শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
কমিউনিটি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা | বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা সেল | …১৯৭১ |
গোষ্ঠীর উন্নয়ন কর্মসূচির সারমর্ম
এই কার্যক্রম সম্পাদন করার জন্য আমাদের প্রধান প্রয়োজন হচ্ছে বাংলাদেশে নতুন আন্দোলন শুরু করা। উক্ত আন্দোলনের তত্ত্ব আমাদের মানুষদের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য রাষ্ট্র পরিকল্পনা, উন্নয়ন এবং প্রশাসনের ভিত্তি হবে।
গ্রামীণ সমাজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবন পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রামবাসীদদের নিজেদের ভেতর থেকেই আসতে হবে। আত্মসচেতনতা, আত্মনিরীক্ষণ এবং স্বনির্ভরতা এই আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি। এটি পুরোপুরিভাবে মানুষের ইচ্ছা এবং স্বতঃস্ফূর্ত ও উদ্যমী অংশগ্রহণের উপর নির্ভর করে।
এই আন্দোলন বৃদ্ধির উপযোগী শর্ত সৃষ্টির জন্য, স্বেচ্ছাসেবকদের একটা গোষ্ঠীকে এর পিছনের দর্শনে অনুপ্রাণিত হওয়া আবশ্যক। অনেক যুবক রয়েছে যারা মুক্তিবাহিনীতে অংশগ্রহণের জন্য অপেক্ষা করছে, কিন্তু তাদের সকলকে মুক্তিবাহিনীতে নেওয়া নাও হতে পারে। আন্দোলনের জন্য প্রয়োজনীয় সামাজিক স্বেচ্ছাসেবকদের উক্ত যুবকদের মধ্য থেকে নিয়োগদান করা হবে। তাদের কাজের গতিপথে তাদের আন্দোলনের দর্শনের (সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ) প্রশিক্ষণের উপর সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হতে পারে। এই পটভূমিতে সামাজিক কর্মীরা আমাদের মানুষদের প্রেরণা প্রদানের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবে। তাদের মূল কাজ হবে একটি আন্দোলন সৃষ্টি করা যা সকল শ্রেণীর গ্রামবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করবে, এবং পরিস্থিতি তৈরি করা যাতে আন্দোলন টিকে থাকে এবং গ্রামবাসীদের তাদের সর্বোচ্চ প্রয়োজনীয়তায় সচেতনতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে নিজেদের দ্বারা চালিয়ে নিতে হবে।
অতীতে দেশের কোনো স্তরেই প্রকৃত অর্থে কোনো গণতন্ত্র ছিল না। স্বৈরচারী ও একনায়ক্তান্ত্রিক কেন্দ্র থাকলে, তার পরিসীমাতে কোন গণতন্ত্র থাকতে পারে না, এর উল্টোটাও সত্য। আশা করা যায় ভবিষ্যতে কেন্দ্র এবং তার পরিসীমাতে গণতন্ত্র থাকবে। এটি একাই আন্দোলনে মানুষদের কার্যকর এবং অর্থপূর্ণ সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে পারে। আন্দোলনের চরিত্র এমন হতে হবে যেন তা মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারে।
সামাজিক কর্মীদের যথাযথ সংখ্যা এলাকা এবং জনসংখ্যার আকার এবং কর্মীদের প্রাপ্যতার উপরেও নির্ভর করে। কর্মীদের অনুগত এবং কর্মচঞ্চল হতে হবে। তাদের মানুষদের সাথে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে এবং গ্রামীণ মানুষদের সাথে প্রাণবন্ত বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে হবে। তাদের আচার, চরিত্র, আচরণ ও মনোভাব দ্বারা তাদের প্রভাব তৈরি করতে হবে যাতে তারা গ্রাম্য সম্প্রদায়ের স্বাভাবিক ও সাধারণ অপরিহার্য অংশ। দাম্ভিকতা সম্পূর্ণ পরিহার এবং তাদের অংশের বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব আন্দোলনে মানুষদের আকর্ষণ করবে। সামাজিক কর্মীদের উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পিত আছে যারা নিজেরা এটি অনুভব করতে পারে। রাজনৈতিক নেতাদের সৃজনশীল ও কার্যকর সমর্থন দরকার যারা মানবজাতির সেবার প্রধান উপায় হিসাবে রাজনীতির দেখাশোনা করবে।
<003.167.404>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সমাজ উন্নয়ন কর্মসূচি
আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের প্রতি দায়বদ্ধ। “একটি বাস্তব জীবিত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে যেখানে মানুষেরা স্বাধীনতা এবং মর্যাদার সাথে বেঁচে থাকবে, এবং ন্যায় ও সাম্য চালু থাকবে”, এটাই আওয়ামীলীগের ইশতেহার। আওয়ামীলীগ সকল নাগরিকদের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ন্যায় নিশ্চিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ‘একটি বাস্তবসম্মত জীবিত গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবের একটি ধারা ইশতেহারে অঙ্গীভূত আছে। এর অন্তর্ভুক্ত আছে: সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকার, সরাসরি এবং অবাধ নির্বাচন, আইনের দৃষ্টিতে সমতা, আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতাসমূহ, ধর্মনিরপেক্ষ সামাজিক শৃঙ্খলা, সংখ্যালঘুদের জন্য পূর্ণ অধিকার এবং নাগরিকত্ব, সংসদীয় সরকার যেখানে আইনসভা সর্বোচ্চ হবে এবং যার প্রতি শাসক দায়ী থাকবেন। রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এটি বাস্তবতার দুটি মৌলিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে রূপান্তরিত হয়- স্বাধীনতা ও সমতা।
আওয়ামীলীগ জানে এবং বিশ্বাস করে যে রাজনৈতিক গণতন্ত্রের স্বাধীনতা এবং সমতা দাবিয়ে রাখা যায় যদি না তারা অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং সমতা দ্বারা সম্পূর্ণ হয়। স্বাধীনতা, যদি এটি বাস্তবে হতো, অভাব,দারিদ্রতা এবং ক্ষুধা হতে অর্থনৈতিক অবরোধ হতে স্বাধীনতা বোঝায়, এবং এটি অনেক অপরিহার্য যেমন সামরিক একনায়কতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্রের অর্থনৈতিক অবরোধ হতে স্বাধীনতা। অর্থনৈতিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার জন্য এবং সাধারণ মানুষদের অভাব হতে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার সফলতার জন্য, আওয়ামীলীগ সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলার প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আওয়ামীলীগের ইশতেহারে বলা হয়েছে যে, “অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য হচ্ছে একটি সমমাত্রিক শোষণমুক্ত সমাজের সৃষ্টি। লক্ষ্য একটি সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা, যেখানে অর্থনৈতিক অবিচার দূরীভূত হবে, দ্রুত অর্থনৈতিক বৃদ্ধি উন্নীত হবে এবং সমাজের সকল স্তরের জনগণের মধ্যে শুধু এমন উন্নতির সুফল বিতরণের জন্য বিধান তৈরি করা হবে”। এই লক্ষ্য উপলব্ধির জন্য ইশতেহারে কিছু নির্দিষ্ট প্রস্তাব রূপায়িত হয়েছে, এগুলো হলো: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একমাত্র বাহন হিসেবে ব্যক্তিগত মুনাফার সঙ্গে বেসরকারী এন্টারপ্রাইজ, যেহেতু মূল উদ্দেশ্যটি কয়েকটি হাতেই সম্পদের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে এবং অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরগুলো কিছু বেসরকারী গোষ্ঠীর হাতেই রেখে দেয়। যেজন্য সামাজিক ন্যায়বিচার ও সাম্য বাস্তবায়ন অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। জাতীয়তাবাদ এবং সরকারি সেক্টরসমূহের পরিবৃদ্ধি, সমবায় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন এবং নতুন প্রাতিষ্ঠানিক বন্দোবস্তের বিবর্তন দ্বারা একে উলটে দিতে হবে এবং মুছে ফেলতে হবে।
আওয়ামীলীগ এইভাবে নীতি এবং মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলার প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এর মূল কাজ হলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপ্লব আনয়ন।
গ্রামগুলো, সংখ্যায় যা ৬৫,০০০ এরও বেশি, সঠিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে যেখানে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক লক্ষ্যগুলো কর্মে রূপান্তরিত হতে পারবে। এবার বাংলাদেশে সচরাচর বিদ্যমান বৈষয়িক অবস্থার দিকে কঠোর দৃষ্টি নিক্ষেপ করা যাক। বাংলাদেশ একটি গ্রাম্য কৃষিভিত্তিক সমাজ, যার খাদ্য, কর্মসংস্থান ও রপ্তানি কৃষির উপর নির্ভরশীল। জাতীয় আয়ের ৬৫ শতাংশেরও বেশি কৃষি হতে আগত হয়, এবং শিল্প ক্ষেত্র মোট জাতীয় আয়ের মাত্র ১০ শতাংশ অবদান রাখে। মোট জনসংখ্যার মাত্র ৫.২ শতাংশ শহর এলাকায় এবং ৯৪.৮ শতাংশ গ্রামে বাস করে। এটি অধিক ঘনত্বের জনসংখ্যার মধ্যে একটি, প্রতি বর্গমাইলে বাস করে ৯২২ মানুষ।
<003.167.405>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
মাথাপিছু আয় মাত্র ৫৬$। এর শিল্পায়ন অপূর্ণাঙ্গ, এর নগদীকরণ সীমাবদ্ধ, এবং এর আর্থিক অবকাঠামো অপর্যাপ্ত। তার উপর সেখানে খাদ্যের একটি অর্থনৈতিক ঘাটতি আছে, যা ১৯৭০ সালের সাইক্লোন দ্বারা এবং বর্তমানের বাংলাদেশের উপর পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক শাসক কর্তৃক তুলনাহীন নৃশ্নগসতা দ্বারা প্রকট আকার ধারণ করেছে ।
প্রকৃত বাংলাদেশ গ্রামের মধ্যেই নিহিত, ৬৫,০০০ এরও বেশি গ্রাম। আমাদের জনগণ কৃষিতে সরকারের অপরাধমূলক অবহেলার কারণে মানুষের অকল্পনীয় দারিদ্র এবং পুঁজিবাদী অর্থনীতির অনুসরণ, যাতে সম্প্রদায়ের ২২ পরিবারের সদস্যদের ক্রয়ক্ষমতা রূপান্তরের প্রভাব রয়েছে, এর জন্য নিন্দিত। আমাদের ভূমি পৃথিবীর অন্যতম উর্বর ভূমি এবং তারপরেও আমাদের মানুষ দরিদ্রতম। কিন্তু বর্তমানের স্বাধীনতা সংগ্রাম যা মহৎ সামাজিক বিপ্লবের সাথেও জড়িত তা আমাদের মানুষদের অভূতপূর্ব মাত্রায় জাগ্রত করেছে। মানুষেরা আজ পূর্ণসতর্ক। তারা আর নীতির পরোক্ষ কোনো বিষয় নয় বরং এর মূল চালিকাশক্তি। স্থূল উদ্বিগ্ন অনুসন্ধান “কারা গরীব?” থেকে মৌলিক প্রশ্ন “কেন তারা গরীব?”-এ সরানো হয়েছে। এই মৌলিক প্রশ্নের উত্তর থেকে নিস্তার পাওয়া যাবে না। দারিদ্রের সমস্যা কোনো শিল্প প্রকৃতি এবং এর উদ্দামতার সমস্যা নয়, বরং অর্থনৈতিক এবং শিল্প-নীতি ও সংগঠনের সমস্যা। প্রথমত বিষয়টিকে তার উৎস হিসেবে মোকাবেলা করতে হবে, এবং দ্বিতীয়ত মোকাবেলা করতে হবে এর প্রতিভাসে।
ইতোমধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রামগুলো গণতান্ত্রিক নীতির ভিত্তির উপর সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলার প্রভাব স্থাপনের জন্য সঠিক কেন্দ্র। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপ্লব আনয়নের কাজ গ্রামেই শুরু করতে হবে যেখানে ৯৪.৮ শতাংশেরও বেশি মানুষ বাস করে। সমাজ উন্নয়ন এবং জাতীয় সম্প্রসারণ প্রকল্প গ্রামের মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক রূপান্তর আনার কার্যকর মাধ্যম। আমাদের জীবনের উক্ত স্তরে সমাজ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রধান তাৎপর্য রয়েছে, যা গ্রাম্য মানুষদের কল্যাণ ঘনিষ্ঠভাবে বহন করে।
সমাজ উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর তিনটি দৃষ্টিকোণ রয়েছে। প্রথম, সমাজ উন্নয়ন প্রকল্পগুলো এবং জাতীয় সম্প্রসারণ সেবাগুলো নিবিড় প্রচেষ্টার ক্ষেত্র হিসেবে সংকল্পিত হয়েছে যেখানে সরকারের উন্নয়ন সংস্থাগুলো প্রোগ্রামগুলোর সাথে একটি দল হিসেবে একত্রে কাজ করে যা পূর্বেই পরিকল্পিত এবং সমন্বয় করা। সমাজ উন্নয়ন ও জাতীয় সম্প্রসারণ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত ক্রিয়াকলাপগুলো গ্রাম্য জীবনের সকল দৃষ্টিভঙ্গি উন্নয়নের জন্য কর্মসূচির অখণ্ড অংশ হিসেবে গণ্য হবে। দ্বিতীয়, কর্মসূচির সারমর্ম হলো, গ্রামবাসীরা যারা তাদের দুর্ভোগের ব্যাপারে কঠোরভাবে সচেতন তারা সমাজের পরিবর্তনের জন্য একসাথে এগিয়ে আসবে, অর্থাৎ, নিজেদের জন্য নতুন জীবন গড়ে তোলা এবং প্রকল্প পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের জন্য সচেতনতা ও দায়িত্ব বাড়ানোর জন্য অংশগ্রহণ করবে, যা তাদের ভালো হওয়ার উপাদান। কর্মসূচিগুলো তাদের নতুন সুযোগ প্রদান করে, এবং বিনিময়ে, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ, তারা তাদের একটি বৈশিষ্ট্যসূচক মান প্রদান করে এবং তাদের পরিধি ও প্রভাব সম্প্রসারিত করবে। স্বনির্ভর এবং সহকারিতা মূল নীতি যার উপর আন্দোলন অবলম্বন করে। এর প্রধান উদ্দেশ্য একদম ভেতর থেকে নেতৃত্বের উত্থানে সহায়তা প্রদান করা। সংক্ষেপে এটি সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি আন্দোলন, যা গ্রাম্য সমাজের সকল স্তরকে অন্তর্ভুক্ত করবে। তৃতীয়, আন্দোলনটি পুরো গ্রাম্য সমাজকে এর সুযোগের মধ্যে নিয়ে আসবে এবং তাদেরকে সমবায় আন্দোলনে এবং
<003.167.406>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
অন্য স্তরে নিজেদের অধিকারে নিজেদের স্থান গ্রহণের জন্য সক্ষম করা। এটি কর্মোদ্যোগকে বিকশিত করবে এবং আমাদের মানুষদের মধ্যে সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী যুক্ত করবে। এটি উক্ত বৈশিষ্ট্যগুলোর ফল যা সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কার্যকলাপের উপর ভিত্তি হওয়া সামাজিক অর্থনীতির সাধারণ নমুনা হিসেবে গণ্য হবে।
সমবায় উন্নয়ন বোঝায় গ্রাম্য গোষ্ঠী দ্বারা স্বেচ্ছাকৃত স্বনির্ভরতা। এর উদ্দেশ্য গ্রামের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবন পরিবর্তন। উক্ত কর্মসূচির অন্তর্নিহিত মৌলিক দর্শন হলো সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি টেকশই হবে না যদি না গ্রাম্য মানুষেরা এরূপ উন্নতির প্রয়োজনে প্রতীত হবে এবং সক্রিয়ভাবে ও উদ্যমী হয়ে কাজে অংশগ্রহণ করে। মূল সমস্যাগুলো গ্রামবাসীদের নিজেদেরকেই সমাধান করতে হবে। সরকারি সংস্থাগুলো গ্রাম্য সমাজগুলোকে স্বীকৃত চাহিদা মেটাতে সাহায্য করবে তাদের যখন প্রয়োজন হবে তখন নতুন দক্ষতা শিখিয়ে, বিদ্যমান দক্ষতার উন্নতি করে, গ্রাম্য চাহিদা পূরণের জন্য অগ্রবর্তী প্রযুক্তি আনা, সেচ্ছাকৃত সমবায় প্রচেষ্টা সমর্থন ও গ্যালভানাইজ করার জন্য সরকারি তহবিল হতে অর্থ সহায়তা প্রাপ্তিতে সহায়তা করে। নেতৃত্ব অবশ্যই মানুষের মধ্য থেকে আসতে হবে। এটি এমন আন্দোলনের রূপ নেয় যেখানে গ্রাম্য মানুষেরা প্রধান অবস্থানে আছে এবং সরকারি সংস্থাগুলো নিম্নের গুলো অধিষ্ঠিত করবে।
সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প স্বেচ্ছাকৃত সামাজিক প্রচেষ্টা সমর্থন করার জন্যই পরিকল্পিত হয়। এটি একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক পরিকল্পনা নিয়ে গঠিত যাদের প্রত্যেকটি গ্রাম্য সামাজিক জীবন নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর যেকোনো একটির মধ্যে সংঘটিত হয়।
১। কৃষি (ক) পশুপালন (খ) সেচ (গ) উদ্ধার (ঘ) ভালো বীজ (ঙ) সার (চ) অন্যান্য ইনপুট
২. স্বাস্থ্য এবং গ্রামীণ স্যানিটারি (ক) মেডিক্যাল সুবিধা (খ) ডাক্তার (গ) বিশুদ্ধ খাবার পানি (ঘ) পরিষ্কার পরিবেশ
৩. শিক্ষা (ক) প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষা (খ) সামাজিক শিক্ষা
৪. যোগাযোগ (ক) রাস্তাঘাট (খ) ব্রিজ এবং কালভার্ট
<003.167.407>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
পুরো গ্রামাঞ্চলকে উপযুক্ত ব্লক বা দলে বিভক্ত করা উচিত, যার প্রতিটি ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ ব্যক্তি নিয়ে গঠিত। প্রত্যেক ব্লক তাদের নিজেদের দলপতি এবং নির্বাহী কমিটি নির্বাচিত করবে। তারা সরাসরি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হবে। কর্মকর্তারা শুধুমাত্র তাদের সহকারী হিসেবে কাজ করবে। যদি কোনো সময় নির্বাচন সম্ভব না হয় তবে সম্মানিত স্থানীয় ব্যক্তিদের দ্বারা এড-হক কমিটি গঠিত হতে পারে। এটি জরুরী অবস্থার বর্তমান পরিস্থিতির সাথে মিলিত হবে। কমিটি গঠন সর্বাঙ্গীণ পরিকল্পনার অংশ হবে।
মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী।
বি.দ্র. আপনার মন্তব্য অনুযায়ী গঠিত সংগঠন আন্দোলনে যেতে পারে। কার্যক্রম আরম্ভের জন্য রৌমারির উপর প্রতিবেদন এর সাথে সংযুক্ত করা হলো
<003.168.408>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
গ্রামীন প্রতিষ্ঠানসমূহ সাংগঠনিক কাঠামো ও প্রশিক্ষন সিলেবাস |
বাংলাদেশ সরকার পরিকল্পনা সেল |
……………………… ১৯৭১ |
১…সাংগঠনিক অবকাঠামো
১) গ্রাম পঞ্চায়েত
এই অংশটি পল্লী অঞ্চলের সাথে যোগাযোগ রাখবে এবং কমিটির নাম সাধারণভাবে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য অনুসারে পঞ্চায়েত রাখা হবে।
গঠনঃ সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে সভাপতি এবং সদস্যদল নির্বাচন করা হবে, জনসংখ্যা অনুযায়ী ৩ থেকে ৭ জন।
ভূমিকাঃ পঞ্চায়েত গ্রাম সম্পর্কিত সকল প্রশাসনিক বিষয়ে মুখ্য ভূমিকা রাখবে। তদুপরি পঞ্চায়েত জাতীয় নীতিমালার বাধ্যবাধকতার ভেতর বিচারিক ভূমিকা রাখবে।
কার্যক্রমঃ ………
২) ইউনিয়ন পরিষদ
গঠনঃ পরোক্ষ। গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতিগণ একজন পঞ্চায়েত নেতাকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করবেন যিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন।
ভূমিকাঃ জেলা বোর্ডের নির্বাহী বিভাগ হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদের আওতাভুক্ত একাধিক গ্রামের ভেতর ব্যবস্থাপনা এবং তদারকির কাজ করবে।
কার্যক্রমঃ ………
৩) থানা বোর্ড
গঠনঃ পরোক্ষ। ইউনিয়ন পরিষদ সভাপতি একজন থানা বোর্ড চেয়ারম্যান নির্বাচন করবেন।
ভূমিকা ও কার্যক্রমঃ জেলা বোর্ডের নির্বাহী বিভাগ হিসেবে থানা বোর্ডের আওতাভুক্ত একাধিক ইউনিয়নের ভেতর ব্যবস্থাপনা এবং তদারকির কাজ করবে।
৪) জেলা বোর্ড
গঠনঃ সদস্যগণ সরাসরি নির্বাচিত হবেন এবং তারা একজন সভাপতি নির্বাচন করবেন।
ভূমিকা ও কার্যক্রমঃ স্থানীয় সরকারের আওতায় জেলাভুক্ত গ্রাম সমূহের সকল পরিকল্পনা, নির্বাহী, এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
২…পল্লী ক্যাডার পুনর্গঠন
১) চাহিদাঃ প্রশিক্ষিত মাঠ পর্যায়ের কর্মীগণের মূল লক্ষ্য যুদ্ধের সময় গেরিলা বাহিনীর আর্থ-সামাজিক ‘নিরাপদ ভিত্তি’ নিশ্চিত করা হলেও যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে আর্থ-সামাজিক পুনর্গঠনে তাদের ভূমিকা আরো বহুল ও ব্যাপক হবে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনকে সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, প্রশিক্ষিত তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীরা পল্লী পুনর্গঠনের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
<003.168.409>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
২) পাঠ্যসুচীঃ তৃণমূল কর্মীদের বর্তমান পাঠ্যসুচী (সংযোজিত) তাই চালিয়ে যাওয়া যেতে পারে এবং ক্রমান্বয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত হলে পাঠ্যসুচীতে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। পাঠ্যসুচী প্রয়োজন অনুযায়ী বোর্ডের দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হবে।
৩) প্রশিক্ষণ শিবিরঃ বর্তমান ধাঁচের স্থায়ী প্রশিক্ষণ শিবির গ্রহনযোগ্য। তাদের অনুপস্থিতিতে মুক্তাঞ্চলের স্কুল/কলেজ প্রাঙ্গণে সাময়িকভাবে ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
৪) অর্থায়নঃ বর্তমান বাজেটের প্রতি মাসে প্রশিক্ষণ কর্মী প্রতি ২০০ শত টাকা ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
৫) ভর্তিঃ
ক) তাৎক্ষণিকঃ ষষ্ঠ শ্রেনী এবং তধোর্ধ্ব যুবক, গ্রামে স্থায়ী, অন্তত পল্লী অঞ্চলে সাময়িকভাবে কাজ করতে আগ্রহী স্বেচ্ছাসেবীগণ প্রার্থনীয়।
খ) দীর্ঘমেয়াদঃ মেট্রিক পরীক্ষার্থীগণ যারা পরীক্ষা দেবার পর ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করবে এবং যারা গ্রামে স্থায়ীয়ভাবে বা অন্ততপক্ষে প্রশিক্ষণের পর দুই মাস থাকবে তাদের নিয়মিত ভিত্তিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
৬) ক্যাডার শ্রেনীবিন্যাসঃ
(i) তৃণমূল কর্মী, অস্থায়ী কর্মী, অথবা যাদের গভীর চেতনাবোধ জাগ্রত হবে না তাদের প্রশিক্ষণ শেষে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
(ii) (ক)পুনর্গঠন দলঃ শিক্ষানবীশ (এবং প্রশিক্ষণ শেষে নির্বাচিত সম্ভাব্য ‘দলনেতা’), মেট্রিক সমানের পরীক্ষা উত্তীর্ণ, গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দাদের গভীর চেতনাবোধ পরখ করা হবে।
(খ)পুনর্গঠন দল – সদস্যঃ এক বছর পল্লী বা মুক্তাঞ্চলে কাজ করার পর কার্যকরী জরিপের ভিত্তিতে (নীচে দেখুন)।
<003.168.410>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(গ) পুনর্গঠন দল – জ্যেষ্ঠ্যঃ পুনর্গঠন সদস্যদের ভেতর থেকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে নির্বাচিত, থানা পর্যায়ের সম্ভাব্য সংগঠক।
৩…পল্লী পুনর্গঠন বোর্ড
(ক) বোর্ডঃ
একটি উচ্চ পর্যায়ের এবং উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি প্রয়োজন যারা প্রকল্পের কাজ শুরু এবং তত্ত্বাবধানের কাজ করবে, সাথে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন প্রকল্পের পরিকল্পনাকারীগণ পরিকল্পনা সফলভাবে কার্যকর করার দায়িত্ব পালন করবেন। বোর্ড নিম্নলিখিত বিন্যাসে সাজানো যেতে পারেঃ
১) সভাপতিঃ ড মোজাফফর আহমদ চৌধূরী
২) সদস্যগণঃ ৩ জন এম, এন, এ, এমপি
১ জন সদস্য, প্রশিক্ষণ
১ জন সদস্য, জরিপ এবং স্থানীয় কমিটির কার্যকর নিরীক্ষক
১ জন সদস্য সচিব
(খ) প্রারম্ভঃ জেলা এবং থানা সংগঠকগণ (তদসংগে কৃষিবিদ, চিকিৎসক, এবং প্রকৌশলীগণ) প্রাথমিকভাবে সদস্য সচিবের অধীনে মিডিয়ার সাহায্যে ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে প্রকল্প শুরু করবেন এবং একই সাথে স্থানীয় সমিতি সমূহের (গ্রাম পঞ্চায়েত এবং জেলা পরিষদ) নির্বাচনে নির্বাচনী অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। জেলা সংগঠক সদস্য সচিবের অধীনে কেন্দ্রীয় পাবলিক সার্ভিসের সদস্য হিসেবে কাজ করতে পারেন, থানা সংগঠক এবং অন্যান্যরা জেলা পাবলিক সার্ভিসে একীভূত হতে পারেন।
(গ) প্রশিক্ষণঃ শিবির প্রশাসক এবং প্রশিক্ষণ কর্মীরা সদস্য প্রশিক্ষণের অধীনে কাজ করবেন।
(ঘ) জরিপ নিরীক্ষণঃ থানা জরিপ এবং নিরীক্ষণ কর্মীগণ সদস্য জরিপ নিরীক্ষণের অধীনে কাজ করবেন এবং নিয়মিত রিপোর্ট পেশ করবেন।
পাঠক্রমঃ
১) স্থানীয় সম্প্রদায় কি? স্থানীয় সম্প্রদায় উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব – উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য। স্থানীয় বাসিন্দাদের সম্পর্কে সাধারন তথ্য।
২) স্থানীয় সম্প্রদায় পরিবর্তনের বর্তমান সংগঠন – ভবিষ্যত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সংগঠন। স্থানীয় সম্প্রদায় উন্নয়ন জাতীয় উন্নয়নের চাবিকাঠি।
<003.168.411>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
iii) উন্নয়নকাজ, কৃষিকাজ, পশুপালন, বন, মৎস্য, কৃষি বাজারজাত, উন্নয়নমূলক সমবায়, সংরক্ষণ সমবায় এবং মৎস্য বিপণন সমবায়- প্রাথমিক ঋণদান সমিতি। i) শিল্প, শিক্ষা, সামাজিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, আবাসিক নির্মাণ, সড়ক উন্নয়ন, অনগ্রসর শ্রেণীর মঙ্গল ইত্যাদি। v) পৃথক ভাবে না হয়ে পুরো গ্রাম সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক ও সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক উন্নয়ন সাধনসহ সুসংহত উন্নয়ন সাধন। vi) স্ব-নির্ভরতা এবং সমবায় হবে একটি পদ্ধতি- সম্প্রদায়ের উন্নয়ন, সাধারণ কল্যাণ ও জীবনধারণের। vii) বাঙালি জাতীয়তাবাদ, তার লক্ষ্য এবং বিষয়বস্তু ও সমষ্টিগত উন্নয়ন, বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। viii) জাতীয় সম্পদ সৃষ্টির সুরক্ষা এবং উৎপাদনশীল শ্রমের সদ্ব্যবহার, অলস শ্রম বর্জন, বেকার সমস্যার সমাধান। ix) নিরাপত্তা ও সম্প্রদায় আনুগত্য, সংহতি, ঐক্য, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক- শান্তি ও শৃংখলার জন্য। X) নারী ও সমাজ- সমাজ এবং গৃহায়ন, গৃহস্থালি বিষয়াবলী, ও নারী এবং অক্ষমদের জ্ঞানের অভাব, স্বল্প অবসর এবং শিক্ষা ইত্যাদি। xi) জনপদ এবং নতুন জাতি- মন, শান্তি ও সমৃদ্ধ জীবন। প্রশিক্ষক কোর্সের জন্য পাঠ্যক্রম সাধারণ সিলেবাস এ) জাতীয় অর্থনীতিতে গ্রাম এবং গ্রামের জনসাধারনের উন্নয়নের গুরুত্ব। গ্রামবাসীর সংখ্যা, জনসংখ্যা, এলাকা, জনসংখ্যার ঘনত্ব, কৃষিকাজ, কুটিরশিল্প গ্রামের তথা জাতীয় আয়ের উৎস ও গ্রাম ও শহরের জনসংখ্যার মাথাপিছু আয় নিয়ে তুলনামূলক গবেষণা। বি) জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নে গ্রাম্য শ্রমের প্রতুলতা- শ্রমের সদ্ব্যবহার, শ্রম সমন্বয়, শিক্ষা এবং শ্রমের প্রশিক্ষণ। সি) গ্রামবাসীদের সমবায়, সমবায় সমিতি প্রত্যয়ন। ডি) গ্রাম পঞ্চায়েত স্থানীয় সরকার হিসেবে। গণতান্ত্রিক উপায়ে পঞ্চায়েত প্রত্যয়ন, পঞ্চায়েতের ভূমিকা শান্তি এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে, পঞ্চায়েতের সুবিধা এবং লাভ, ন্যায় বিচার এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে সহযোগিতা, পঞ্চায়েত জীবনের একটি সুশৃঙ্খল পদ্ধতি। ই) পঞ্চায়েতের কার্যাবলীঃ চোর, ডাকাত, দলত্যাগী এবং প্রতারক প্রতিরোধ ও দমন করতে গ্রাম বা প্রতিরক্ষাবাহিনী কঠোর সুশৃঙ্খলায় ব্যবহার করুন।
<003.168.412>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(ii) আইন, আদেশ ও ন্যায়- বিচার এর জন্য বাইরের সংস্থার উপর নির্ভরশীলতা বর্জন করতে সকল বিরোধ পরিষ্কার ও যথাযথ নিষ্পত্তি ও সমাধান করতে হবে। (iii) মালিক-শ্রমিক উৎপাদন বণ্টন, অনুশীলন, পর্যালোচনা করতে হবে সবক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক সম্মান প্রদর্শনে গুরুত্বারোপের জন্য (iv) গ্রামের সব জমি, পানি, শাকসবজি ও পশুসম্পদ ব্যবহার করে সমবেত শ্রমের মাধ্যমে সর্বোচ্চ খাদ্য উৎপাদন। (v) পাওয়া উৎসের দ্বারা স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন।
২. বেজ ওয়ার্কার্সঃ ——————— (i) বেজ কর্মীর সংস্থা এবং পরিচিতি- বেজ কর্মীর গুরুত্ব- গ্রাম উন্নয়ন- স্বনির্ভর গ্রামীণ অর্থনীতি ‘দূর্গ’ বাংলাদেশের গ্রামে এবং মাঠ পর্যায়ে বেজ কর্মীর ভূমিকা। (iii) বেজ কর্মীদের প্রকৃতি, জ্ঞান,চরিত্র, কঠোর শ্রমাভ্যাস, সক্রিয়করণ ক্ষমতা এবং কর্ম প্রক্রিয়া- বেস কর্মীদেরকে গ্রামবাসীর আস্থা অর্জন করতে হবে তাদেরকে সক্রিয় করার পূর্বে। (iii) যতটা সম্ভব কল্যাণ ও শক্তির নিমিত্তে সহজপ্রাপ্ত স্বাধীনতার রক্ষণাবেক্ষণ- অন্যথায় কল্যাণ, শক্তি এবং স্বাধীনতা নিজেরাই কলুষিত হবে। (iv) কল্যাণের পথ হিসেবে শেখ মুজিবের গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রের আদর্শ বুঝাতে বেস কর্মীরা জনগনকে উদ্বুদ্ধ করবে। ‘ইজম’ নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র হবে জনগনের স্থায়ী কল্যাণে আমাদের মৌলিক পদক্ষেপ- সামাজিক সহযোগিতা এবং গণতান্ত্রিক সরকার হবে সমাজের মূল ভিত্তি- জোচ্চুরদের দ্বারা কোন প্রতারণা এবং কলুষিত হওয়া নয়। (v) আত্মনির্ভরশীলতা- শ্রম- সমবায় ভিত্তিক গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে বেস কর্মীর সহায়তায় জনগনের মৌল পদক্ষেপ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে জোরদার করবে। গ্রামবাসী কল্যাণের এক মজবুত ভিত্তির উপর দাঁড়াবে। সকলে শান্তিতে বসবাস করবে। স্ব-রিযিক অর্থনীতিঃ ——————- (i) খাদ্য ও কৃষি চর্চা এবং আদিবাসী সম্ভাবনার বাংলাদেশের গ্রামে উন্নয়ন। খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, বাঁধ, সেচ, সবুজ সার, গভীর চাষ, বীজ বপন, ফসল, ফল, শাকসবজি, হাঁস-মুরগী, দুগ্ধ, মাছধরা, ভূমি ও পানি প্রতিটি ইঞ্চি ব্যবহার। গ্রামে পোষাক ও আবাসন। গ্রাম স্বাস্থ্য পরিচ্ছন্নতা, নিষ্কাশন, স্বাস্থ্যবিধি, পানি পরিশোধন, মহামারী প্রতিরোধ হিসেবে মশা ও মাছি নির্মূল, প্রতিরোধক হিসেবে আদিবাসীদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও নিরপেক্ষ ঔষধ প্রদানসহ অন্যান্য প্রবেশযোগ্য চিকিৎসা।
<003.168.413>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
গ্রাম্য শিক্ষা –
গ্রাম্য যোগাযোগ-রাস্তা , পথ, ব্রিজ, জলপথ – তৈরী ও ব্যবস্থাপনা এবং শত্রুদের বিরূদ্ধে সেগুলোর ব্যবহার ।
গ্রাম্য সৌন্দর্য-সংস্কৃতি এবং বিনোদনমূলক কার্যক্রম – গ্রামীণ শিল্পকলা, কারুশিল্প, কুশলতা এবং শিল্প.
প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণার্থীদের অধ্যয়নের দিক নির্দেশনাঃ
১। কৃষিঃ
ক। বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়নে কৃষি বিষয়ে পরিচিতি – দেশ ও কৃষি অর্থনীতি – কৃষিজ প্রয়োজনীয়তা – মোট জনসংখ্যায় কৃষি নির্ভরশীলদের শতকরা হার – জাতীয় আয় , জিডিপি , এনএনপি এর উৎস হিশেবে প্রাথমিক ইন্ডাস্ট্রিসমূহ
খ। চাষাবাদের সনাতন পদ্ধতি এবং আধুনিক উন্নত চাষাবাদ – চাষাবাদের প্রাচীন পদ্ধতির ত্রুটি এবং আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদের সুবিধা – বিস্তৃত এবং নিবিড় চাষাবাদ ইত্যাদি
গ। সেচ – সারের প্রয়োগ – কীটনাশক এবং উন্নত প্রচলিত অনুশীলন – উন্নত বীজ – উন্নত চাষ এবং চারার পরিচর্যা ইত্যাদি
ঘ। বিভিন্ন খাদ্য শস্য- যেমন ধান , বোরো ধান আটা এর উৎপাদনের জন্য নির্দেশনা – ডাল, সবজী, উঠোনে চাষ ইত্যাদি
ঙ। উৎপাদিত পণ্যের গুদামজাত সংরক্ষণ – বাজারজাতকরণ – পণ্যের পরিবহন ও বিতরন – পোলট্রি, ডেইরি এবং এই সম্পর্কিত বিষয়াদি ।
চ। বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা এবং তার সমাধান – আমন্ত্রিত সব পরামর্শ-মতামত এর সঙ্গে সহযোগিতা
২। বুনন-শিল্প:
ক। কুটির শিল্পের গুরুত্ব – খাদ্যের পরেই কাপড়ের প্রয়োজনীয়তা – কাপড়ের মান – রঙ – নকশা ইত্যাদি
খ। সুতার সরবরাহ – রঙের সরবরাহ – রঞ্জক – কাপড়ের বিভিন্ন ধরনের পন্য যেমন শাড়ি , লুঙ্গী , গামছা ইত্যাদি
গ। তুলাজাত পণ্যের দাম – বাজারজাতকরণের সুবিধা ইত্যাদি
ঘ। সমস্যাসমূহ – সমস্যাসমূহ নিয়ে আলোচনা – মতামত এবং পরামর্শ ইত্যাদি
৩। মৎস্য শিকারঃ
ক। মৎস্য এবং মৎস্য শিকার বিষয়ে পরিচিতি – মৎস্য বাংলাদেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাসে অতি প্রয়োজনীয় প্রোটিন যোগান দেয় – মৎস্য শিকারের কলাকৌশল ইত্যাদি
<003.168.414>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
খ। মাছ ধরার জাল সরবরাহ করা-নৌকার জন্য আলকাতরা সরবরাহ করা- নদ নদী থেকে বিভিন্ন ধরনের মিঠা পানির মাছ উৎপাদন করা- মৎস্যচাষের গুরুত্ব ইত্যাদি।
গ। মাছ সংরক্ষণ এবং গুদামজাতকরণ। মাছ বরফজাতকরণ- বাছাইকরণ- বাজারজাতকরণ। প্রয়োজনীয় মূলধন- ঋণপ্রদান- ঋণ পরিশোধ ইত্যাদি। সমস্যা সংক্রান্ত আলোচনা- মতামত ও পরামর্শের ভিত্তিতে নির্দেশনা প্রদান।
৪। বয়স্ক শিক্ষাঃ
ক। ভূমিকা- বয়স্ক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা- নিরক্ষরতা অভিশাপ। সুন্দর জীবন এবং শিক্ষা: জাপান, পশ্চিম জার্মানি, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত রাশিয়া, ফ্রান্সসহ বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশের প্রেক্ষিতে আমাদের দেশের তুলনামূলক আলোচনা- অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সাথে সম্পর্ক আলোচনা।
খ। বাঙালি জাতীয়তাবাদ সংক্রান্ত আলোচনা- আধুনিক নগরায়ন- সংবাদপত্র পাঠ- কাব্যগ্রন্থ পাঠ- পারিবারিক চিঠিপত্র পাঠ- চরিত্র গঠন প্রভৃতি।
গ। সামাজিক এবং রাজনৈতিক শিক্ষা- প্রচেষ্টার মাধ্যমে কিভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ উন্নতিলাভ করেছিল- তুরস্কের আধুনিকায়ন।
ঘ। সকল ধর্মের একতায় জোর দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা- ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং বাস্তব জীবনে নৈতিকতা- ধর্ম, মানবতা ও মানুষের মানসিক উন্নয়ন প্রভৃতি।
ঙ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি- দাতব্য কাজ- ন্যায়বিচার- বিভিন্ন সংগ্রামের উদাহরণ যেমন কারবালার যুদ্ধ, বিশ্বজনবোধ- জাতি ধর্ম নির্বিশেষে নিঃস্বার্থভাবে সমাজের জন্য কাজ করা ইত্যাদি।
চ। সমস্যাবলি আলোচনা করা, দ্রুত অগ্রগতির লক্ষ্যে মতামত ও পরামর্শের জন্য আমন্ত্রণ করা।
৫। কুটির শিল্পঃ
ভূমিকা- বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কুটির শিল্পের গুরুত্ব- জাপান, চিন, ভারত, হল্যান্ড ও বাংলাদেশের কুটিরশিল্পের তুলনামূলক আলোচনা। কুটিরশিল্প এবং বেকার সমস্যার সমাধান- অলস শ্রমিক এবং কুটিরশিল্প।
ক। কুটিরশিল্পের প্রকৃতি- বেত ও বাঁশের তৈরি পন্য সামগ্রী- ঘানি এবং সরিষার তেল, খেলনা সামগ্রী, মৃৎশিল্প ইত্যাদি।
খ। অর্থ সংস্থান- বাজারজাতকরণ- সমস্যা নির্ণয়- উন্নতিকল্পে মতামত ও পরামর্শ প্রদান।
৬। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও শোভাবর্ধনঃ
ক। পয়ঃপ্রণালী ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার গুরুত্ব- দৈনন্দিন জীবনের অংশ হিসেবে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা- পয়ঃপ্রণালী এবং টিকা প্রদান- বিশুদ্ধ পানীয়জলের ব্যবস্থাকরণ- পানি বিশুদ্ধিকরণ- মশা, মাছি নির্মূল- কলেরা, গুটি বসন্ত প্রভৃতি মহামারী রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদি।
খ। আদর্শ গ্রাম- পরিচ্ছন্ন এবং খোলামেলা বাতাসসমৃদ্ধ বাড়ি- উত্তম নিষ্কাশন ব্যবস্থা- পুকুর, খাল প্রভৃতি পরিষ্কার করা- কচুরিপানা, অবাঞ্ছিত ঝোপঝাড় পরিস্কার করা। বৃক্ষরোপণ- বাগান করা- স্বাচ্ছন্দ্যকর ও ব্যয়বান্ধব গ্রামীণ গৃহ পরিকল্পনা গ্রহণ।
গ। সমস্যা সংক্রান্ত আলোচনা ও পরামর্শ প্রদানের জন্য আমন্ত্রণ করা।
<003.169.415>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
কমিউনিটি উন্নয়ন ও স্থানীয় সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা | বাংলাদেশ সরকার পরিকল্পনা সেল | …১৯৭১ |
সামাজিক উন্নয়ন এবং স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন
স্থানীয় স্বায়ত্তশাসক দল, গ্রাম্য পঞ্চায়েত, ইউনিয়ন পরিষদ, থানা সমন্বয়ক দল এবং জেলা পরিষদকে সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রমের সাথে একীভূত হতে হবে। এসব স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত দলগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়া এই উদ্দেশ্য সাধনে যথাযথ।
যে মৌলিক ধারণার উপর ভিত্তি করে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের স্থাপনা দাঁড়িয়ে আছে তা হল, একটি ভালো সরকার কখনোই একটি স্বায়ত্তশাসিত সরকারের বিকল্প হতে পারে না। এটি শুরু হয় একটি সুস্পষ্ট কারণ মেনে নেয়ার মাধ্যমে, আর তা হল সকল সমস্যা সরাসরি কেন্দ্রীয় সমস্যা না এবং সকল সমস্যা কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের জন্য রেখে দেয়া হলে তা সমাজের একটি অংশের দায়িত্বজ্ঞান এবং উদ্ভাবনের অভ্যাসকে নষ্ট করে দিতে পারে। কোন একটি নির্দিষ্ট এলাকার অধিবাসীদের মধ্যে একটি সার্বজনীন উদ্দেশ্যে সচেতনতা থাকতে হবে, আশপাশের মানুষের প্রয়োজন সম্পর্কিত জ্ঞান থাকতে হবে যা শুধু তারাই পুরোপুরিভাবে জানতে পারে। They then find that the power to satisfy them of themselves gives to them a quality of vigour far greater in the happiness it produces than would be the case if satisfaction were always provided by, or controlled from, without. Because administrations firm without lacks the vitalizing ability to be responsible to local opinion;
এতে চিন্তাধারার ছায়া ও প্রকাশগুলো অনুপস্থিত যা একটি সফল সরকারের জন্য জরুরী। এতে স্থানিক প্রতিভাও অনুপস্থিত। যাদের শাসন করা হয় তাদের থেকে প্রকাশ্য সৃজনশীল কোনো সমর্থন এটি দেয় না। এটি যান্ত্রিক সর্বসাম্য বিরাজের জন্য, যা বিসদৃশ ব্যাপারে সদৃশ নিয়মগুলো খাটানোর একটি প্রচেষ্টা। এই প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত কারো আগ্রহ তৈরি করতে যা করা দরকার তা থেকে এটি অনেক দূরে। স্থানীয় বিষয়সমূহের কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপন জনরোষের সৃষ্টি করতে পারে, এবং এটি কখনোই সৃজনশীল সহায়তা প্রকাশ করতে পারবে না যা স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন এবং সামাজিক উন্নয়নের নীতি সংগঠিত করে।
কিছু সমস্যাঃ
১. অঞ্চলঃ স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের অঞ্চল যতটা সম্ভব ছোট হতে হবে।
২. গ্রাম ও জেলা পর্যায়ের স্থানীয় দলগুলোর সংবিধান।
এ) (i) ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে নির্বাচিত গ্রামের মেম্বারের নেতৃত্বে থাকা গ্রাম পঞ্চায়েত সকল গ্রামীণ উন্নয়ন এবং প্রশাসনিক কাজের জন্য দায়ী থাকবে।
(ii) ইয়ুথ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বেজ কর্মীরা তাদের নিজ নিজ গ্রামে স্থানীয়ভাবে আয়োজিত গ্রামীণ উন্নয়ন কার্যক্রমে কাজ করবে।
(বি) ইউনিয়ন পরিষদের ১০-১৫ জন সদস্য সরাসরি জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবে।
<003.169.416>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
(সি) থানা সমন্বয় দলঃ সমন্বয়ের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নিয়ে থানা পর্যায়ের সমন্বয় দল গঠন।
(ডি) জেলা পরিষদঃ প্রতিটি জেলার জনসংখ্যার উপর ভিত্তি করে সদস্যদের নিয়ে গঠন করা হবে। তারা সার্বজনীন বয়স্ক ভোটাধিকারের মাধ্যমে সরাসরি নির্বাচিত হবে।
(I) জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জেলার প্রধান নাগরিক হবেন। তাকে উপমন্ত্রীর পদমর্যাদা দেয়া হবে।
৩. কর্মকান্ডঃ
(এ) বিধিবদ্ধ এবং দৈনন্দিন কাজকর্ম,
(বি) উন্নয়ন কাজ- সমাজ উন্নয়ন
৪. সভার নিয়মতন্ত্রঃ
৫. আর্থিক সংস্থানঃ
(এ) স্থানীয় কর আদায়
(বি) সরকারি অনুদান
(সি) উন্নয়ন অনুদান
৬. কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে সম্পর্ক।
৭. স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত বেসামরিক সেবাঃ
(এ) সংগ্রহ
(বি) স্থানীয় দলের অধীনে কাজ করা কার্যালয়গুলোর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তাদের উপর থাকবে।
(সি) বেতন ও সেবার অন্যান্য শর্ত।
৮. সমাজ উন্নয়নে সম্পূর্ণ নিবেদিত শ্রমিক পুনর্গঠনের একজন ক্যাডার।
<003.170.417>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
কমিউনিটি উন্নয়নের “রওমারী” প্রকল্প সভার কার্যবিবরণী | রওমারী প্রকল্প | ৯-১০-৭১ |
রৌমারীর জন্য স্বনির্ভর পুনর্গঠন কার্যক্রম
৯ই অক্টোবর, ৭১ এ অনুষ্ঠিত; পররাষ্ট্র সচিব, জনপ্রতিনিধি, “আওয়ামী লীগ” কর্মী এবং কর্মকর্তাদের আলোচ্য বিষয়ের তালিকা
আলোচনাটি রৌমারী উপ-অঞ্চলের উন্নয়নে নিবিষ্ট ছিল। ঐ অঞ্চলের মোট জনসংখ্যা প্রায় তিন লাখ। পেশার উপর ভিত্তি করে মোট জনসংখ্যার শ্রেণীবিন্যাসঃ
১. কৃষক – ৯৫%
২. জেলে- ১%
৩. তাঁতি- ২%
৪.অন্যান্য- ২%
যেসব ক্ষেত্রে উন্নয়ন জরুরী বিবেচিত হয়েছেঃ
১. কৃষি
২. জনস্বাস্থ্য
৩. শিক্ষা
৪. যোগাযোগ
কৃষিঃ
১. কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করার লক্ষ্যেঃ
এ) পাওয়ার পাম্পের মাধ্যমে সেচঃ
পাওয়ার পাম্পের সংখ্যাঃ ১৭
ব্যবহারযোগ্য ১২
ব্যবহার অযোগ্য ৫
এই ১২টি পাওয়ার পাম্প ১২ x ২৫= ৩০০ একর জমি সেচ করতে পারবে,
বি) উন্নত প্রজাতির বীজ ব্যবহারঃ
- ইরি ৮ এবং ৫
- ম্যাক্সিপাহ গম
iii. আলু (হল্যান্ডের প্রজাতি)
- সরিষা (সুইডেনের প্রজাতি)
- কৃষকদের ঋণ সরবরাহ।
ইরি ৫ এবং ৮ নং প্রজাতি সেচ সুবিধা থাকা জমিতে চাষ করা যাবে।
বর্তমান উৎপাদন বৃদ্ধিতে ম্যাক্সিপাহ গম একটি অসাধারণ প্রজাতি।
<003.170.418>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
যেহেতু কৃষকেরা সাধারণত গরীব শ্রেণীর হয়ে থাকে সুতরাং নগদ অর্থ ঋণ অথবা অন্যান্য ঋণ এর প্রয়োজন হয়। ধান চাষের জন্য প্রতি একরে ইরি বীজের মূল্য ৩০০ রুপী হিসেবে সম্পূর্ণ ইরি ধান চাষের খরচ ৯০ হাজার রুপী হতে পারে। ইরি বীজ স্থানীয় বাজারে সহজলভ্য হলেও, গম চাষের বীজ বাইরে থেকে আমদানী করতে হয়।
জেলে :
জেলের সংখ্যা – ২০০০ (প্রায়)
জেলেরা স্বাধীন এলাকার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের কাছে কোন মূলধন নেই তাদের ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে তাদেরও ঋণ এর প্রয়োজন।
প্রয়োজনীয় ঋণ এর পরিমাণ অন্তত ১ লক্ষ রূপী।
তাঁতী :
অন্তত ৩ শতাধিক পরিবার কাপড় বুনে জীবিকা নির্বাহ করে। বর্তমানে তাদের কাছে অবশিষ্ট সম্পদ দিয়ে নিজেদের ব্যবসা চালানো তাদের জন্য প্রায় অসম্ভব। যদি তাদেরকে কিছু অর্থ সাহায্য প্রদান করা হয় তাহলে হয়তো তারা নিজেদের ব্যবসা চালিয়ে নিতে পারবে।
প্রয়োজনীয় ঋণ এর পরিমাণ – ৬০ হাজার রুপী। (পরিবার প্রতি ২০০ রুপী)
গণস্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন :
কলেরা বা বসন্তের মত মহামারী অনেক বড় একটি সমস্যা। ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি বড় মহামারীর ঘটনা ঘটেছে। সুতরাং এই ধরণের মহামারী ঠেকাতে সব ধরণের প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।
১. ঔষধ সরবরাহ
প্রয়োজন :
- কলেরা প্রতিরোধক ভ্যাকসিন – ৩০,০০০ সিসি
- বি সি জি – ১০,০০০ সিসি
- টি এ বি সি ইনজেকশন
- ব্লিচিং পাউডার – ১০ ড্রাম
- সালফাজুয়ানাইডিন ট্যাবলেট – ১৫,০০০
- স্যালাইন – ১০০০ ফাইল
- গ্লুকোজ ইনজেকশন – ১০০০
- ফার্স্ট এইড সেট – ১০টি
২. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা :
সবাইকে নিজেদের ঘর ও ঘরের চারপাশ পরিষ্কার রাখা উচিত। গ্রাম পরিষ্কার ও পরিচর্যা এবং সৌন্দর্য্য বর্ধন স্কিম চালু এবং বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মিলে এই কাজটি করতে পারেন।
হাসপাতাল :
রৌমারী তে অবস্থিত হাসপাতালে সুযোগ সুবিধা নগণ্য। এটিকে প্রয়োজনীয় ঔষধ এবং চিকিৎসার যন্ত্রপাতি সহকারে ২৫ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালে উন্নীত করা জরুরী।
<003.170.419>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিক্ষা :
১. প্রাথমিক – এখন পর্যন্ত ৬৩ টি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৩ টি খুলেছে।
২. বয়স্ক শিক্ষা – প্রতিটি গ্রাম মহল্লায় একটি করে বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র চালু করা জরুরী।
যোগাযোগ :
১. ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলো মেরামত।
২. নতুন রাস্তা খনন ও তৈরী।
৩. এই কাজের শতকরা ৮০ ভাগ স্বেচ্ছাসেবী কাজ এবং ২০ শতাংশ আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে করা জরুরী।
উন্নয়ন কমিটি ( রৌমারী সাব জোন) :
রাজনৈতিক :
১. জনাব সাদাকাত হুসেইন এম এন এ, চেয়ারম্যান।
২. জনাব নুরুল ইসলাম এম পি এ, ভাইস চেয়ারম্যান।
৩. জনাব আবদুল্লাহ সোহরাওয়ার্দী, মেম্বার।
৪. ড: মাফিজার রহমান এম এন এ, মেম্বার।
৫. জবাব ফজলুল হক খান, মেম্বার।
৬. জনাব আজিজুল হক, প্রধান শিক্ষক, রৌমারি হাই স্কুল।
৭. জনাব নুরুল ইসলাম, থানা আওয়ামী লীগ।
৮. জনাব নওশের আলী (চেয়ারম্যান)
৯. জনাব সিরাজ উদ্দিন আহমেদ (চেয়ারম্যান, মোল্লারচর হাট কমিটি)
দাপ্তরিক:
১০. জনাব আবদুল লতিফ, সাব জোনাল প্রশাসক।
১১. জনাব আবদুল করিম মিয়া, সি ও, (উন্নয়ন) রৌমারী।
১২. জনাব আবদুল সহিদ চৌধুরী সি ও, (উন্নয়ন) উলিপুর।
১৩. জনাব আবদুল মতিন টি এ ও, ভারপ্রাপ্ত।
১৪. জনাব আবদুল জলিল, টি ই ও, ভারপ্রাপ্ত।
সমাজসেবক :
১৫. জনাব এন এ জাহাঙ্গীর।
১৬. জনাব ফজলে রাব্বী।
১৭. জনাব সাইফুল আলম।
১৮. জনাব আজিজার রহমান।
১৯. জনাব আজমল হুসেইন।
২০. জনাব মতিয়ার রহমান।
২১. জনাব নুরুল ইসলাম (রাজিবপুর)
২২. জনাব শামসুল হক।
২৩. জনাব সাদা আলী সরদার (মাইনকার চর)।
<003.171.420>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
রৌমারী প্রকল্পের স্বেচ্ছাসেবকদের সভার কার্যবিবরণী | রৌমারী প্রকল্প | ২৪-১১-৭১ |
বাংলাদেশ সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প
২৪ নভেম্বর, ১৯৭১ বিকেল সাড়ে তিনটায় সার্কাস এভিনিউতে রৌমারী সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে একটি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়, যারা এই মিটিং এ যোগদান করেন তারা হলেন –
১. জনাব মাহবুব আলম।
২. জনাব তাহেরউদ্দিন ঠাকুর
৩. জনাব মোহাম্মদ খালেদ।
৪. জনাব আবুল কাশেম স্বন্দ্বীপ।
৫. জনাব নির্মল দাশ গুপ্ত
৬. স্বপ্না দেব। ( বিশেষ আমন্ত্রণে যোগদান করেন।)
৭. জনাব বিধু ভূষণ ভৌমিক।
জরিপ :
প্রকল্পে কাজ শুরু করার পূর্বে একটি জরিপ করা জরুরী। এই জরিপে সকল প্রয়োজনীয় তথ্যের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের কাজের ইচ্ছা এবং উৎসাহের ব্যাপারটা পরিমাপ করা প্রয়োজন।
চার্ট :
একটি চার্ট আপাতত কিছু সময়ের জন্য ব্যবহার করা হবে। এবং কিছুদিন পর বন্ধুদের কাছ থেকে আরো ৫০০ চার্ট পাওয়া যাবে।
উপাদানমূলক বই :
বর্তমান বইটিকে নতুন রূপে প্রকাশ করা জরুরী। জনাব কাশেম এবং জনাব বেলাল আগামী ৭ দিনের মধ্যে এই কাজটি সমাধান করবেন। এই কাজটি করার সময় তারা চার্টটি আরো একবার চেক করবেন এবং প্রয়োজনে চার্টের ব্যাপারে পরামর্শ দিতে পারবেন।
নির্দেশক দের প্রশিক্ষণ :
- সম্পূর্ণ প্রকল্পের জন্য প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
- প্রতি গ্রামে একজন সুপারভাইজার থাকবে।
- সুপারভাইজাররা নির্দেশক কর্তৃক প্রশিক্ষিত হবেন।
- যেসব শিক্ষক বাইরে থেকে যাবেন তারা অর্গানাইজার হিসেবে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন।
- দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত শিক্ষক এবং স্বেচ্ছাসেবকরা কলকাতায় অর্গানাইজার হিসেবে প্রশিক্ষণ পাবেন।
- বয়স্ক শিক্ষার জন্য প্রত্যেক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে একজন করে শিক্ষক থাকবেন।
<003.171.421>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
পাঠ্যক্রম :
- সমগ্র প্রকল্পের জন্য এই পাঠ্যক্রমে প্রশিক্ষণ গ্রহণযোগ্য। এটি সংগঠক এবং পরিদর্শক সকলের জন্যই প্রযোজ্য।
- সাহিত্যের উপর আরেকটি পাঠ্যক্রম রয়েছে যা শিক্ষকদের জন্য প্রযোজ্য।
সামাজিক উন্নয়ন এর জন্য প্রশিক্ষণ:
প্রশিক্ষণ এর বিষয় প্রশিক্ষক
স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন এবং সৌন্দর্য্য বর্ধন ডঃ টি হোসাইন।
ডঃ জন রোড এবং মিস্টার এলান টেইলর।
স্বপ্না দেব।
বয়স্ক শিক্ষা ডঃ ডি কে বিশ্বাস।
যৌথ খামার এবং সমবায় জনাব মোহাম্মদ আলম।
স্বেচ্ছাসেবকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য জনাব আবুল কাশেম স্বন্দ্বীপ।
রাজনৈতিক শিক্ষা ও লক্ষ্য জনাব তাহেরঊদ্দিন ঠাকুর।
অন্তর্দেশীয় বিজ্ঞান, ছোট সাশ্রয়, পরিবারের বাজেট ও শিশু. জনাব কাশেম।
পশুপালন
কুটির শিল্প
তাঁত শিল্প
মাছ ধরা
বয়স্ক শিক্ষা সংঘ :
জনাব খালেদ এবং জনাব কাশেম বাংলাদেশ বয়স্ক শিক্ষা সংঘকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং এটিকে সংস্থায় পরিণত করার অনুরোধ করেছেন।
চলচ্চিত্র :
সাহিত্য এবং উন্নয়ন প্রকল্পের উপর নির্ভর করে চলচ্চিত্র তৈরী করার উচিত্, যদি সম্ভব হয়।
কার্যক্ষম দল :
একটি সক্রিয় কার্যক্ষম দল হিসেবে জনাব মোহাম্মদ খালেদ, ডঃ আনিসুজ্জামান, জনাব আবুল কাশেম স্বন্দ্বীপ এবং জনাব মওদুদ আহমেদ উন্নয়ন প্রকল্প বিষয়ক সকল বিষয়াদি দেখাশোনার কাজ করবেন।
<003.172.422>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
রৌমারী প্রকল্পের স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর রিপোর্ট | রৌমারী প্রকল্প | ২৬-১১-৭১ |
বরাবর,
সচিব,
রৌমারী উন্নয়ন প্রকল্প
রৌমারী জেলা, রংপুর।
বাংলাদেশ।
১. প্রশিক্ষণ :
প্রশিক্ষণ ক্লাস ২৬ নভেম্বর ১৯৭১ থেকে শুরু হয়েছে যেখানে ৪৪ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নিয়েছেন। নিচের ইউনিয়ন সমূহ থেকে প্রশিক্ষণার্থীরা এই ১৪ দিনের প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন।
ক্রমিক | ইউনিয়নের নাম | পি. এস. | প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা |
১. | রৌমারী | রৌমারী | ১১ |
২. | মোহনগঞ্জ | চিলমারী | ৪ |
৩. | শাউলমারী | রৌমারী | ১১ |
৪. | বান্দাবের | রৌমারী | ৫ |
৫. | দাঁতভাঙ্গা | রৌমারী | ৮ |
৬. | জাদুর চর | রৌমারী | ৪ |
৭. | রমনা | চিলমারী | ১ |
সর্বমোট | ৪৪ |
সকল প্রশিক্ষণার্থীকে খাতা এবং পেন্সিল সরবরাহ করা হয়েছে।
প্রশিক্ষণার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা :
প্রশিক্ষণার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেশ সন্তোষজনক। নিচের চার্টে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করা হলো –
ক্রমিক | শিক্ষাগত যোগ্যতা | সংখ্যা |
১. | স্নাতক | ৪ জন |
২. | ডিগ্রী শিক্ষার্থী | ১২ জন |
৩. | মেট্রিক/এসএসসি/এইচএসসি | ১৪ জন |
৪. | সর্বোচ্চ দশম শ্রেণী | ৭ জন |
৫. | ন্যুনতম পঞ্চম শ্রেণী থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত | ৭ জন |
সর্বমোট | ৪৪ জন |
<003.172.423>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সারণি খ | বয়সের শ্রেণী | প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা | |
মধ্যবর্তী | ১৬ – ২০ বছর | ১২ জন | |
,, | ২১ – ২৫ বছর | ২২ জন | |
,, | ২৬ – ৩০ বছর | ৭ জন | |
,, | ৩১ – ৩৫ বছর | ১ জন | |
,, | ৩৬ – ৪০ বছর | ২ জন | |
,, | ৪১ – ৪৫ বছর | —— | |
,, | ৪৬ – ৫০ বছর | —— | |
সর্বমোট | ৪৪ জন |
৩. বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রঃ
বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র গঠনের আয়োজন করা হচ্ছে। এই আয়োজন যেখানে করা হয়েছে সেখানকার গ্রামবাসীদের মাঝে বিপুল উদ্যম দেখা গেছে। ৩০ নভেম্বর, ১৯৭১ পর্যন্ত মাত্র ছয়টি (৬) বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় উদ্যমী তরুণরা এসব বিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন। এসব বিদ্যালয়ে রাতে পাঠদান করা হয়। প্রতিটি বিদ্যালয়ে কিছু কিছু পোস্টার, তালিকা প্রভৃতি প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া উন্নয়ন কমিটি নিয়মিত ভাবে বিদ্যালয়ে কেরোসিন তৈল সরবরাহ করছে।
নিম্নের বিবৃতিতে বয়স্কদের সংখ্যা, শিক্ষকদের সংখ্যা ও অংশগ্রহণকারীদের বয়স উল্লেখ করা হলঃ
বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা | বয়স্কদের সংখ্যা | শিক্ষক সংখ্যা |
৬ | (ক) প্রতি কেন্দ্রে ২০ জন | ৬ |
(গড়ে) | ||
১২০ |
*দ্রষ্টব্যঃ প্রত্যেকেই স্বেচ্ছাসেবক
বয়স ভিত্তিক বয়স্কদের তালিকাঃ
বয়স শ্রেণী | সংখ্যা | |
মধ্যবর্তী | ১৪ থেকে ১৯ বছর | ————– |
,, | ২০ থেকে ২৫ বছর | ————– |
,, | ২৬ থেকে ৩১ বছর | ————– |
,, | ৩২ থেকে ৩৭ বছর | ————– এখনো নয় |
,, | ৩৮ থেকে ৪৩ বছর | ————– |
,, | ৪৪ থেকে ৪৯ বছর | ————– |
,, | ৫০ থেকে ৫৫ বছর | ————– |
৫৬ থেকে ৬১ বছর | ————– সহজলভ্য | |
৬২ থেকে বেশী | ————– |
ব্যবহারিক প্রশিক্ষণঃ
প্রশিক্ষণার্থীদের প্রতিদিন ব্যবহারিক প্রশিক্ষণও প্রদান করা হয়। পাশাপাশি ৭ (সাত) দিনের ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
<003.172.424>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৩. পরীক্ষাঃ
চৌদ্দ দিনের প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপ্ত হওয়ার পর প্রশিক্ষণার্থীদের পরীক্ষা নেয়া হবে। পরীক্ষায় উদ্দেশ্যমূলক প্রকৃতির প্রশ্ন থাকবে।
৪. সনদঃ
সফলতার সাথে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে একটি অনাড়ম্বর পূর্ণ অনুষ্ঠানে সনদ প্রদান করা হবে।
৫. প্রশিক্ষকঃ
প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের পরিচালক সহ বর্তমানে দুই জন নিয়মিত প্রশিক্ষক রয়েছেন, পাশাপাশি পাঠদান করবেন, উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক জনাব এম. এ. শহীদ চৌধুরী, C. O. (Dev.), উলিপুর থানা; ডাক্তার মতিউর রহমান, ডাক্তার, রৌমারী হাসপাতাল, C. O. (Dev.), রৌমারী থানা; জনাব এডভোকেট ফজলে রাব্বি প্রমুখ।
৬. গ্রাম পঞ্চায়েতঃ
গ্রাম পঞ্চায়েত গঠন করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত সফলভাবে গঠিত হয়েছে (৩০ নভেম্বর, ১৯৭১ পর্যন্ত) ।
৭. কর্মসূচীঃ
২৬.১১.৭১ থেকে ১২.১২.৭১ পর্যন্ত প্রশিক্ষণের (প্রথম ব্যাচ) বিস্তারিত কর্মসূচী এর সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে।
৮. উদ্বোধনঃ
জনাব সাদাকাত হোসেন, এম.এন.এ পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।
৯. প্রয়োজনীয় উপকরনের তালিকাঃ
ক) বাংলাদেশের ২০টি মানচিত্র
খ) বাংলাদেশ অন ডকুমেন্টস – ২ কপি
গ) বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রের ২২০ জন ছাত্রের জন্য স্লেট, বই প্রভৃতি
ঘ) স্বেচ্ছাসেবক নেতাদের প্রয়োজনমত শীতবস্ত্র।
স্বাক্ষর / অধ্যাপক বি. এন. মজুমদার
পরিচালক, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম
রৌমারী উন্নয়ন পরিকল্পনা
ডাকঘরঃ রৌমারী, জেলাঃ রংপুর,
বাংলাদেশ।
—————————————–
রৌমারী উন্নয়ন পরিকল্পনা
রৌমারী-রংপুর-বাংলাদেশ
২৬.১১.৭১ থেকে ১২.১২.৭১ পর্যন্ত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম
<003.172.425>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
সময় | ২৬.১১.৭১ | বক্তা |
১১.00 থেকে ১২.00 | সমাজ উন্নয়ন পরিকল্পনার ওপর সাধারণ আলোচনা। |
জনাব এম. এ. শহীদ চৌধুরী, C. C. (Dev) |
১২.00 থেকে ১৪.00 | সমাজ উন্নয়নের ধারণা, নীতি ও প্রয়োজনীয়তা | অধ্যাপক বি. এন. মজুমদার |
১৪.00 থেকে ১৫.00 | বাংলাদেশের গ্রাম, জনসংখ্যা, এলাকা, মাথাপিছু আয় প্রভৃতি। | জনাব এস. বি. দে, বি.কম |
২৭.১১.৭১ |
||
১১.00 থেকে ১২.00 | গ্রাম পঞ্চায়েত গঠন ও সংগঠনে এর সুফল | জনাব এম. এ. শহীদ চৌধুরী, |
১২.00 থেকে ১৩.00 | জাতীয় উন্নয়নে গ্রাম বাংলার শ্রমিক |
C. O. (Dev.) জনাব এস. বি. দে, বি.কম |
১৩.00 থেকে ১৫.00 | সমাজ ও এর গঠন অতীত ও বর্তমান এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সমূহ | অধ্যাপক বি. এন. মজুমদার |
২৮.১১.৭১ | ||
১১.00 থেকে ১২.00 | সমাজে আইন শৃঙ্খলা ও শান্তি | জনাব এডভোকেট ফজলে রাব্বি |
১৩.00 থেকে ১৪.00 | স্বাস্থ্য শিক্ষা | ডাক্তার মতিউর রহমান |
১৫.00 থেকে ১৬.00 | বাঙ্গালদেশের কৃষি ও অর্থনীতি | জনাব এস. বি. দে, বি.কম |
১৫.৩0 থেকে ১৬.৩0 | সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড |
২৯.১১.৭১ | ||||||
১১.00 থেকে ১২.00 | শস্য উৎপাদন সর্বাধিক বৃদ্ধিতে পুরনো চাষাবাদ পদ্ধতি ও আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি | জনাব এস. বি. দে, বি.কম | ||||
১২.00 থেকে ১৩.00 | সমাজ উন্নয়নে মানব প্রেরণা ও সংহতি | জনাব এডভোকেট ফজলে রাব্বি | ||||
১৪.00 থেকে ১৬.00 | সমাজ উন্নয়নে কুটির শিল্পের সংশ্লিষ্টতা | অধ্যাপক বি. এইচ. মজুমদার | ||||
১৬.00 থেকে ১৭.00 | সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড | |||||
১৮.২0 থেকে ২০.00 | মাঠ পর্যায়ে ব্যবহারিক কাজ – বয়স্ক শিক্ষা | |||||
|
৩০.১১.৭১ | |||||
১১.00 থেকে ১২.00 | সেচ, সার ব্যবহার, কীটনাশক, উন্নত বীজ ও উন্নত চাষাবাদ | জনাব এস. বি. দে, বি.কম | ||||
১২.00 থেকে ১৩.00 | গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যাবলী | জনাব এডভোকেট ফজলে রাব্বি | ||||
<003.172.426> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড |
||||||
১৩.00 থেকে ১৩.৩0 | উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জাতীয়তাবাদী প্রেরণার প্রয়োজনীয়তা | জনাব এন এ জাহাঙ্গীর বিএসসি. | ||||
১৪.00 থেকে ১৫.00 | আত্মনির্ভর সাধারণ জনকল্যাণ, বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ এবং সমাজ উন্নয়ন | অধ্যাপক বি. এইচ. মজুমদার | ||||
১৫.00 থেকে ১৬.00 | আন্দোলন সংশ্লিষ্ট সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড গঠন | ব্যবহারিক প্রদর্শন | ||||
১৮.00 থেকে ২০.00 | বয়স্ক শিক্ষার ওপর ব্যবহারিক পাঠদান | |||||
১.১২.৭১ | ||||||
১১.00 থেকে ১২.00 | গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যাবলী | জনাব এডভোকেট ফজলে রাব্বি | ||||
১২.00 থেকে ১৩.00 | বিভিন্ন খাদ্য শস্য যেমন ধান, গম, শাকসবজি ইত্যাদি বিষয়ক আলোচনা | জনাব এস. বি. দে | ||||
১৩.00 থেকে ১৩.৩0 | গ্রাম উৎপাদনকারীদের সমন্বয়ে সমবায় সমিতি গঠন | জনাব মোহাম্মাদ নুরুল ইসলাম, Thana Coop. Officer. | ||||
১৪.00 থেকে ১৫.00 | সমাজ উন্নয়নে ভিত্তি কর্মী ও তাদের গুরুত্ব | অধ্যাপক বি. এন. মজুমদার | ||||
১৫.00 থেকে ১৬.৩0 | সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড | |||||
১৮.00 থেকে ২১.00 | মাঠ প্রস্তুত, পঞ্চায়েত গঠন এবং বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রের গঠন ও জরীপ। | |||||
২.১২.৭১ | ||||||
১১.00 থেকে ১২.00 | খাদ্যশস্যের গুদামজাতকরন ও সংরক্ষণ, পরিবহন এবং বিপনন | জনাব এস. বি. দে | ||||
১২.00 থেকে ১৩.00 | সমাজ উন্নয়নে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের চেতনা প্রতিষ্ঠায় স্বেচ্ছাসেবী নেতাদের নিয়োগ | জনাব এডভোকেট ফজলে রাব্বি | ||||
১৩.00 থেকে ১৩.৩0 | বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমবায় নীতি | অধ্যাপক বি. এন. মজুমদার | ||||
১৪.00 থেকে ১৫.00 | গ্রামবাসীদের আস্থা অর্জনে ভিত্তি কর্মীদের আচার ব্যবহার ও অভ্যাস | অধ্যাপক বি. এন. মজুমদার | ||||
১৫.00 থেকে ১৬.০০ | সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড | |||||
১৬.00 থেকে ২১.00 |
গ্রাম ভিত্তিক মাঠ পর্যায়ের কাজ |
|||||
৪.১২.৭১ | <003.172.427> বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড | |||||
১১.00 থেকে ১২.00 | কৃষিপণ্যের গুদামজাতকরন, সংরক্ষণ, বিপনন ও বণ্টন। | জনাব এস. বি. দে, বি.কম | ||||
১২.00 থেকে ১৩.৩0 | উদ্ভিদ সংরক্ষণ | জনাব এন হক, A. O. রৌমারী | ||||
১৪.00 থেকে ১৬.00 | বাংলাদেশের উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে বয়স্ক শিক্ষার নীতি ও প্রয়োজনীয়তা | অধ্যাপক বি. এন. মজুমদার | ||||
১৮.00 থেকে ২০.00 | ব্যবহারিক – গ্রাম সংগঠন | |||||
৫.১২.৭১ | ||||||
১১.00 থেকে ১৩.৩0 | পোলট্রি খামার, দুগ্ধজাত ও সমগোত্রীয় বিষয়াদি | জনাব এস. বি. দে, বি.কম | ||||
১৪.00 থেকে ১৫.00 | সামগ্রিক সমাজ ব্যবস্থা, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বয়স্ক শিক্ষা | অধ্যাপক বি. এন. মজুমদার | ||||
১৫.00 থেকে ১৬.০০ | সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বিষয়ক ব্যবহারিক পাঠ | |||||
১৮.00 থেকে ২০.00 | ব্যবহারিক – গ্রাম সংগঠন | |||||
৬.১২.৭১ | ||||||
১১.00 থেকে ১২.00 | উচ্চফলনশীল জাতের শস্য যেমন IR-20, IR-8 ইত্যাদি | জনাব এস. বি. দে, বি.কম | ||||
১২.00 থেকে ১৩.00 | উদ্ভিদ সংরক্ষণ | জনাব নুরুল হক, কৃষি কর্মকর্তা, রৌমারী | ||||
৭.১২.৭১ | ||||||
১১.00 থেকে ১২.00 | বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নে মাটি, মাটির শ্রেণীবিন্যাসের গুরুত্ব | জনাব এস. বি. দে, বি.কম | ||||
১২.00 থেকে ১২.৩0 | দলগত আলোচনার পাঠ | জনাব এস. বি. দে, বি.কম | ||||
১২.৩0 থেকে ১৩.৩0 | গ্রাম উন্নয়নের পদ্ধতি হিসেবে সমবায় | জনাব নুরুল ইসলাম, T. C. O | ||||
১৪.00 থেকে ১৪.৩0 | নিঃস্বার্থ সমাজ সেবা এবং ন্যায়বিচার ও দানশীলতার বিশ্ববোধ | জনাব এডভোকেট ফজলে রাব্বি | ||||
১৪.৩0 থেকে ১৫.00 | গ্রামাঞ্চলে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ হিসেবে মৎস্য শিকার | অধ্যাপক বি. এন. মজুমদার | ||||
১৫.00 থেকে ১৬.00 | সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড | |||||
১৮.00 থেকে ২০.00 | ব্যবহারিক – গ্রাম সংগঠন | |||||
<003.172.428>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
০৮.১২.৭১ | ||
১১.০০-১২.০০ | তাঁতশিল্পঃ একটি গুরুত্বপূর্ণ কুটির শিল্প | জনাব এস.বি দে |
১২.০০-১২.৩০ | সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ে সম্মিলিত আলোচনা | জনাব এস.বি দে বি.কম |
১২.০০-১৩.৩০
|
কীটনাশকের ব্যবহার |
জনাব নুরুল হক, A. O. রওমারী . |
১৪.০০-১৫০০
|
জাপান, চীন, ভারত, হল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশের কুটিরশিল্পের তুলনামূলক আলোচনা | প্রফেসর বি.এন মজুমদার |
১৫.০০-১৬.০০ | সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান | |
১৮.০০-২০.০০ | গ্রাম্য সভা | |
০৯.১২.৭১ | ||
১১.০০-১২.০০ | দৈনন্দিন জীবনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা | জনাব এস.বি দে বি.কম |
১২.০০-১৩.৩০ | গ্রামীন জীবন বিষয়ে সম্মিলিত আলোচনা | জনাব এস.বি দে বি.কম |
১৪.০০-১৫.০০ | গ্রামীন যোগাযোগব্যবস্থা | প্রফেসর বি.এন মজুমদার |
১৫.০০-১৬.০০ | সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান | |
১১.১২.৭১ | ||
১১.০০-১২.৩০ | গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র- বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ নেতা শেখ মুজিবের দর্শন | প্রফেসর এস.এন মজুমদার |
১২.৩০-১৩.০০ | পরীক্ষা | |
১৪.০০-১৬.০০ | সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান | |
১৮.০০-২০.০০ | গ্রাম্য সভা | |
১২.১২.৭১ | ||
১১.০০-১২.০০ | আমাদের শ্রেষ্ঠ নেতার দর্শন | জনাব ফজলে রাব্বি, এডভোকেট |
১২.০০-১২.৩০ | সম্মিলিত আলোচনা | জনাব এস.বি দে বি.কম |
১২.৩০-১৩.০০
|
অর্থনৈতিক উন্নয়নে তরুনদের ভূমিকা |
জনাব এম.এ শহীদ চৌধুরী C. O. (Dev.) |
১৪.০০-১৬.০০ | সাধারণ সভা এবং প্রশিক্ষিতদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ | |
১৬.০০-১৭.০০ | চা-পর্ব |
এডভোকেট ফজলে রাব্বি, বি.এন. মজুমদার
২৯.১১.৭১ ট্রেনিং ডিরেক্টর, রৌমারী
ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান, রৌমারী
বাংলাদেশ
For Secretary
রৌমারী উন্নয়ন কমিটি
২৯.১১.৭১
<003.173.429>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
রওমারী প্রকল্পের স্বেচ্ছাসেবকদের সভার কার্যবিবরণী | রওমারী প্রকল্প | ০১.১১.৭১ |
বাংলাদেশ কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম
গত ১লা ডিসেম্বর, ১৯৭১ ইং তারিখ, বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে সার্কাস এভিনিউতে রৌমারী কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের অধীনে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যকার একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপস্থিতদের মধ্যে ছিলেনঃ
১. জনাব মাহবুব আলম
২. ড: আনিসুজ্জামান
৩. প্রফেসর খালেদ
৪. জনাব আবু জাফর
৫. জনাব মকসুদ আলি
৬. জনাব আবুল কাশেম
৭. জনাব আলিমুজ্জামান
৮. জনাব মুনিরুজ্জামান চৌধুরী
৯. মিসেস সেলিনা বানু
এবং
১০. মিসেস স্বপ্না দেব ( আমন্ত্রিত )
জরিপঃ
জরিপ চলাকালীন কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টের সমস্ত খুঁটিনাটি আলোচনার আওতায় আনতে হবে।
স্থানীয় পর্যায়ে সাড়াঃ
আলোচ্য সভা প্রফেসর মজুমদার এবং অন্যান্য স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের নিখোঁজ হবার ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। উল্লেখ্য, তিনি চলে যাবার পর থেকে প্রফেসর বিমল মজুমদার এর কাছ থেকেও কোনরূপ সংবাদ পাওয়া যায় নি। সভা থেকে আলোচ্য ইস্যুতে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পরিচয়পত্রঃ
প্রকল্পে কর্মরত এবং প্রকল্পের কাজে বাহিরে থাকা স্বেচ্ছাসেবকদের পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে।
রৌমারীর স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে প্রাপ্ত সাড়াঃ
যদি রৌমারীর স্থানীয় মানুষদের কাছে আশানুরূপ সাড়া না পাওয়া যায় তবে প্রকল্পের কাজ অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হবে।
আপদকালীন সময়ঃ
১. অর্থঃ
সভায় প্রকল্পের জন্যে একটি এডহক ফান্ডের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা হয় কিন্তু কোন নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
<003.173.430>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
২. ইয়ুথ ক্যাম্পঃ
যেহেতু যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্রের বন্ধ হয়ে যাবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, এই প্রশিক্ষিত তরুণদের কিভাবে
কাজে লাগানো যায় তা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে সভায় যা কি না এই তরুণদের পরবর্তী প্রকল্পে ব্যবহারের দ্বার খুলে দেবে।
৩. বয়ষ্ক শিক্ষা কার্যক্রমঃ
বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ যুব প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের চেয়ারম্যান এর কাছে একটি সার্বিক শিক্ষা কার্যক্রম পেশ করা হতে পারে।
.
৪. ডঃ মনিরুজ্জামান পশুপালন এর ওপর একজন প্রশিক্ষক এর খোঁজ করবেন। জনাব আলম কৃষি সংক্রান্ত একজন প্রশিক্ষক খুঁজে পাবার চেষ্টা করবেন।
৫. প্রশিক্ষণ এর সময়সূচী নির্ধারণঃ
সভায় এই মর্মে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া গিয়েছে যে প্রশিক্ষণ কর্মসূচী মোট ৭২ ঘন্টার মোট ১২ দিনব্যাপী চলবে। প্রশিক্ষকগণ নিজ নিজ বিষয়ের পাঠ্যক্রম ৭ দিন এর মাঝে তৈরী করবেন।
প্রাথমিক পর্যায়ের পুস্তক এবং তালিকাসমূহঃ
প্রাথমিক পর্যায়ের বই এবং তালিকাগুলো বারবার পরীক্ষিত হবে এবং একটি রিপোর্ট পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করতে হবে।
স্বেচ্ছাসেবকদের পরবর্তী সভা ৮ ডিসেম্বর বিকেল ৫ টায় অনুষ্ঠিত হবে।
<003.174.431>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
রৌমারী প্রকল্পের ব্যয় বরাদ্দের খতিয়ান | রৌমারী প্রকল্প | ০৯.১২.৭১ |
রৌমারী উন্নয়ন পরিকল্পনা
পোস্ট ও প্রযত্নেঃ রৌমারী
জেলাঃ রংপুর
বাংলাদেশ
ছয় মাসের সেচকাজের জন্যে ১২ ধাপে বরাদ্দকৃত বাজেট | ||
১. পরিকল্পনা ব্যবস্থাপকের প্রতি টিএ/ডিএঃ
সর্বমোট ১২টি পাম্পের পরিকল্পনা রয়েছে যেখানে ১২ জন ম্যানেজার থাকবেন।
প্রত্যেক ম্যানেজার সপ্তাহে ৫ টাকা হারে টিএ/ডিএ/ট্রেনিং এলাওয়েন্স পাবেন।
* প্রত্যেক সপ্তাহে নগদ পরিশোধিত বেতনঃ ১২*৫=৬০/-
* মাসিক বেতন হবেঃ ৬০*৪= ২৪০/-
* ষান্মাসিক বেতন হবেঃ ২৪০*৬= ১৪৪০/-
২. ১২ জন আদর্শ চাষী ও সাহায্যকারী ব্যক্তিঃ
প্রত্যেক আদর্শ চাষী প্রতি সপ্তাহে ৪/- হারে টিএ/ডিএ/প্রশিক্ষন ভাতা পাবেন। স্বেচ্ছাসেবা থেকেও একই পরিমান অর্থের যোগান পাওয়া যাবে যার কারণে এটি বাজেটের অন্তর্ভুক্ত হবে না।
নোটঃ এই খাতে ছয় মাসে মোট ব্যয়কৃত অর্থঃ ১১৫২.০০/-
৩. পাম্প ড্রাইভারঃ
১২ জন ড্রাইভার নিয়োগ দেয়া হবে এবং তাদের প্রত্যেকে প্রতি মাসে ৮০/- করে পাবে।
*সাপ্তাহিক বেতনঃ নেই
*মাসিক বেতনঃ ৮০*১২=৯৬০/-
*ষান্মাসিক বেতনঃ ৯৬০*৬= ৫৭৬০/-
৪. মেকানিকঃ
২জন ( ১জন মেকানিক, একজন সহযোগী
*সাপ্তাহিক বেতনঃ নেই
*মাসিক বেতনঃ
মেকানিকঃ ১৫০*১=১৫০/-
সহযোগীঃ ৮০*১=৮০/-
মোট= ২৩০/-
*ষান্মাসিক বেতনঃ ২৩০*৬= ১৩৮০/-
<003.174.432>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
৫. সেচকাজ পরিদর্শকঃ
১ জন। মাসিক বেতন ২১০ /- এবং ষান্মাসিক বেতন ১২৬০/-। কিন্তু এটি স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমে করা হবে যার কারনে এটি মোট বাজেটের অন্তর্ভুক্ত নয়।
৬. সমবায় পরিদর্শক (একজন) – |
মাসিক বেতনঃ
|
১৫০ /- |
ষান্মাসিক বেতনঃ | ১৫০*৬=৯০০/- | |
৭. ভান্ডার রক্ষক (একজন)- | মাসিক বেতনঃ | ১০০/- |
গার্ড(একজন)- মাসিক বেতন | ৭০/- | |
মোটঃ ১৭০/- | ||
ষান্মাসিক বেতনঃ |
১৭০*৬=১০২০/-
|
*সাপ্তাহিক- ব্যবস্থাপক
|
৬০/- | |
*মাসিক
|
(ক) ব্যবস্থাপক |
২৪০/-
|
(খ) পাম্প ড্রাইভার | ৯৬০/- | |
(গ) মেকানিক ও সহযোগী মেকানিক |
২৩০/-
|
|
(ঘ) সমবায় পরিদর্শক | ১৫০/- | |
(ঙ) ভান্ডার রক্ষক | ১৭০/- | |
মোটঃ ১৭৫০/- | ||
*ষান্মাসিক |
১৭৫০*৬=
|
১০,৫০০/- |
*দেনা | L.S | ৯০০০০/- |
মোটঃ ১,০০,৫০০/- | ||
|
||
Sd ফজলে রাব্বি for Secretary ০৯.১২.৭১ |
<003.175.433>
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
প্রতি,
সেক্রেটারি,
রওমারি উন্নয়ন পরিকল্পনা,
রওমারি,রংপুর,
বাংলাদেশ।
বিষয় : ১/১২/৭১ থেকে ১২/১২/৭১ পর্যন্ত প্রশিক্ষণ প্রকল্প প্রসঙ্গে।
প্রশিক্ষণ পাঠ: নিয়মিত প্রশিক্ষণ পাঠ প্রকল্প অনুসারে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
শিক্ষার্থীবৃন্দ : শিক্ষার্থীরা তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক উভয় পাঠেই নিয়মিত এবং উদ্দ্যমের সাথে অংশ গ্রহণ করছে।কিন্তু ০৬/১২/৭১ এ দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকেই গ্রামাঞ্চলে না থেকে চাকুরীর জন্য শহরাঞ্চলকে বেছে নিবে।তাদের আচরণ দেখে মনে হয় যে, দেশের উন্নয়নের জন্য স্বেচ্ছাশ্রমের সুযোগ নিবে না।কারণ,তারা তাদের পরিবারের জন্য কিছু উপার্যন করতে চায়। শিক্ষার্থীদের এই মানুষিকতা গুরুত্বে সাথে বিবেচনায় নিতে হবে।
শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ পাঠে উপস্থিতি সন্তোষজনক ছিল।( গড় উপস্থিতি ৯৭%)
অসম্পূর্ন জ্ঞানের কারণে প্রশিক্ষণ পাঠে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না।
১ম দল ৪৪ জন নিয়ে ২৬/১২/৭১ তারিখে শুরু হয়,শেষ হয় ২৯/১২/৭১ এ।
প্রশিক্ষক : বর্তমানে পাঁচ প্রশিক্ষক আছে। তাদের মধ্যে দুইজন নিয়মিত আর বাকি তিন জন খন্ডকালিন। আমাদের আরও আট জন প্রশিক্ষকের প্রয়োজন।
(ক) কৃষি বিজ্ঞান ২ জন
(খ) বয়স্ক শিক্ষা ২ জন
(গ) গ্রামীণ স্বাস্থ্য, শৌচ,সৌন্দর্য বিষক। ২ জন
(ঘ) গ্রামীণ সংস্থা ও সহযোগিতা বিষয়ক। ২জন
কৃষি বিজ্ঞান : ফসল তোলা শেষ না হওয়ার কারণে এখনও পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। পরিকল্পনার আওতায় ১২ টি পাম্প খুব শীঘ্রই সংগ্রহ করা হবে বলে আশা করছি।
<003.175.434>বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় খন্ড
বয়স্ক শিক্ষা :- খুব শীঘ্রই আটটি শিক্ষা কেন্দ্র চালু হতে যাচ্ছে।কেন্দ্র গুলো চালু হবে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে। ছাত্র সংখ্যা ১৬০ জন।
গ্রাম্য সংস্থা :- চৌদ্দ গ্রাম্য পঞ্চায়েত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
(পঞ্চায়েত)
রাস্তা সংস্কার:- রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে গেছে এবং এপর্যন্ত ১ কিলোমিটারের কাজ শেষ করা হয়েছে।
মৎস আহরণ :- ‘জেলে সঙ্ঘ’ গঠন করা হয়েছে এবং উন্নয়ন সংস্থা থেকে সঙ্ঘকে জালের আলকাতরা সরবরাহ করা হয়েছে।
জনসাধারণ :- শিক্ষার অভাব এখানকার জনসাধারণের জন্য অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে। এই অভিশাপ দূর করতে আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের কাজের প্রতি নিবেদিত হলেই, কেবল আনন্দের মাধ্যমে জনসাধারণের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।
আন্দোলনকে গতিশীল এবং প্রেরণা যোগাতে ‘JAR! PARTY ‘ গঠন করা হবে। আন্দোলনের সাফল্যের সাথে সাথে বাংলাদেশ সরকারের আদেশ, নির্দেশ ও দর্শনের সাথে আমাদের সংযোগ ঘটানো দরকার।
প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রঃ
(ক) ২০ টি বাংলাদেশের পতাকা।
(খ) ২ টি “BANGLADESH ON DOCUMENT ” বই।
(গ)আমাদের মহান নেতা শেখ মজিবুর রহমানের চিন্তা-চেতনা ও দর্শন সম্পর্কিত ১০০ টি পোস্টার।
(ঘ) উন্নয়ন কাজের চলচ্চিত্র।
আমি উন্নয়ন সংস্থার সদস্য হিসেবে চলমান প্রশিক্ষণের সাথে যুক্ত হতে পেরে গর্বিত।
“জয় বাংলা” sd/
Daicd: Rowmari. (PRIF.B.N.MAJUMDAR)
১০ই ডিসেম্বর, ১৯৭১। প্রশিক্ষণ পরিচালক
sd/ রওমারি উন্নয়ন সংস্থা
সভাপতি, পোস্ট অফিস – রওমারি।
এ্যাড.মোঃ ফজলে রাব্বি জেলা – রংপুর।
রওমারি উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশ।
১০/১২/৭১