যুক্তরাষ্ট্র দেড় লাখ টন খাদ্যশস্য দিচ্ছে
ঢাকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশকে ১ লক্ষ টন গম ও ৫০ হাজার টন চাল দেবে। শুক্রবার এই মর্মে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। অত্যন্ত সহজ শর্তে এই চাল ও গম বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। চুক্তিতে মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড বােস্টার ও বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব আশরাফুজ্জামান। মার্কিন সরকারি কর্মকর্তাগণ আশা প্রকাশ করেন যে এই গম ও চাল দ্রুত ক্রয় এবং চালান দেয়া যাবে যাতে ১৯৭৪ সাল শেষ না হতেই এগুলাে বাংলাদেশে পৌঁছতে পারে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে গত ১ অক্টোবর হােয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ফোর্ড-এর সাথে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাক্ষাতের পর প্রকাশিত বিবৃতির সাথে সামঞ্জস্য রেখেই চুক্তি সম্পাদিত হয়। বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করা হয়েছিল যে, বাংলাদেশের চাহিদা পূরণের জন্য চলতি বছর প্রাথমিকভাবে দেড় লক্ষ টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ করার উদ্দেশ্যে পি এল-৪৮০ অনুযায়ী একটি চুক্তি শীঘ্রই সম্পাদন করা হবে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, অত্যন্ত সহজ শর্তে বাংলাদেশকে এই ঋণ প্রদান করা হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষরের ১০ বছর পরে বাৎসরিক এক কিস্তির ভিত্তিতে মােট ৩০টি কিস্তিতে এই মূল্য পরিশােধ করতে হবে। প্রথম ১০ বছরে সুদ হিসেবে শতকরা দুই ভাগ পরিশােধ করতে হবে। পরবর্তী বছরগুলােতে শতকরা ৩ ভাগ হারে সুদ পরিশােধ করতে হবে। মি. বােস্টার আরও বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানাের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরও অতিরিক্ত খাদ্যশস্য বরাদ্দ করবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট মি. জেরাল ফোর্ড এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার এর আগে ঘােষণা করেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী উভয় প্রকার ঋণ প্রদান করবে। মার্কিন দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন যে, চলতি বছরের শেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বাংলাদেশকে সরাসরি কিংবা আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে প্রদত্ত মােট সাহায্যের পরিমাণ দাঁড়াবে ৪শত কোটি টাকা। চলতি বছরের জুন মাসের শেষের এই সাহায্যের পরিমাণ ছিল ৩৫০ কোটি টাকা। খাদ্যশস্য রবরাহ ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আশুগঞ্জ সার কারখানা নির্মাণে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্ব ব্যাংক এবং আরও কয়েকটি বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশের এই তৃতীয় সার কারখানা স্থাপনে সাহায্য ও সহযােগিতার আশ্বাস দিয়েছে।১৩
রেফারেন্স:
৪ অক্টোবর ১৯৭৪, বাংলার বাণী
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত