শিবির বহির্ভূত শরণার্থীদের অবিলম্বে রেশন কার্ড প্রয়ােজন | কেন্দ্রীয় পুনর্বাসন মন্ত্রীর কাছে ভূপেশ গুপ্তের তারবার্তা
(স্টাফ রিপাের্টার)
কলকাতা, ১৫ জুলাই ক্যাম্পের বাইরে অবস্থিত শরণার্থীরা রেশন কার্ড না পাওয়ার ফলে দারুণ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছেন। অবিলম্বে এদের রেশন কার্ড দেবার দাবিতে কমিউনিস্ট নেতা শ্রীভূপেশ গুপ্ত কেন্দ্রীয় পুনর্বাসন মন্ত্রী শ্রী আর, কে, খাদিলকরের কাছে আজ এক তারবার্তা পাঠিয়েছেন।
শ্রীগুপ্ত বলেছেন, সরকারী হিসাব অনুযায়ী এই রাজ্যে সতের লক্ষের বেশী শরণার্থী ক্যাম্পের বাইরে রয়েছেন। কমিউনিস্ট পার্টির রাজ্য পরিষদের সম্পাদক শ্রী গােপাল বন্দোপাধ্যায়ও প্রায় অনুরূপ মর্মে এক বিবৃতি দিয়েছেন।
মহাকরণে আজ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ত্রাণের অধিকর্তা শ্রীবি, বি, মণ্ডল বলেছেন, ক্যাম্পে থাকলেই রেশন কার্ড দেওয়া হবে বলে সরকারী নিয়ম রয়েছে।
রাজ্য সম্পাদকের বিবৃতি
“নদীয়া ও ২৪ পরগনা জেলায় নবাগত শরণার্থীদের অবিলম্বে রেশন কার্ড দিতে হবে।” আজ ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পরিষদের সম্পাদক শ্রী গােপার ব্যানাজী এক বিবৃতিতে সরকারের কাছে এই দাবি করেছেন।
প্রকাশ, ৬ জুলাই থেকে যথেষ্ট অফিসার নেই’ এই অজুহাতে রেশন কার্ড দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। নদীয়া জেলা থেকে প্রাপ্ত উদ্বেগজনক খবর জানিয়ে শ্রীব্যানার্জী তাঁর বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে ঐ জেলায় এ পর্যন্ত সাত লক্ষাধিক শরণার্থী এসেছেন। তার মধ্যে মাত্র সাড়ে তিন লক্ষ জনের রেশন ও আশ্রয় মিলেছে। আড়াই লক্ষের রেশন কার্ড আছে, কিন্তু আশ্রয় নেই। আরও লক্ষাধিক ব্যক্তির আশ্রয় বা রেশন কার্ড কোনটাই জোটে নি। ফলে ৬ জুলাই থেকে রেশন কার্ড দেওয়া বন্ধ করায় এরা অনাহারে খােলা আকাশের তলায় আছেন। এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁতেও একই অবস্থা। এ অসহনীয় অবস্থা চলতে থাকলে তার রাজনীতিক ও সামাজিক ফলাফল মারাত্মক হয়ে দাঁড়াবে এই সাবধান বাণী জানিয়ে তিনি দীর্ঘমেয়াদী “সুব্যবস্থার জন্য অপেক্ষা না করে অবিলম্বে শরণার্থীদের রেশন দেবার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
শরণার্থী শিবিরগুলিতে নিয়ােগ
বসিরহাটের অতিরিক্ত জেলা শাসক জানাচ্ছেন যে, বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন শিবিরে নিয়ােগ বর্তমানে বন্ধ থাকবে। এ সম্পর্কে খবরাখবর সংবাদপত্রের ডাকযােগে জানান হবে। রাজ্য সরকার আজ এক প্রেস নােটে একথা বলেছেন।
সূত্র: কালান্তর, ১৬.৭.১৯৭১