৩ আশ্বিন ১৩৭৮ সোমবার ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
ভারতে শরণার্থীদের সংখ্যা ৯ মিলিয়নে পৌঁছে। ভারত বিশ্বের সকল দেশকে শরণার্থীর সংখ্যা মিলিয়ে দেখতে আহ্বান জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম বিমান বন্দরকে এ্যান্টি গেরিলা এ্যায়ার বেস করা হয়েছে।
পৃথিবীর ছয়টি মহাদেশের ২৫টি রাষ্ট্রের ৬৫ জন প্রতিনিধি নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশ সম্পর্কিত এক আন্তজার্তিক সম্মেলনে একটি আন্তজার্তিক ব্রিগেড গঠনের আহবান জানান। বাংলাদেশ থেকে ডঃ এ আর মল্লিক এ সম্মেলনে প্রতিনিধিত্ব করেন। উল্লেখ্য, জয় প্রকাশ নারায়ণ আয়োজিত আন্তজার্তিক সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকার প্রেরণ করলেন, মুক্তিসংগ্রামী শিল্পী সংস্থার ‘রূপান্তরের গানের’ শিল্পীদের। জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র, বিনয় রায় ভারতীয় গণনাট্য সংঘের প্রতিষ্ঠাতা এই দুই প্রবাদ পুরুষ বাংলাদেশ শিল্পীদের অভিনন্দন জানালেন। দিল্লীতে “গানেগানে মুক্তিযুদ্ধ” বাংলাদেশ শিল্পীদের অনুষ্ঠানের মূল মিশনটি ষোলকলায় সফল হয়।
সনজিদা খাতুন, ওবায়দুল হক এ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
৯ নং সেক্টর কম্যাণ্ডার মেজর এম এ জলিলের নেতত্বাধীন মুক্তিবাহিনী শত্রুবাহিনীর কাছ থেকে ৬টি মটর লঞ্চ উদ্ধার করে। ভারতীয় বাহিনীর সহায়তায় ৫০টি ব্রাউনিং বিমান বিধ্বংসী মেশিনগান দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী গড়ে ওঠে। লেঃ খুরশীদ (প্রাক্তন পাক নৌবাহিনী ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম অভিযুক্ত) এই নৌবাহিনী গড়ে তলায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এ বাহিনীর উপর প্রথম কাজ দেয়া হয় সুন্দর বনের অভ্যন্তরে গেরিলা ঘাঁটিগুলোতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রীতিমত সরবরাহ করা। দ্বিতীয়তঃ নদীতে আক্রমণাত্নক পাহাড়া দেয়া। তৃতীয়তঃ নৌ সংক্রান্ত কাজকর্ম সু-সমাধা করা। নৌসংক্রান্ত কাজকর্ম বলতে বুঝাত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি নিদিষ্ট ঘাঁটিতে নামিয়ে দেয়া।
৯ নং সেক্টরের কম্যাণ্ডার মেজর এম এ জলিলের নেতৃত্বধীন মুক্তিবাহিনীর ও আওয়ামী লীগ নেতা ডাঃ এস এ মালেক (রাজবাড়ী) এক কোম্পানী মুক্তিবাহিনী ও উন্নতমানের অশ্ত্রশস্ত্র নিয়ে ফরিদপুরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। প্রথমে তারা গোপালগঞ্জের রামদিয়া কলেজে ক্যাম্প স্থাপন করে। উল্লেখ্য, এই মুক্তিবাহিনীর দল পরবর্তীতে মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ মহকুমার বিভিন্ন স্থানে পাকসেনাদের সাথে যুদ্ধ করে। ডাঃ এস এ মালেক এ অঞ্চলে বেসামরিক প্রশাসন চালু করেন। পরবর্তীকালে কম্যাণ্ডার আব্দুল আজিজ মোল্লার (নগরকান্দা) সঙ্গে ক্যাপ্টেন বাবুলের ঐকমত্য সৃষ্টি হওয়ায় ফরিদপুর জেলায় মুক্তিযুদ্ধ থানাভিক্তিক সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে একটি সাংগঠনিক রূপ দেয়া হয়।
Reference:
একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী