বর্বরতার প্রতিযােগিতায় ইয়াহিয়ার বিশ্ব রেকর্ড: দখলদার নাৎসী বাহিনী বিপর্যস্ত
অসংখ্য হত্যা: বীভৎস ধ্বংসে সােনার বাংলায় শশানের রিক্ততা
আগরতলা, ৩ এপ্রিল: মুক্তিফৌজের দুরন্ত আক্রমণে ইয়াহিয়ার পাঞ্জাবি পাঠান ফৌজ যতই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে ততােই মরিয়া হয়ে নির্বিচারে প্রতি শহরে বােমা বর্ষণ করে যাচ্ছে। শহর দখলের পাল্টা আঘাতে সেনা ব্যারাক ও ছাউনিগুলােতে পাক সামরিক চক্র অবরুদ্ধ হয়ে পড়ছে।
এই বর্বর ঘাতক দলের রসদ ফুরিয়ে আসছে নতুন রসদ সরবরাহের চেষ্টা করেও মুক্তিফৌজের প্রবল প্রতিরােধে তা পেরে উঠছে না। ঢাকা শহর পুরােপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। হানাদারদের প্রচণ্ড আঘাতে চট্টগ্রাম, যশাের, কুমিল্লা বিপর্যস্ত হচ্ছে। অসংখ্য আত্মাহুতির বিনিময়ে কুষ্টিয়া, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর মুক্তিফৌজ দখল করে নিয়েছে। দখল করেছে বিভিন্ন বিমান বন্দর।
ইয়াহিয়ার নাৎসী বাহিনী স্ত্রী, পুরুষ, বৃদ্ধ, শিশু নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করছে। কল-কারখানা, অফিস-আদালত, মন্দির-মসজিদ ও গীর্জা ধ্বংস করে দিচ্ছে। লক্ষ লক্ষ শহীদের তাজা রক্তে সােনার বাংলা শ্মশানে পরিণত হচ্ছে। অবশ্য পাক বেতার সংবাদে এই পৈশাচিক বর্বরতার উল্লেখ মাত্র নেই। বিদেশী সাংবাদিকগণ পূর্ব বাংলার যে বীভৎস চিত্র তুলে ধরছেন তা পৃথিবীর যে কোনাে বর্বরতার ইতিহাসকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। পূর্ব-বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলনে এ পর্যন্ত মুক্তিফৌজের হাতে ইয়াহিয়ার সেনাবাহিনীর প্রায় ৬ হাজার সৈন্য নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৭ হাজারের উপর। বন্দির সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার। এ সংবাদ পরিবেশন করছেন বৃটিশ ব্রডকাস্টিং করপােরেশন।
সূত্র: গণসংহতি
৪ এপ্রিল ১৯৭১
২১ চৈত্র, ১৩৭৭