রেস নোটে বলেছে শরণার্থী দ্বারা মেঘালয়ের কোন উপজাতীয় নারী অপহৃত হয়নি। এ সংক্রান্ত প্রচার সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। গত ৬ সেপ্টেম্বর মইলাম বাজারে স্থানীয়দের সাথে শরণার্থীদের সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে এ মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হয়। সরকার বলেছে সেদিনের ঘটনার পর থেকে দুজনের কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনায় ১৮ শরণার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেঘালয়ের বালাট এলাকায় এক লাখ আশি হাজার শরণার্থী অবস্থান করছে এবং শুরু থেকেই স্থানীয়দের সাথে তাদের সম্পর্ক ভালো ছিল না। এদিকে মানা শরণার্থী শিবিরের পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ শান্ত। [যুগান্তর/কালান্তর ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১]

জাতিসংঘ মহাসচিব উ’থান্ট ভারত উপমহাদেশের অবস্থা নিয়ে সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন, রাজনৈতিক মীমাংসা ব্যতিত পূর্ব পাকিস্তানের মৌলিক সমস্যা সমাধান হবে না।
উ থান্ট আরও বলেন, বাংলাদেশের সংঘর্ষ পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার হলেও এর ফলে এমন সব সমস্যার উদ্ভব হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর জন্যও উদ্বেগের ব্যাপার। বিশ্বের সমস্যাগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ সমস্যার সমাধানে তিনি বিশ্ববাসীকে সক্রিয় হতে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ওই দেশের সরকার ও জনগণকে সব রকমের সাহায্য করা বিশ্ববাসীর কর্তব্য। জাতিসংঘের কাজকর্মের ওপর মহাসচিবের রিপোর্ট দিতে গিয়ে উ থান্ট এই কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার অনুরোধ সত্ত্বেও শরণার্থীরা দেশে ফিরে যাচ্ছেন না, সেটা তিনি লক্ষ করেছেন। [যুগান্তর ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১]
বাংলাদেশের শরণার্থীদের প্রতি অস্ট্রেলিয়ান সরকারের সাহায্য বৃদ্ধির দাবীতে দুই অস্ট্রেলিয়ান ৬-৭ দিন যাবত মেলবোর্নের কেন্দ্রীয় পোস্ট অফিস প্রাঙ্গনে অনশন পালন করছেন। এর আগে অনশন কারীরা পথচারীদের কাছ থেকে সাহায্য বাবদ দুই হাজার ডলার সংগ্রহ করেছেন। এদিকে ৪০০ অস্ট্রেলিয়ান বুদ্ধিজীবী বাংলাদেশ প্রশ্নে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনের দাবী জানিয়েছেন। [ইউএনআই /যুগান্তর/কালান্তর ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১]

Prepared by Salah Uddin