শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
২১।বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সমর্থন দানের জন্য সারাবিশ্বের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাকামী জনগণের প্রতি আহ্বান। | ‘পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রণ্ট অব বাংলাদেশ’- প্রচার পত্র | এপ্রিল, ১৯৭১ |
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সমর্থন করুন
পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) এর সমাজতান্ত্রিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি “সারাবিশ্বের সকল গণতন্ত্র, শান্তি এবং স্বাধীনতাকামী শক্তি এবং একইসাথে সাম্যবাদীদের বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে তাদের সমর্থন প্রদানের জন্য আহ্বান জানিয়েছে”।
কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের বিবৃতির মাধ্যমে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’-এর আইনসিদ্ধভাবে গঠিত একমাত্র সরকার হিসেবে দেয়া ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে, কারণ এই সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত।
“আমাদের দল বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল এবং সাম্যবাদী সরকারকে বাংলাদেশের নব্য গঠিত সরকারকে স্বীকৃতি প্রদানের আহ্বান জানাচ্ছে এবং সেই সাথে ক্ষমতায় থাকা প্রতিক্রিয়াশীল ফ্যাসিবাদী পাকিস্তানি সামরিক জান্তার এই পাশবিক আগ্রাসনকে প্রতিহত করার জন্য সকল সম্ভাব্য সাহায্যের আকুতি জানাচ্ছে”।
“সকল নব্য গঠিত সরকারের প্রতি আমাদের আবেদন, তারা যেন সৈন্যদল, রাজনৈতিক দল এবং গণমাধ্যম সংস্থাগুলোকে একত্র করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে, যাতে করে আগ্রাসকদের বিরুদ্ধে একটি বিশদ এবং শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করা যায়”।
ইউনিয়নের আবেদন
পার্টিতে আরও বলা হয় যে, “আমরা বেলুচিস্তান, পাঠানল্যান্ড, সিন্ধু এবং পাঞ্জাবের জনগণ এবং গণতান্ত্রিক শক্তির কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং গণতন্ত্র ও অধিকার রক্ষার জন্য তাদের সংগ্রামকে অকুণ্ঠ সমর্থন যোগানোর আহ্বান জানাচ্ছি”।
কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্যানুযায়ী, ১৮ এপ্রিল বাংলাদেশের কোথাও তারা দেখা করেছে বলে জানা গেছে।
প্রধান ছয়টি সমিতির অধীনে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সেন্টার নতুন সরকারের সাহায্যের জন্য কর্মী এবং কৃষকদের একটি জোট গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।
ট্রেড ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে বলে, “আমরা বিশ্বের সকল ট্রেড ইউনিয়ন ও সংস্থাকে বাংলাদেশের সংগ্রামী জনগণ এবং সরকারকে সম্ভাব্য সকল সাহায্য করার জন্য আবেদন জানাই”।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন বাংলাদেশের আরেকটি জায়গা থেকে টেলিযোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বীকৃতির স্বার্থে পরামর্শ আহ্বান করেছে এবং ০১১ এ যোগাযোগ করে সম্ভাব্য সকল সাহায্য প্রেরণের আহ্বান জানিয়েছে।
ইয়াহিয়াকে থামাও
ভারতীয় কম্যুনিস্ট পার্টির জাতীয় সভায় বিশ্বের সরকারগুলোর কাছে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে ইয়াহিয়া খানের যুদ্ধ বন্ধ করানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
দলটি ভারতীয় সরকারের প্রতি বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি তাদেরকে অস্ত্র সরবরাহসহ সবধরণের সাহায্য প্রদানের জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
সভায় এক বিবৃতিতে বলা হয়, “ভারতীয় কম্যুনিস্ট পার্টি বিশ্বের সকল সরকারের প্রতি বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি সবধরণের সাহায্য প্রদানে জন্য আহ্বান জানিয়েছে”।
১৫ মে-কে বাংলাদেশ দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং দলটি বাংলাদেশের জন্য র্যালি ও অর্থসংগ্রহের ব্যবস্থা করেছে।
-মর্নিং স্টার নিউজ সার্ভিস।
________________________________________________________________________________
বাংলাদেশ পিপল’স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট কর্তৃক প্রকাশিত
<৪,২২,৩৯>
অনুবাদকঃ দিব্য কান্তি দত্ত
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
২২। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সমর্থনে এগিয়ে আসার জন্য বৃটিশ জনগণের প্রতি আহ্বান | ‘বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন স্কটল্যান্ড’- এর প্রচারপত্র | এপ্রিল, ১৯৭১ |
লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্ম এবং মৃত্যু– সবার জন্যই সমস্যা
পাকিস্তানের অখন্ডতার নামে:
- বাংলাদেশ (প্রাক্তন পূর্ব পাকিস্তান) এর জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে।
- বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি জনতার প্রতিনিধি ‘আওয়ামী লীগ’-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দলের নেতাকে দেশের শত্রু ঘোষণা করা হয়েছে।
- বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং শিক্ষকদেরকে মেরে ফেলা হয়েছে, ছাত্রাবাসগুলোতে গোলাবর্ষণ করা হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে মারা হয়েছে।
- হাসপাতাল, মন্দির এবং গির্জায় আগুন লাগানো হয়েছে।
- পাদুয়ার ফাদার মারিও ভেরোনিজের মত পাদ্রীকে গুলি করে মারা হয়েছে।
- বিএমএস মিশন স্টেশন ভয়ানক এক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে:
বিএমএস এর ধর্মপ্রচারক আলফ্রেড লুইস বলেন, “যখন ‘রেডিও পাকিস্তান’ প্রচার করছিল যে, পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে এগোচ্ছে, তখনও আমাদের মাথার ওপর দিয়ে বুলেট উড়ে যেত। শিক্ষক এবং কর্মচারীদের তিনটি মিশন হাউজ নিয়ে গড়ে ওঠা আমাদের কমপ্লেক্স তখন যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল”।
(ব্যাপ্টিস্ট টাইমস, ২৯ এপ্রিল, ১৯৭১)
- পশ্চিম পাকিস্তানি সৈন্যরা লক্ষ লক্ষ বাঙালিকে হত্যা করেছে এবং প্রায় ৩,০০০,০০০ মানুষকে ভারতে আশ্রয় নিতে হয়েছে।
- পশ্চিম পাকিস্তানি সরকার দেশটিকে দুর্ভিক্ষে নিমজ্জিত করতে চাইছে।
পাশবিকতা আড়াল করার জন্য:
- আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদেরকে বিতাড়িত করা হয়।
- আন্তর্জাতিক রেডক্রস-কে বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি।
- বহির্বিশ্বের কাছে গণহত্যার সাফাই গাইতে এবং মূল ঘটনাকে আড়াল করতে পাকিস্তান সরকার আষাঢ়ে গল্পসমূহকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের ফন্দি আঁটল।
! ! ! !
প্রত্যক্ষদর্শীরা চুপ থাকবেননা
আওয়াজ তুলুন:
- যতক্ষণ পর্যন্ত শাসকেরা বাংলাদেশ (পূর্ব বাংলা) থেকে তাদের সৈন্যদল অপসারণ না করবেন ততক্ষণ পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তানে সব ধরণের সাহায্য দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
- বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষ-কবলিত এলাকাগুলোতে আন্তর্জাতিক ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা নিন।
শীর্ষ পত্রপত্রিকায় নিবন্ধ এবং চিঠি লিখুন
- আপনার আন্তরিক সমর্থন প্রকাশ করুন এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে লাখো মানুষকে বাঁচাতে আপনাদের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করুন।
__________________________________________________________________________
বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন স্কটল্যান্ড
১৫ এলডন, সেইন্ট গ্লাসগো সি ৩। টেলিফোন: ০৪১-৩৩৯-৬৫৭৯
<৪,২৩,৪১>
অনুবাদকঃ দিব্য কান্তি দত্ত
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
২৩। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন | ‘বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন স্কটল্যান্ড’ এর প্রচারপত্র | এপ্রিল, ১৯৭১ |
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সমর্থন করুন
পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক বাংলাদেশকে শোষণের ২৪ বছর
বাংলাদেশ পশ্চিম পাকিস্তান
জনসংখ্যা ৭.৫ কোটি ৫.৫ কোটি
মাথাপিছু আয় ১৫ ইউরো ৪৫ ইউরো
বৈদেশিক রপ্তানি আয় ৬০% ৪০%
বাজেট বরাদ্দ ৩০% ৭০%
চাকুরীক্ষেত্র ২০% ৮০%
পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১০% ৯০%
বৈদেশিক সাহায্য বণ্টন ২০% ৮০%
__________________________________________________________
! ! ! ! ! ! ! ! ! !
বাংলাদেশ জাতীয় রাজধানী, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর সদর দফতর, কেন্দ্রীয় সরকারী অফিস, ব্যাংক এবং ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির প্রধান কার্যালয়- পশ্চিম পাকিস্তানে যা ভারতের প্রায় ১,০০০ কিলোমিটার অঞ্চল দ্বারা বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন।
ডিসেম্বর ১৯৭০: প্রথম সাধারণ নির্বাচন জ়াতীয় সংসদ আসন
আওয়ামী লীগ দল (শেখ মুজিব) ১৬৭
পাকিস্তান পিপল’স পার্টি (ভূট্টো) ৮১
অন্যান্য দল ৬৫
______
মোট ৩১৩
২ মার্চ, ১৯৭১: পশ্চিম পাকিস্তানি নেতাদের সাথে আঁতাত করে পাকিস্তানি রাষ্ট্রপতি জেনারেল ইয়াহিয়া খান জাতীয় সংসদের অধিবেশন বাতিল করে দেন।
১৫–২৪ মার্চ, ১৯৭১: মুজিবের সাথে ইয়াহিয়া এবং ভূট্টোর রাজনৈতিক আলোচনা চলাকালীন স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবি দমন করার জন্য পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সৈন্য বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
২৫ মার্চ, ১৯৭১: বর্বর পশ্চিম পাকিস্তানি সৈন্যরা:
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসগুলোতে মধ্যরাতে ঘুমন্ত অবস্থায় শিক্ষার্থীদের ওপরে গোলাবর্ষণ করে। হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে মেরে ফেলে।
- পত্রিকা অফিস এবং হাসপাতালগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
- নিরস্ত্র জনগণের বিরুদ্ধে ট্যাঙ্ক এবং মেশিনগান ব্যবহার করে এবং রাজধানীর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো ধ্বংস করে দেয়।
- সেইরাতে ঢাকায় ৭,০০০ মানুষকে হত্যা করে।
২৬ মার্চ, ১৯৭১:
- সাড়ে সাত কোটি জনতার প্রতিনিধিত্ব করা ‘আওয়ামী লীগ’-কে নিষিদ্ধ করা হয়। এই দলের প্রধান এবং ‘নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী’-কে ইয়াহিয়া খান এক মাস আগে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে প্রচার করে।
- ইতিহাসে প্রথমবারের মত অধিকাংশ প্রদেশ স্বাধীনতা ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।
- পাশবিকতাকে আড়াল করার জন্য পশ্চিম পাকিস্তান সরকার আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের বিতাড়িত করে।
- বুদ্ধিজীবি এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদেরকে (কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই কমপক্ষে ৫০ জন শিক্ষককে তাঁদের পরিবারের সামনে হত্যা করা হয়) হত্যা করা হচ্ছে প্রায় সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে দাবিয়ে রাখার জন্য।
২৭ মার্চ, ১৯৭১:
- ‘আন্তর্জাতিক রেডক্রস’-কে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি।
- পশ্চিম পাকিস্তানি সৈন্যরা বোমাবাজি, গোলাবর্ষণ এবং বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি সুকৌশলে নিষ্পাপ জনগণকে হত্যা করার কাজ অব্যাহত রাখল।
- পাকিস্তান সরকার দেশটিকে দুর্ভিক্ষে নিমজ্জিত করতে চাইছে।
“পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আনুমানিক ত্রিশ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছিল।”
বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন স্কটল্যান্ড
১৫ এলডন, সেইন্ট গ্লাসগো সি ৩। টেলিফোন: ০৪১-৩৩৯-৬৫৭৯
<৪,২৪,৪৩>
অনুবাদকঃ মুশররাত আলম মৌ
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
২৪। বাংলাদেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা বন্ধ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি সমর্থন দানের জন্য বিশ্বের রাষ্ট্র প্রধানদের প্রতি লন্ডনস্থিত বাংলাদেশ এ্যাকশন কমিটির আবেদন | বাংলাদেশ এ্যাকশন কমিটির চিঠি | এপ্রিল, ১৯৭১ |
বিশ্বের সকল রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতি:
জনাব,
ঢাকা এবং সর্বোপরি বাংলাদেশে যে গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে তা এত সবার এতটাই জানা যে নতুন করে আর কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ছাত্রদের অগ্নিদগ্ধ লাশ, আবদ্ধ আবাসিক এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞ, নিরস্ত্র ব্যক্তিদেরকে গুলি বর্ষণ করে হত্যা, এসবই হল পুর্বপরিকল্পিত হত্যার প্রমাণ যা গণহত্যারই সমতুল্য।
মেশিনগান, ট্যাংক, বেয়োনেট, অস্ত্রশস্ত্র, বিমান এবং পশিম পাকিস্তানি সৈন্যদের মধ্যে তীব্রভাবে সৃষ্ট জাতিবিদ্বেষ ব্যবহার করা হচ্ছে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের ইচ্ছাকে দমিয়ে রাখার জন্য, যে ইচ্ছা স্বতস্ফুর্ত ভাবে ব্যক্ত হয়েছিল ১৯৭০ সালে, প্রথম সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে। ইয়াহিয়া খানের ১১ দিনের আলোচনার সময় নেয়া আজ প্রমাণিত হয়েছে সময় ক্ষেপণ ও আকস্মিক আক্রমণের প্রস্তুতির ষড়যন্ত্র রূপে। আলোচনা সেই সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত চলেছিল। দেড়টার মধ্যে পুরো শহরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিল। এই আক্রমণের প্রকৃতি, উদ্দেশ্য এবং ব্যাপকতা গণহত্যার রীতিনীতি প্রয়োগকে প্ররোচিত করে (অনুচ্ছেদ ১-৪)।
লাহোর প্রস্তাব (১৯৪০) এর উপর ভিত্তি করে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল, যেটি যুক্তরাষ্ট্রীয় এককসমুহের স্বাধীন ও সার্বভৌম মর্যাদা নিশ্চিত করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকল্পনাকে পরিত্যাগ করে একটি অবিচ্ছিন্ন কাঠামো গঠন করা হয়েছিল। পাকিস্তান গঠনের চিন্তা তাই আজ অতিক্রান্ত।
পাকিস্তানের জনসংখ্যার ৫৫ শতাংশ বাঙালিরা শেখ মুজিবুর রহমানের কর্তব্যরত সরকারের প্রতি প্রকাশ্যে শতভাগ সমর্থন দানের মাধ্যমে অনুমোদন স্বীকার করে নিয়েছিল, যখন ২ মে মুজিবুর রহমান জাতীয় পরিষদে পুর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাবি করেছিলেন। সদস্যরা ঘোষিত ইতিবাচক আদেশপত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এটি মুজিবুর রহমানের কর্তব্যরত সরকারের বিধিসম্মত ভিত্তি প্রদান করে। মার্চের ২৫ তারিখে স্বাধীনতার ঘোষণা পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে হানাদার বাহিনীতে পরিণত করে।
জীবন ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ পেয়েও মুক্তিবাহিনী বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। চারটি সেনানিবাস এলাকাতেই লড়াই চলছে। বাংলাদেশের জনগণ এই অটল অক্ষয় সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে হানাদার বাহিনীর শেষ সদস্যটিও বেঁচে থাকা পর্যন্ত।
আমরা সকল সরকারের কাছে আবেদন করছি যেন অবিলম্বে জাতিসংঘের বেসামরিক ও রাজনৈতিক অধিকার ১৯৬৬ এর নিয়মপত্রের অনুচ্ছেদ ১(১) অনুযায়ী গণপ্রজাতন্রী বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া হয়।
আমরা সকল অস্ত্র সরবরাহকারী দেশের কাছে আবেদন জানাই যেন স্বাধীন বাংলাদেশের নিরস্ত্র নিরাপরাধ বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে তাদের অস্ত্রশস্ত্রের ব্যবহারের উপর অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে উপায়ে তাদের নৈতিক দায়িত্ব পালন করা হয়।
আমরা সকল মানুষের কাছে আবেদন জানাই তাদের সমর্থনকে আরও শক্তিশালী করার জন্য এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য এবং নিয়মানুগভাবে বাঙালি জাতির বিনাশে সমাপ্তি টানার জন্য।
যুক্তরাজ্যে গণপ্রজাতন্রী বাংলাদেশের পক্ষে বাংলাদেশ এ্যাকশন কমিটি, লন্ডন
৫৮ বেরউইক ষ্ট্রীট, ডব্লিউ ১।
টেলিফোনঃ ৪৩৭৭১১১
<৪,২৫,৪৫>
অনুবাদকঃ মুশাররাত আলম মৌ
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
২৫। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সমর্থনদান এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও অত্যাচার বন্ধের জন্য প্রভাব খাটানোর আবেদন জানিয়ে গণচীনের চেয়ারম্যানের প্রতি লন্ডনস্থ বাংলাদেশ এ্যাকশন কমিটির চিঠি | বাংলাদেশ এ্যাকশন কমিটির চিঠি | এপ্রিল, ১৯৭১ |
৫৮ বেরুইক স্ট্রিট লন্ডন ডব্লিউ টি টেলিফোনঃ ৪৩৭ ৭১১১
চেয়ারম্যান
গণপ্রজাতন্ত্রী চিন
চার্জ দ্য’অ্যাফেয়ার এর মাধ্যমে
৪৯ পোর্টল্যান্ড প্লেস, লন্ডন ডব্লিউ ১
মাননীয়,
সাড়ে সাত কোটি বাঙালি তাদের আত্মমর্যাদার অধিকার চর্চার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ এক সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছে।
আপনি হয়ত জেনে থাকবেন যে, এই গণহত্যা বাঙালিদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর পুর্বপরিকল্পিত সুচতুর এক ধ্বংসযজ্ঞ। আপনি জানেন যে, বাংলাদেশ তার জন্মলগ্ন থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানের পুঁজিবাদী চক্র কর্তৃক অর্থনৈতিক শোষণের শিকার হয়ে আসছে। বাংলাদেশ সম্পর্কিত অর্থনৈতিক নীতির ক্ষেত্রে পাকিস্তান সাম্রাজ্যবাদী উপাদানের প্রকাশ ঘটিয়েছে। গত বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে পৃথিবীতে সাম্রাজ্যবাদ নতুন ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে অন্তর্বর্তী-গৌণ সহকর্মীদের আমন্ত্রনের মাধ্যমে, যাতে এটি শোষণের নতুন নতুন পন্থা সৃষ্টি করতে পারে। একটি সুচিন্তিত নীতি হিসেবে, সাম্রাজ্যবাদী বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী পুঁজির একটি সঙ্গতিপুর্ণ অংশ এসমস্ত গৌণ সহকর্মীদের কাছে রপ্তানি করে শুধুমাত্র তাদের পরিচিত সাম্রাজ্যবাদী খেলার ছদ্মবেশে আমন্ত্রণের মাধ্যমে পুনঃরপ্তানিকৃত হতে পারে। একই নীতির অংশ হিসেবে সাম্রাজ্যবাদী বিশ্ব এদের বাংলাদেশের প্রতি বরাদ্দকৃত পুঁজি শোষণের পরিবর্তে পশ্চিম পাকিস্তানি পুঁজিবাদীদের অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব পুঁজিবাদী কাঠামোর অভ্যন্তরে অন্তর্বর্তী সত্ত্বা হিসেবে কাজ করার এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রশিক্ষণের পুর্বে পুঁজিবাদী ভূমিকা হস্তগত করার।
যদিও বাংলাদেশের বর্তমান সংগ্রাম ভোটবাক্স আন্দোলন হিসেবে শুরু হয়েছিল, বর্তমানে যেটি জনগণের যুদ্ধে পরিণত হয়েছে। মুক্তির সংগ্রাম ইতোমধ্যে গ্রামের দিকগুলোতেও শুরু হয়ে গিয়েছে এবং প্রথম শ্রেণীর গেরিলা কলাকৌশল অবলম্বনের চিহ্ন প্রদর্শন করছে।
বিশ্বব্যাপী চায়নার জনগণ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সংহতি প্রদর্শন করেছে। আপনারা ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বাস্ক জাতীয়তাবাদী সংগ্রামকে সমর্থন দিয়েছেন। কোরিয়ান যুদ্ধ, ভিয়েতনাম যুদ্ধে আপনাদের ভূমিকা এবং ঐতিহাসিক আত্মত্যাগ আজ ও আগামীর মুক্তিযোদ্ধাদের হৃদয়ে সদা জাগ্রত থাকবে।
আমরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করার আবেদন জানাই। আমরা আপনাদের নিকট আবেদন জানাই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য, যাতে অবিলম্বে এই গণহত্যার সমাপ্তি ঘটে, যেটি এখনও পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তানি পুঁজিবাদী গোষ্ঠীর ভাড়াটে সৈন্যরা চালিয়ে যাচ্ছে।
যুক্তরাজ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পক্ষে এ্যাকশন কমিটি, লন্ডন।
<৪,২৬,৪৬>
অনুবাদকঃ শিপ্রা কর্মকার
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
২৬। গৃহযুদ্ধ বা আভ্যন্তরীণ গোলযোগ নয়, বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছেন – বিরোধী প্রচারণার জবাবে বাংলাদেশ এ্যাকশন কমিটি | বাংলাদেশ এ্যাকশন কমিটির প্রচারপত্র | এপ্রিল, ১৯৭১ |
বাংলাদেশ: গৃহযুদ্ধ— অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব?
২৫শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনা করা হয়। ঐ দিন কোন সংবিধান ছিল না। তাই, সাংবিধানিক বিধান লঙ্ঘন করার প্রশ্নই উঠে না।
নিজস্ব সংবিধানের অভাবে, ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের সময়, পাকিস্তান সৃষ্টির জন্য গৃহীত আইনগত ভিত্তি নিয়ে পাকিস্তান সম্পূর্নভাবে ফিরে আসে! এই প্রস্তাব চুক্তি, “সার্বভৌম ও স্বাধীন” বাংলাদেশের জন্য এক অন্যতম উপাদান।
জাতীয় সমাবেশের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান ২ মার্চ অসহযোগ আান্দোলন শুরু করেন। সেদিন থেকেই স্বাধীনতার ঘোষণার আগ পর্যন্ত ইয়াহিয়ার সামরিক আইন জারি থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র তার আদেশপত্রই জনগণের শতভাগ প্রতিক্রিয়াসহকারে বলবৎ ছিল। এই আদেশপত্রে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, মুদ্রা ও ডাকসংক্রান্ত বিধানসমূহ অন্তর্ভূক্ত ছিল। ইয়াহিয়া সরকার, অন্য কোন সামরিক সরকারের মতই কার্যত বিধানের জন্য স্বীকৃতিলাভ করে। এই কার্যত বিধানের মূল ভিত্তি বাংলাদেশ বিষয়ে ২ মার্চ ইয়াহিয়া সরকারের পক্ষে স্থগিত করা হয় স্বাধীনতা ঘোষণার আগ পর্যন্ত মুজিবুর রহমানের কার্যকর নীতির সূচনা ও চালু রাখার সুবিধার্থে। এই ঘোষনা ১) শেখ মুজিবের কার্যত বিধানের ক্ষমতার ওপর নিয়ম জারি করে, ২) এটি পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে বিদেশি হানাদার বাহিনীতে পরিণত করে। যে সময়ের কথাই বলা হয়ে থাকুক না কেন, একবার বাংলাদেশ আইনগতভাবে স্বাধীন হয়ে যাওয়া মাত্রই পরবর্তী কার্যত বিধানের তথাকথিত কার্যকর কোন নিয়ন্ত্রণই ইয়াহিয়াকে অনুমোদন দেবে না। ইয়াহিয়া সরকার এই প্রশ্নাতীত তর্কের ক্ষমতার বিষয়ে সচেতন এবং স্বাধীনতা ঘোষণার আধ ঘন্টা আগেই তিনি গ্রেফতার হয়েছেন বলে গুজব ছড়ান।
রিপোর্টে বলা আছে যে, বাংলাদেশে ইয়াহিয়া খানের ১ লক্ষ শক্তিশালী সৈন্যর মধ্যে একজনও বাঙালি নয়। পাকিস্তানের জনসংখ্যার ৫৬% বাঙালি। বাংলাদেশের সামরিক কর্মকর্তারা হয় কেউ গ্রেফতার নয় কেউ মুক্তিবাহিনীতে যোগদান করেছে। সুতরাং বাংলাদেশে ইয়াহিয়ার সেনাবাহিনী কোন যুক্তরাষ্ট্রীয় সেনা নয়, যার ফলে তার বিধানও যুক্তরাষ্ট্রীয় নয়।
গৃহযুদ্ধ শব্দটির অর্থ হল একই দেশে একই জাতীয়তার দু’ট প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষের মধ্যে উদ্দ্যেশ্যপ্রণোদিত দ্বন্দ্ব। যেহেতু বাঙ্গালী একটি স্বতন্ত্র জাতি এবং ইয়াহিয়ার পক্ষে তাদের সশস্ত্র অংশগ্রহণ নেই, সেহেতু বাংলাদেশের ঘটনাটিকে গৃহযুদ্ধ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা বা উদাহরণ হিসেবে দেখানো যায় না।
মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণা মানতেই হবে।
২১(৩) ধারায় বর্ণিত, “মানুষের ইচ্ছাই সরকারের ক্ষমতার ভিত্তি হবে; এটি সাময়িক এবং প্রকৃত নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকাশ পাবে। বাংলাদেশের মানুষের এই ইচ্ছা সর্বসম্মতভাবে ডিসেম্বরের নির্বাচনে প্রকাশ পায় এবং মার্চের ২ থেকে ২৫ তারিখ সময়ে পূনঃনির্ধারিত হয়। বাংলাদেশে গনহত্যার গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল গণতন্ত্র।
বাংলাদেশের এই ঘটনাগুলো কোন গৃহযুদ্ধ বা অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নয়। এটা চরিতার্থ করতে হয় এবং মাও সে তুং এর এই নীতিবাক্য অারও তাজা ও অধিকতর সাক্ষ্যযোগ করতে হয় যে রাজনৈতিক ক্ষমতা বন্ধুকের নালী দিয়ে বের হয়। সেভাবে বলতে গেলে সত্য অস্বীকার করে মাও সে তুং এর বাণীকে আরও নতুন করে উপস্থাপন করে বলতে হয় যে, বন্দুকের নলই সকল ক্ষমতার উৎস।
<৪,২৭,৪৮>
অনুবাদকঃ কাজী সাদিকা নূর
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
২৭। পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক সাহায্যের বিরুদ্ধে অ্যাকশন কমিটির বক্তব্য | বাংলাদেশ অ্যাকশন কমিটির প্রচারপত্র | এপ্রিল, ১৯৭১ |
অর্থনৈতিক সাহায্য না বুলেট?
বাংলাদেশে নতুন মাত্রার গণহত্যার ভয়ংকর সব গল্পের বর্ণনা দিয়ে শতশত চিঠির পাহাড় জমছে প্রতিদিন। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলগুলোকে মূল লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে এবং বোমাবর্ষণ চলছে। গ্রামবাসীদেরকে সাধারণত সারবদ্ধ করে দাঁড় করিয়ে গুলি করা হয়। পশ্চিম পাকিস্তানি সেনারা ঘরে ঘরে তল্লাসি চালাচ্ছে এবং ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী ছেলেদেরকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। ছেলেগুলো আর ঘরে ফেরে না। সেনাদের কাছে এদেরকে হেফাজতে রাখার মত খাবার কিংবা থাকার ব্যবস্থা – কিছুই থাকে না। তারা বরং এরচেয়ে সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করেছে: হত্যা।
নদীর পাড়ের প্রত্যন্ত জেলার মানুষদেরকে হত্যা করার জন্য সেনারা মেশিনগানসহ ৪০০টি স্পিডবোট ব্যবহার করছে। ত্রাণকার্যের জন্য এসব স্পিডবোটগুলোকে বিদেশি রাষ্ট্র ভাড়া করেছিল। ইয়াহিয়ার লোকেরা সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াচ্ছে আরও কিছু বোট সংগ্রহের জন্য।
পশ্চিম পাকিস্তানের কোষাগারে ২৫ শে মার্চ ৯৩ মিলিয়ন পাউন্ড ছিল। আজ তার কিছুই অবশিষ্ট নেই। এই পুরো অর্থ খরচ হয়েছে গণহত্যার কাজে, যা অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য খরচ করার কথা ছিল। বাংলাদেশে ইয়াহিয়ার সেনাদের প্রতিদিনের খরচ ১০ লাখ টাকা।
ইয়াহিয়ার প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা স্যার এলেকের সাথে দেখা করেন এবং আরও অর্থনৈতিক সহায়তা চান। এই সহায়তা খুব সম্ভবত সামরিক কাজেই ব্যয় করা হবে। এবং এরপর আবারো এই সহায়তা যা অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য বরাদ্দ থাকার কথা তা সামরিক কাজে ব্যয় করে পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনীতিকে সক্ষম করে তুলবে।
এই সহায়তা আসছে আপনার টাকা থেকে, আপনারা যারা নিয়মিত কর প্রদান করছেন। আপনারা কি চান আপনাদের টাকা বুলেটে পরিণত হয়ে নিরাপরাধ এবং নিরস্ত্র মানুষদের হত্যার কাজে ব্যয় হোক? আপনারা কি চান এই গণহত্যার অংশীদার হতে?
জেগে উঠুন আমাদের পক্ষে কথা বলুন এমপি
<৪,২৮,৪৯-৫০>
অনুবাদকঃ সৈয়দা ইসরাত জাহান কনক
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
২৮। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি ও সমর্থনের জন্য বাংলাদেশ অ্যাকশন কমিটির আবেদন | অ্যাকশন কমিটির দলিলপত্র | এপ্রিল, ১৯৭১ |
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি ও সমর্থন দিন
আমরা বাংলাদেশের জনগণ, যারা যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছি, জনগণ এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে, বিশ্বব্যাপী সরকার এবং জনগণের কাছে আবেদন করছি যেন তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি ও সমর্থন দেয়া হয়।
আমরা শুধুমাত্র মুক্তি ও স্বাধীনতার জন্যই নয় বরং আমাদের অস্তিত্বের জন্যও যুদ্ধ করছি এবং আমাদের স্বাধীনতার লড়াইয়ে আপনাদের সাহায্য কামনা করছি।
২৩ বছর আগে যখন পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়, উভয় প্রদেশে স্বায়ত্বশাসন বজায় রাখা পূর্বক, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণ লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে একটি সঙ্ঘ গড়ে তোলে।
বিশ্বাস ও ভ্রাতৃতবোধের চেতনায় পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ‘পাকিস্তানের জন্য যুদ্ধ’ করেছিল, কিন্তু বিনিময়ে তারা চরম বিস্ময়ে পেয়েছে কেবল অমানবিক নির্যাতন আর লাগামহীন শোষণ। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের মুনাফা এবং সম্পদের যোগান দিতে গিয়ে ২৩ বছর ধরে আমরা দারিদ্রের সাথে লড়াই করে যাচ্ছি।
বিগত ১২ বছর ধরে সেনাবাহিনী এবং তাদের সমর্থকগণ আমাদের জোর করে দমিয়ে রেখেছে, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে এবং আমাদের নেতাদেরকে জেলে আটকে রেখেছে।
গতবছর পাকিস্তানের প্রথম সাধারন প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ প্রথমবারের ভোটে অংশ নিয়েছিলো, যার মাঝে ৯৮% ভোট ছিল মুক্তির পক্ষে, পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের হাত থেকে মুক্তির। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদের ৭০% আসনে জয়লাভ করেছিল!!
গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাত করার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গণতান্ত্রিক সকল নীতি বিসর্জন দিয়ে বাংলাদেশের উপর সশস্ত্র আক্রমণ চালায়। তাদের আধুনিক এবং উৎকৃষ্ট যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তারা হত্যা করে আমাদের শিক্ষক-ছাত্র-ডাক্তার-আইনজীবী এবং ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতাদের। ট্যাংক-কামান-মেশিন গান ব্যবহার করে তারা হত্যা করে হাজার হাজার নিরাপরাধ ও নিরস্ত্র নারী, পুরুষ ও শিশুদেরকে।
রক্তই যদি হয় স্বাধীনতার মূল্য তবে বাংলাদেশের আত্মত্যাগ বর্ণনাতীত!!!
যদি কোন মানুষ কিংবা সরকার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে থাকে, তাহলে মুক্তিকামী, লড়াকু বাংলাদেশিদের সাথে সংহতি প্রকাশের এটাই সুযোগ!!
যদি সত্যিকার অর্থেই জাতিসংঘ মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতার পক্ষে থাকে, তাহলে “সকল মানুষের আত্মমর্যাদা অধিকার” চুক্তিটি বাস্তবায়িত করার এটাই সময়।
বিশ্বের সকল মানুষের কাছে, আমরা আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলছি যে, শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত কিংবা সকল বিদেশি হানাদারদেরকে বিতাড়নের আগ পর্যন্ত আমাদের জনগণ লড়াই করে যাবে।
১৯৪০ সালের পূর্বে যুক্তরাজ্য যখন অন্ধকার যুগ পার করছিল, আমরা আপনাদের পাশে থাকতে কার্পণ্য বোধ করিনি- এখন আমাদেরকে ফিরিয়ে দেবেন না!!
কন্ঠে ঝংকার তুলন, যাতে বাংলাদেশের মানুষ বুঝতে পারে যে, তারা অসহায় কিংবা একলা নয়!!!
বাংলাদেশ এ্যাকশন কমিটি
৫২, ওয়ার্ডসওরথ রোড,
স্মল হিথ,
বিরমিংহাম ১০
০২১-৭৭৩১৪৫৬
<৪,২৯,৫১>
অনুবাদকঃ সমীরন কুমার বর্মন
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
২৯। স্বাধীনতা সংগ্রামে এগিয়ে আসার আহ্বান সম্বলিত প্রচারপত্র | বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন,
ল্যাংকাশায়ারের দলিলপত্র |
এপ্রিল*, ১৯৭১ |
বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন (ল্যাংকাশায়ার ও পার্শ্ববর্তী এলাকা)
প্রধান উপদেষ্টাঃ মিঃ নজির উদ্দিন। টেলিফোনঃ
সভাপতিঃ মিঃ এ মতিন। ০১৬ ২৭৩ ৬৭৯৪
বাংলার সন্তান,
আমদের গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে কৌশলে বানচাল করে পশ্চিম পাকিস্তানি সাম্রাজ্যবাদী ইয়াহিয়া সরকার আজ বাংলাদেশের অস্তিত্বকে পৃথিবীর বুক থেকে বিলীন করে দেবার জন্য অমানুষিক রক্তক্ষয়ী নির্যাতন ও নিষ্ঠুর আঘাত করে বাংলার মাটিকে রক্তাক্ত করে তুলেছে। ঘৃণ্য পৈশাচিক শক্তির মহড়া দেখিয়ে ইয়াহিয়া বাহিনী নির্দয়ভাবে বাংলার নিরস্ত্র নিরীহ নরনারীদের হত্যা করে চলেছে। বাংলাদেশের আওয়াজকে চিরদিনের মত স্তব্ধ করে দেবার জন্য এই হিংস্র সাম্রাজ্যবাদী বাহিনী দেশের সমস্ত রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, ছাত্র-শিক্ষক বুদ্ধিজীবী সকলকে একাধারে নির্দয়ভাবে হত্যা করেছে।
আজি মহা পরীক্ষা জাতির। পবিত্র জন্মভূমিকে রক্ষা করার জন্য বাংলার নির্ভীক সন্তানরা আজ মহাশত্রুর সাথে সংগ্রামে লিপ্ত। বাংলার সন্তান যে যেখানে আছেন মায়ের বুকের এই রক্তের ধারা প্রতিটি বঙ্গসন্তানকে আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করেছে। সর্ব সামর্থ্য দিয়ে আজ প্রমাণ করতে হবে – বাংলাদেশ আমি তোমার সন্তান। শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে আমি তোমার স্বাধীনতা, তোমার মর্যাদা রক্ষা করব।
বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যের জন্য ও দুর্গত জনসাধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সর্বপ্রকার সাহায্য দানের জন্য, আন্তর্জাতিক বিশ্বের রাজনৈতিক দরবারে বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবিকে জোরদার করে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে যুক্তরাজ্যের সর্বত্র বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন গঠিত হয়েছে। আজ দেশের মা-বোনদের স্মরণ করে মিলিতভাবে এগিয়ে আসুন। আপনার সর্বশক্তি দিয়ে রক্ষা করুন পবিত্র বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
‘কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান, হাঁকিছে ভবিষ্যৎ
এ তুফান ভারী দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পাড়’।
-কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন, ল্যাংকাশায়ার কর্তৃক পরিচালিত। সর্ব প্রকার অনুসন্ধানের জন্য যোগাযোগ করুনঃ মনজিল রেস্টুরেন্ট, স্টকপোট রোড, ম্যানচেস্টার।
<৪,৩০,৫২>
অনুবাদকঃ উম্মে তৈয়বা নিশাত
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
৩০। বাংলাদেশ এখন সহস্র মাইলাই-এর অবস্থায়: স্বাধীনতা সংগ্রামকে সমর্থনের আবেদন | লন্ডন এ্যাকশন কমিটির প্রচারপত্র | এপ্রিল, ১৯৭১ |
বাংলাদেশ – সহস্র মাই-লাই এর দেশ
দক্ষিণ ভিয়েতনামের এক মাই-লাই সারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।
“কিন্তু বাংলাদেশে প্রতিদিনই মাই-লাই ঘটছে”, রয়টার পত্রিকায় একজন ব্রিটিশ এমপির পর্যবেক্ষণ।
নারী-পুরুষদেরকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে তাদের মেশিন গান চালানো হচ্ছে। ছোট শিশুদেরকেও বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে, যাতে অনাথ শিশুগুলো পাকিস্তান বিদ্বেষ নিয়ে বেড়ে না উঠতে পারে। দিনের পর দিন শহর আর গ্রামগুলোকে ধূলোয় মিশিয়ে দেয়া হচ্ছে।
বন্ধুরা, আমরা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করি আপনারা যেভাবে সাইক্লোন আক্রান্ত বাংলাদেশিদের জন্য বিশ্ববাসীর কাছ থেকে সাহায্য সংগ্রহ করেছেন, যখন বাংলাদেশের অর্জিত বৈদেশিক আয়ে সমৃদ্ধ পাকিস্তান সরকার ছিল সহানুভূতিহীন ও দ্বিধাপূর্ণ।
আপনারা কি আরেকটিবার প্রমাণ করে দিতে পারেন না যে হাজারো প্রাণের ক্ষয় আর লাখো মানুষের দুর্দশায় আপনারা চুপ করে থাকতে পারেন না?
যত বড় শক্তিই হোক না কেন, তা বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জাতিকে চিরদিন দমিয়ে রাখতে পারবেনা।
কিন্তু মানবতা, ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের জন্য আপনাদের ভালবাসা রুখে দিতে পারে এই বর্তমান ভয়ংকর হত্যাকাণ্ড এবং মানুষের অসহনীয় দূর্ভোগ। তাই নতুন এই পাকিস্তানি হিটলারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠুন আপনাদের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর নিয়ে।
অত্যাচারী ও বর্ণবাদী পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামরিকভাবে বর্জন করার জন্য আপনাদের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করুন।
জানতে চান বিদেশি সাংবাদিকদের এবং এমনকি রেডক্রসের দলগুলোকে কেন বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবেনা।
আপনাদের সরকারকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের আহ্বান জানান।
<৪,৩১,৫৩>
অনুবাদকঃ উম্মে তৈয়বা নিশাত
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
৩১। ইয়াহিয়া খানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সমর্থনে সোচ্চার হওয়ার জন্য বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান | লন্ডনস্থ বাংলাদেশ অ্যাকশন কমিটির প্রচারপত্র | ৫ মে, ১৯৭১ |
আজকের বাংলাদেশ!
বাংলাদেশের ভেতরে কী ঘটছে তা জানার কোন উপায় নেই বহির্বিশ্বের। ইয়াহিয়ার সামরিক সরকার দেশ থেকে সকল বিদেশি সাংবাদিকদের অপসারণ করেছে এবং দেশের অভ্যন্তরে বিদেশি কূটনীতিবিদদের সঙ্গ অবরোধ করে দিয়েছে এবং বিশ্ববাসীর সঙ্গে সকল ধরণের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। রেডক্রসের সহযোগিতা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে এবং সংগঠনের সদস্যদেরকে করাচি বিমানবন্দর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। সকল স্থানীয় খবরের প্রতিবেদনসমূহ সেন্সর করা হচ্ছে এবং পত্রিকা মালিকদেরকে অস্ত্রের মুখে সেনাবাহিনীর পক্ষে প্রতিবেদন লিখার জন্য বাধ্য করা হচ্ছে। সংক্ষেপে, পঞ্চান্ন হাজার বর্গ মাইলের বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে বিশাল এক কেন্দ্রীয় বন্দীশিবিরে, যেখানে নিরস্ত্র ও নিরীহ পুরুষ, মহিলা এবং শিশুদেরকে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে, শহর এবং গ্রামগুলোতে বোমা মেরে পুড়িয়ে ও ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে।
সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান আল্লাহর নামে যে সকল বর্বরতা চালাচ্ছে, তা হানদের ইতিহাসকেও হার মানায়, আর এটা হচ্ছে বাঙালিরা ঈশ্বরবিহীন নয় বলে নয়, তারা ইয়াহিয়ার কাছে ন্যায়বিচার চেয়েছিল বলে। পশ্চিম পাকিস্তানের সংখ্যালঘু মানুষের শিল্পসামরিক গোষ্ঠী কর্তৃক বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু মানুষদের শোষণ বন্ধ করতে চেয়েছিল তারা। তারা চেয়েছিল যেন ইয়াহিয়া ১৯৭০ এর ডিসেম্বরের নির্বাচনের পূর্বে তার দেয়া প্রতিজ্ঞা অনুসারে শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দেয়, যার দল আওয়ামি লীগ গত নির্বাচনে নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিল। কিন্তু ইয়াহিয়া বাংলাদেশের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে প্রস্তুত ছিলেন না, যা কখনই পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ঘটেনি। পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকশ্রেণির মতে, বাঙালিদের জন্ম হয়েছে শাসিত হবার জন্য, সমতার ভিত্তিতে শাসন করার জন্য নয়।
এদিকে, পাকিস্তানের আধিপত্য টিকিয়ে রাখার জন্য ইয়াহিয়া হঠাৎ করেই একতরফাভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রয়োজনীয় সমাবেশ স্থগিত করে একটি রাজনৈতিক সংকটের সৃষ্টি করে। ইয়াহিয়া নিজের তৈরি সংকটের সমাধান করার জন্য শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর বিশিষ্ট অনুসারীদেরকে গ্রেফতার করান, তার ৮০ হাজার সৈন্যকে বাংলাদেশে হানা দিয়ে রাজনীতিবিদ, অধ্যাপক, ছাত্রছাত্রী, আইনজীবী এবং নারী ও শিশুসহ সকল নিরস্ত্র নাগরিককে হত্যা ও বিকলাঙ্গ করে দেয়ার নির্দেশ দেন।
এ ধরণের মধ্যযুগীয় বর্বরতা সংঘটনের দ্বারা ইয়াহিয়া বিশ্ববিবেককে অসম্মান জানায় এবং জাতির সভ্য সম্প্রদায়ের সাথে আলোচনায় বসার নিজ অধিকার নষ্ট করে। এখনই সময় বিবেকনিষ্ঠ গর্জে ওঠার এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধের জন্য তার ওপর চাপ সৃষ্টি করার।
বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক
ওয়ার্কাস প্রেস
বৃহস্পতিবার, ৬ মে, ১৯৭১।