You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.05 | ম্যানিলা ক্রনিকল | ৫ জুলাই ১৯৭১ | পাকিস্তানের আকাশে বিপর্যয়ের ছায়া - পিটার হ্যাজেলহার্স্ট - সংগ্রামের নোটবুক

ম্যানিলা ক্রনিকল | ৫ জুলাই ১৯৭১ | পাকিস্তানের আকাশে বিপর্যয়ের ছায়া – পিটার হ্যাজেলহার্স্ট

মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যাবধানে পূর্ব এবং পশ্চিম বঙ্গ হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক সমস্যার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। গৃহযুদ্ধের কবলে পড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন, হাজার হাজার মানুষকে মেরে ফেলা হয়েছে, দুর্ভিক্ষ আর মহামারি ইতমধ্যে সীমান্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে এবং ইন্ডিয়া-পাকিস্তানের মাঝে যে কোন মুহুর্তে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

তবে সব থেকে অস্বস্তিকর ব্যাপার হল যে এই অবস্থা এখন শুধু আরও খারাপ হতেপারে ভাল হবার কোন সম্ভাবনা নেই। বিশ্ব নেতারা বরাবরের মতই পূর্ব বাংলা এবং পশ্চিম পাকিস্তানিদের মাঝে একটি রাজনৈতিক সমঝোতার আশা নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু পাকিস্তান বিষয়ে সব থেকে বোকা ছাত্রটিও এখন জানে যে রাজনৈতিক সমঝোতার প্রশ্নই ওঠেনা।

আগামী দিনগুলোতে মানুষ সৃষ্ট এই হলোকাস্টের আইনগত দিক গুলো নিয়ে বিশ্বের রাজধানী সমূহে এবং আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে তুমুল বিতর্ক হবে। কিন্তু অনেক বিষয়াদি যা এই হঠাৎ মারাত্মক পরিবর্তিত অবস্থার জন্য দায়ী তা দেশভাগ অথবা গণহত্যা এবং অভিযোগ- পালটা অভিযোগের দ্বারা মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আছে। যদি কোন একজন পাকিস্তানী নেতার দিকে কেউ অভিযোগের আঙুল তুলতে চান তবে এই পর্যায়ে দাঁড়িয়ে তাকে নির্মোহ ভাবে বিপর্জয় শুরুর আগ পর্যন্ত ঘটনা সমূহের ক্রমধারার দিকে দৃষ্টিপাত করতে হবে।

জানুয়ারী ১৯৭০, থেকে শুরু করা অযৌক্তিক হবেনা যখন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিহা খান, যেকিনা কথা দিয়েছিলেন- অধিক জনপ্রিয় কোন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে, গণতান্ত্রিক পরিষদের নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে পাকিস্তানের দুই প্রদেশের উপর থেকে রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলেদেন। সংবিধান প্রণয়ন দ্রুততম সময়ে করতে এবং পূর্ব পাকিস্তানিদের দ্বারা পাকিস্তানের একতা ধ্বংস হবে- পশ্চিম পাকিস্তানিদের এমন কাল্পনিক ভয় দূরকরতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া আগে থেকেই L.F.O (Legal Framework Order) পাশ করে রাখেন যা তাকে যে কোন সময় সংবিধান পরিবর্তন বা অমান্যের ক্ষমতা দেয়।

এটা অবশ্যম্ভাবী হয়েছিল যে প্রাক্তন বিদেশ মন্ত্রী জনাব জুলফিকার আলী ভুট্ট পশ্চিম পাকিস্তানের জনপ্রিয় নেতা হিসেবে উঠে আসবেন এবং পূর্ব বাংলার অগ্নিদীপ্ত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ইতিমধ্যেই পশ্চিম পাকিস্তানের রাজপথে তাঁর সক্ষমতা প্রদর্শন করে দেখিয়েছেন।

কিন্তু যেই মুহুর্তে তারা নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করলেন, সেই মুহুর্তে এটা পরিষ্কার হয়ে গেল যে তারা সম্পূর্ণ ভিন্ন দুই গ্রাউন্ড থেকে নির্বাচন করছেন এবং আগামী পরিষদে এই দুই প্রদেশের মাঝে কোন কমন গ্রাউন্ড খুঁজে পাওয়া যাবেনা। জনাব ভুট্টের সম্পূর্ন রাজনৈতিক ভিত্তি স্থাপিত হয়ে আছে কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে সহিংস পাঞ্জাবী অবসেশনের উপর। ভারতের সাথে হাজার বছরের যুদ্ধের বক্তব্য দিয়ে তিনি পশ্চিম পাকিস্তান প্রদেশকে উত্তেজনার কাঁপন ধরিয়ে রাখেন। এই উত্তেজনা ধরে রাখতে তিনি আস্বস্ত করেন যে যুদ্ধের মাধ্যমে কাশ্মীর মুক্ত করতে শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকার এবং শক্তিশালী মিলিটারি পক্ষে তিনি দাঁড়িয়েছেন।

গত বছর লক্ষ লক্ষ পাকিস্তানী ভোট কেন্দ্রে পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে যখন ভোট দিতে যান তখন জেনারেল ইয়াহিয়া এবং তার মিত্ররা রুদ্ধশ্বাসে নির্বাচনের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া অবশ্যম্ভাবী ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চায়ছিলেন কিন্তু তিনি হয়ত আশা করেছিলেন যে নির্বাচনের ফলাফল দুই প্রদেশের নেতাদের এক কাতারে নিয়ে আসবে যা দেশের ঐক্য ধরে রাখতে পারবে। কিন্তু জেনারেলরা দুইটি বিষয় আমলে নিতে ভুলে করেছিলেন। একদম শেষ মুহুর্তে আওয়ামীলীগের প্রধান বিরোধী প্রার্থি বামপন্থি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি নির্বাচন বয়কটের মাধ্যমে আওয়ামীলীগকে নির্বাচনের মাঠে একলা ছেড়ে দেয়।

প্রায় প্রত্যেক বাঙালি শেখ মুজিবের ছয় দফা (৬ দফা) প্রস্তাবনা ধারণ করেছিলেন এবং এটি তাদের ভোট প্রদানকে প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত করেছিল। আওয়ামীলীগ অপ্রতিরুদ্ধ ভাবে নির্বাচন কোরে বাঙালি প্রদেশের ১৬৯টি আসনের মাঝে ১৬৭টি অর্জন করে নেয় এবং পশ্চিম প্রদেশের পাঞ্জাবী বিরোধী প্রার্থিদের সমর্থন নিয়ে সাধারণ পরিষদের ৩১৩টি আসনের দুই তৃতীয়াংশ আসন অর্জনের বিষয়ে শেখ মুজিবুর রহমান আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। পশ্চিম প্রদেশের জন্য বরাদ্দকৃত ১৩৮টি আসনের মাঝে জনাব ভুট্টের পিপলস পার্টি ৮২টি আসন অর্জন করে। পাঞ্জাব প্রদেশ মর্যাদা হারানোর হুমকির মুখে পড়ে যখন এটা দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে যায় যে সাধরণ পরিষদের সভা শুরু হবার সাথে সাথেই বাঙালিরা তাদের নিজেদের সংবিধান প্রণয়ন করতে সমর্থ হবে।

নির্বাচনের পরের রাতে একজন আইনজীবী তার (ইয়াহিয়ার) প্লানের বিষয়ে কিছু ধারণা আমাকে জানানঃ ‘আমি এখন কি করব বলে তোমার মনেহয়? শেখ মুজিব তার নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতার বলে তাঁর সংবিধান বাস্তবায়নে অগ্রসর হবেন এবং সকল দায়দায়িত্ব এসে পড়বে প্রেসিডেন্টের উপর। তবে আমার মনেহয়না পশ্চিম পাকিস্তানীদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় এমন কিছু তিনি প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে সাইন করিয়ে নিতে পারবেন।‘

অর্থাৎ জনাব ভুট্ট লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার বহাল রাখার বিষয়ে আগ্রহী হবেন কিন্তু তিনি আমাকে বলেছেন যে অধিবেশন শুরু হওয়া মাত্র শেখ সাহেব সাধারণ পরিষদকে সায়ত্বশাসিত ঘোষণা করতে যাচ্ছেন এমন কথা তিনি শুনেছেন। যার ফলে লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার এবং পাঞ্জাবীদের ভেটো দুটোই অকার্যকর হয়ে পড়বে।

কিন্তু জনাব ভুট্টোর অন্য পরিকল্পনাও ছিল। প্রথমে তিনি দ্রুত সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরু করার বিরোধিতা করেন কিন্তু ফেব্রুয়ারির ১৩ তারিখ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ঘোষণা দেন যে ৩রা মার্চ অধিবেশন শুরু হবে। এর দুই দিন পর ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখ মূল সমস্যা সামনে আসে যখন জনাব ভুট্টো ঘোষণা করেন তার পার্টি সংবিধান পরিষদের অধিবেশন বয়কট করবে এবং একই সাথে পশ্চিম পাকিস্তানের যে সকল নেতা অচিরেই ঢাকা সফরের পরিকল্পনা করছিলেন তাদের না যাবার জন্য হুমকি দেন। ভুট্টো ধীরে ধীরে প্রেসিডেন্টের উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন।

একই সাথে জনাব ভুট্টো প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার একাধিক জেনারেলের সাথে দেখা করতে থাকেন যারা পূর্ব বাংলার বিষয়ে আগ্রাসী ছিল। তারা প্রেসিডেন্টের গভর্নর হিসেবে জেনারেল টিক্কা খানকে ঢাকায় নিয়োগ করেন।

এসবের মাঝেই ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে কিছু পশ্চিম পাকিস্তানী নেতা ভুট্টোর হুমকি অগ্রাহ্য করে সংবিধানের খসড়া প্রণয়নে অংশ নিতে ঢাকা সফরে আসেন। হিসাবে বলা যায় পাকিস্তানের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ প্রতিনিধি ঢাকায় একত্রিত হয়েছিল।

কিন্তু ফেব্রুয়ারীর ২৮ তারিখ জনাব ভুট্টো রাওয়াল পিন্ডি উড়ে যান প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে এটা মনেকরিয়ে দিতে যে যদি তিনি পাঞ্জাবীদের বা পাঞ্জাবী ডোমিনেটেড আর্মির অমতে সংবিধান প্রণয়ন করেন তবে তার বিপরীতে ফলাফল কেমন হতে পারে।

প্রেসিডেন্ট তার প্রথম ভুলটি করলেন। পাঞ্জাবী চাপের প্রতি নতি স্বীকার করে তিনি পাকিস্তানের সর্ববৃহত পার্টির নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে কোন রকম আলোচনা না করেই মার্চের সাংবিধানিক পরিষদ বাতিল করে দেন।

বাঙালিরা এটাকে গোভিত ষড়যন্ত্র হিসেবে নিয়ে তীব্র প্রতীবাদ শুরু করলেন এবং আর্মি ডাকা হল ঢাকার পরিস্থিতি বল প্রয়োগ করে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। বাঙালিরা প্রেসিডেন্টের উপর আস্থা হারালেন এবং প্রথমবারের মত ঢাকার প্রকাশ্য রাজপথে বাংলাদেশের জন্য শ্লোগান শোনা যেতে লাগলো।

বাংলাদেশের জন্য কান্না যতই তীব্র হচ্ছিল ততই সমস্ত প্রদেশের জীবন যাত্রা স্থবির হয়ে আসছিল। এমন পরিস্থিতিতে মার্চের ১৬ তারিখ দুটি বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে প্রেসিডেন্ট ঢাকা আসেন। (১) তিনি বলেন যে তিনি দ্রুত তম সময়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে খমতা হস্তান্তর করতে চায়ছেন যদি শেখ মুজিব দুই প্রদেশে প্রাদেশিক পর্যায়ে দুটি আলাদা জাতীয় সরকার গঠনে সম্মত হন। অথবা

(২) সে প্রদেশ গুলোতে খমতা পুনর্বহাল করবেন এবং তার নিয়ন্ত্রণাধীন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংবিধান প্রণয়নের আগপর্যন্ত দেশের প্রতিদিনকার প্রয়োজনের দেখভাল করবেন।

যখন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া শেখ মুজিবকে জিজ্ঞেস করেন যে তিনি (শেখ মুজিব) ভুট্টোকে বৃহত্তর পশ্চিম পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান ধরে নিয়ে একটি কেন্দ্রীয় কোয়ালিশন সরকার গঠনে প্রস্তুত আছেন কিনা তখন শেখ মুজিব তাকে (ইয়াহিয়াকে) গণতান্ত্রিক নিয়ম নিতির উদাহরণ মনেকরিয়ে দিয়ে বলেন যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ পার্টির নেতা হিসেবে তার অবশ্যই নিজের সহকর্মি নির্বাচনের অধিকার থাকা উচিৎ। এখানে আবারও মনেরাখা প্রয়োজন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় বিষয়াদিতে অংশগ্রহনের তাঁর (শেখ মুজিবের) আগ্রহ প্রমাণ করেনা যে তিনি দুই প্রদেশকে বিভক্ত করতে চায়ছেন। কিন্তু তারপরেও প্রেসিডেন্ট জনাব ভুট্টের পূর্বেকার হুমকির প্রতি আস্থা রাখলেন এবং একটি জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাবনা বাতিল করে দিলেন।

যেহেতু সময় চলে যাচ্ছিল সেহেতু প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া এবং শেখ মুজিব দ্বিতীয় একটি আপস ফর্মুলায় একমত হলেনঃ প্রাদেশিক পর্যায়ে অতিসত্বর খমতা পুনর্বহাল হবে। শেখ মুজিব প্রেসিডেন্টকে অনতিবিলম্বে একটি ঘোষণা জারির মাধ্যমে মার্শাল ল তুলে নিতে বললেন এবং পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের চার প্রদেশে সিভিলিয়ান খমতা পুনর্বহাল করতে বললেন। একটি নতুন সংবিধান প্রণয়নের আগ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এই শর্তে শেখ মুজিব সম্মতি দিলেন।

সমর সাজে সৈন্যদের ব্যারাকে আসতে দেখে ক্ষুব্ধ এবং হতাশ বাঙালিরা ঢাকায় বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করতে শুরু করেন। ভুট্টই ছিল সেই ব্যাক্তি যে কিনা শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্টকে এমন একটি সিধান্ত নিতে উৎসাহিত করে যা পূর্ব বাংলায় আগুন লাগিয়ে দেয়। যখন প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমানের প্রস্তাব ভুট্টোর কাছে তুলে ধরেন তখন ভুট্টো তাকে এই বলে (ইয়াহিয়াকে) বোঝান যে যদি মার্শাল ল তুলে নেওয়া হয় তাহলে পাকিস্তান ৫টি পৃথক সার্বভৌম রাষ্ট্রে পরিণত হবে যেই মুহুর্তে প্রদেশ গুলোতে প্রেসিডেন্ট সিভিলিয়ান খমতা পুনবহাল করবেন। তিনি ভয় দেখান যে মুজিব কেন্দ্রীয় সরকারকে ধ্বংস করে দিতে চাচ্ছেন। কারণ প্রেসিডেন্ট মার্শাল ল তুলে নিলে আইনগত ভাবে তিনি আর রাষ্ট্রের কর্তা থাকবেন না।

এ সকল কথায় অর্ধেক কনভিন্সড হয়ে প্রেসিডেন্ট পুনরায় শেখ মুজিবের কাছে ফিরে যান এবং তার ভয়ের কারণ গুলো জানান। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে এই বলে শপথ করেন যে যেই মুহুর্তে সাধারণ পরিষদের অধিবেশন বসবে এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে কোনরকম কিছু একটা ভ্যালিডিটি দিবে সেই মুহুর্তে সে (ইয়াহিয়া) মার্শাল ল তুলে নিবেন। প্রেসিডেন্টের এই কথার পর শেখ মুজিব তাঁর পূর্বেকার অতিসত্বর মার্শাল ল তুলে নেওয়ার অবস্থান থেকে সরে আসেন এবং এতে করে প্রেসিডেন্ট তার জেনারেলদের পক্ষে চলে যান কারণ তিনি পূর্ণ কনভিন্সড হন যে শেখ মুজিব তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারেন।

ঘটনা গুলোকে যৌক্তিক উপসংহারে নিলে নিঃসন্দেহে বলা যায় বর্তমান অপ্রত্যাশিত গণহত্যা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার কারণেই হচ্ছে যখন তিনি বাঙালিদের সাথে কোন রকম আলোচনা না করে এসেম্বলি বাতিল করে দেন, কিন্তু এর থেকেও বেশী দায়ী মার্চের ৩ তারিখ এসেম্বলি বয়কটের ভুট্টের একগুঁয়ে সিধান্ত।