২ আশ্বিন ১৩৭৮ রোববার ১৯ সেপ্টম্বর ১৯৭১
-ভারতীয় বিমানবাহিনী থেকে আটার এয়ার ক্রাফট, হেলিকপ্টার এবং একটি ডাকোটা বিমান নিয়ে নাগাল্যণ্ডের ডিমাপুরের বিমান ঘাটিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গঠিত হয়। বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনীর ডেপুটি চীফ অব ষ্টাফ এবং গ্রুপ ক্যাপ্টেন খোন্দকার আব্দুল করিম বিমান বাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হয়।
-জাতিসংঘ মহাসচিব উথান্ট, বাংলাদেশ সমস্যার পারস্পরিক বোঝাপড়া মাধ্যমে রাজনৈতিক সমাধান ও মানবিক সমস্যার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এক বিবৃতিতে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে বেসমাওরিক সরকার গঠন, শরণার্থীদের স্বদেশে ফিরে যাওয়ার আমন্ত্রণ সত্ত্বেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেনি। উল্লেখ্য, মহাসচিবের এই মন্তব্যে পাকিস্তান খুবই নাখোশ হয়।
-পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ডাঃ মালিক মন্ত্রিপরিষদের হামলা অব্যাহত থাকে।
-সিলেট সেক্টরাধীন মুক্তিবাহিনী সদস্যগণ অসামান্য নৈপুন্যের সাথে প্রায় সব কটা চা বাগান, পুল, ফেরী অকোজা করে দেয়। মেজর চিত্তরঞ্জন দত্তের নেতৃত্বাধীন বাহিনী পাক বাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু করে।
-The UN Secretary General, U Thant, affirmed that the basic problem in Bangladesh could be solved only if political solution based on reconciliation and respect humanitarian principles is achieved. (সংবাদপত্র)
-পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে যে, জাতীয় পরিষদের শূন্য আসনের উপনির্বাচন আগামী নভেম্বর ২৫ এবং ডিসেম্বর ৯ তারিখ মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য দু’দিন পর নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচনের তারিখ ডিসম্বের ১২ থেকে ২৩ পরিবর্তন করে।
-জেনারেল ইয়াহিয়া খানের শাসনতন্ত্র প্রণয়ন ও উপস্থাপনের অগণতান্ত্রিক পন্থার সমর্থনে জামাতে ইসলামীর অধ্যাপক গোলাম আযম সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক মজলিশ-ই-শুরার বৈঠকে শাসনতন্ত্র ফর্মুলার জন্য শুকরিয়া জানায়। (দৈঃ পাঃ)
১১ নং সেক্টরের মেজর আবু তাহেরের সঙ্গে স্কোয়াড্রন লীডার হামিদুল্লাহ এবং লেঃ মান্নান বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এই সেক্টরে যোগদান করেন। এরা দু’জনে মানকার চর ও মহেশগঞ্জ সাব সেক্টরের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। অবশিষ্ট এলাকা (১১ নং সেক্টরের) ভারতীয় বাহিনীর বিগ্রেডিয়ার সান্ত সিংহের কম্যাণ্ডে থাকে। বিগ্রেডিয়ার শান্ত সিংহের হেডকোয়াটারস ছিল তুরাতে। ট্রেনিং ক্যাম্পের প্রধানও ছিলেন তিনি। এই সেক্টরে বিশ হাজারের মত মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। তিন হাজার নিয়মিত এবং ১৭ হাজারের মত মুজিব বাহিনী (বিএলডি) বাহিনীর সদস্য ছিলেন।
নেপালে পক্ষকালব্যাপী কূটনৈতিক সফর সমাপ্ত করে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল মুজিব নগরে ফিরে আসেন। প্রতিনিধি দলনেতা জনাব আব্দুল মালেক উকিল এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তাদের এ সফর অত্যন্ত তাৎপর্য্যপূর্ণ ছিল। অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন, সর্ব জনাব আব্দুল মোমেন তালুকদার এম পি এ, সুবোধ কুমার মিত্র এম এন এ।
আওয়ামী লীগ নেতা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, ন্যাপ নেতা সৈয়দ আলতাফ হোসেন, এবং বেগম মতিয়া চৌধুরী “ফ্যাসিষ্ট সামরিক একনায়কত্বের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হও” শীর্ষক সর্ব ভারতীয় শিক্ষক ও ছাত্রদের কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন।
Reference:
একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী