অবাঞ্ছিত ব্যক্তিদের হাতে রাজনীতি চলে যেতে পারে
ঢাকা: ঐক্যফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম নেতা এবং বাংলাদেশ জাতীয় লীগের সভাপতি জনাব আতাউর রহমান খান এমপি বলেছেন, দেশে বর্তমানে যে অবস্থা চলছে তা অব্যাহত থাকলে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তিদের হাতে রাজনীতি চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরাে বলেন, এর ফলে দেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতির মৃত্যু হবে। জনাব আতাউর রহমান খান গতকাল বিকেলে স্বীয় বাসভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ভাষণ দানকালে এ কথা বলেন। তিনি ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তিদের ব্যাখ্যা দান করে বলেন, যারা প্রকাশ্যে নয়-গােপনে রাজনীতি করছে, তাদেরই তিনি রাজনীতিতে ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি মনে করেন। তিনি বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সরকার দেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতি এবং গণতান্ত্রিক বিরােধীদল চান না। এই প্রসঙ্গে তিনি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করার ওপর মন্তব্যকালে বলেন, ১৪৪ ধারা জারি অগণতান্ত্রিক অবৈধ এবং উদ্দেশ্যমূলক। ঐক্যফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম নেতা জনাব আতাউর রহমান খান একটি প্রশ্নের জবাবে বলেন, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার আপাতত কোনাে পরিকল্পনা ঐক্যফ্রন্টের নেই।
তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্টের চারদফা দাবী এবং সরকারের নির্যাতনমূলক কার্যকলাপ ও দমননীতির প্রতিবাদে ফ্রন্ট আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা হতে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকা শহরে এবং আগামী ৫ জুলাই সারাদেশে হরতাল আহ্বান করেছে। তিনি ঐক্যফ্রন্টের আহূত হরতাল পালন করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি দেশের বর্তমান খাদ্য পরিস্থিতির ব্যাখ্যা প্রদান করে বলেন, খাদ্যের অভাবে লােক মরছে, মাও তার সন্তান বিক্রি করছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। অথচ খাদ্যমন্ত্রী বলছেন, দেশে খাদ্যের অভাব হবে না। তিনি খাদ্যমন্ত্রীর বিপরীত বক্তব্য দানের জন্য নিন্দা করেন। জনাব খান ১৯৭৪ থেকে ৭৫ সালের আর্থিক বাজেটের তীব্র সমালােচনা করে বলেন, এই বাজেট সাধারণ মানুষের ওপর মারাত্মক বিপদ ডেকে আনবে।
ভাসানীর অবস্থা: জনাব আতাউর রহমান খান ঐক্যফ্রন্টের স্থায়ী চেয়ারম্যান জনাব আবদুল হামিদ খান ভাসানী সম্পর্কে বলেন, মওলানা ভাসানী বর্তমানে সন্তোষের বাড়িতে অন্তরীণ অবস্থায় রয়েছেন এবং তাঁকে ৪০-৫০ জন পুলিশ পাহারা দিচ্ছে।১
রেফারেন্স: ১ জুলাই ১৯৭৪, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৪, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেণু সম্পাদিত