You dont have javascript enabled! Please enable it! 1969.02.14 | মুজিব সকাশে তাজুদ্দীন : দুই ঘণ্টাব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা | দৈনিক ইত্তেফাক - সংগ্রামের নোটবুক

দৈনিক ইত্তেফাক
১৪ই ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯
মুজিব সকাশে তাজুদ্দীন : দুই ঘণ্টাব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা
(ষ্টাফ রিপোর্টার)

পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সদ্য কারামুক্ত সাধারণ সম্পাদক জনাব তাজুদ্দীন আহমদ গতকাল (বৃহস্পতিবার) অপরাহ্নে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কুর্মিটোলায় দলীয় প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের সংগে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হন। এই বৈঠক প্রায় দুই ঘন্টাকাল স্থায়ী হয়। জনাব তাজুদ্দীনের নিকট হইতে জানা গিয়াছে যে, তিনি আগামীকাল (শনিবার) পুনরায় শেখ মুজিবুর রহমানের সংগে সাক্ষাৎ করিবেন।
গতকল্যকার আলোচনা সম্পর্কে জানিতে চাহিলে জনাব তাজুদ্দীন বলেন যে, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কেই তাঁহাদের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হইয়াছে। আগামীকাল শেখ সাহেবের সংগে আলোচনার পর জনাব তাজুদ্দীন ঐদিনই লাহোর যাত্রা করিবেন।

আদালতে তাজুদ্দীন
জনাব তাজুদ্দীন গতকাল (বৃহস্পতিবার) কুর্মিটোলা সেনানিবাসে “রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবর রহমান ও অন্যান্য” মামলার বিচারকারী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন।
কোর্টের অধিবেশন শেষ হইলে জনাব তাজুদ্দীন অভিযুক্তদের কাঠগড়ায় দণ্ডায়মান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমানের দিকে আগাইয়া যান। কাঠগড়ার ভিতরে দাঁড়াইয়াই আওয়ামী লীগ প্রধান হাত বাড়াইয়া জনাব তাজুদ্দীনকে গভীর মমতায় বুকে জড়াইয়া ধরেন। জনাব তাজুদ্দীনও দুই হাত প্রসারিত করিয়া নেতাকে আলিঙ্গন করেন। দুই নেতা গভীর অন্তরঙ্গতার সংগে কয়েক মিনিট ধরিয়া পারস্পরিক কুশল সমাচার ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এখানে, উল্লেখযোগ্য যে, শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক জাতির সামনে ছয়দফা কর্মসূচী প্রদানের এগার সপ্তাহ পরে ১৯৬৬ সালের ৯ই মে শেখ সাহেব এবং জনাব তাজুদ্দীন অন্যান্য সহকর্মীদের সংগে একই দিনে দেশরক্ষা আইনে কারারুদ্ধ হন।
পরে ১৯৬৮ সালের জানুয়ারী মাসে শেখ মুজিবকে দেশরক্ষা আইনে আটকাবস্থা হইতে মুক্তি দেওয়া হয় এবং একই দিনে ভারতীয় সাহায্য লইয়া সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাঁহাকে ঢাকা সেনানিবাসে আটক রাখা হয়। বর্তমানে তাঁহার বিচার চলিতেছে।
জনাব তাজুদ্দীন ৩৩ মাস কারাবাসের পর গতকাল অপরাহ্নে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার হইতে মুক্তিলাভ করেন। —পিপিআই

সুত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু: পঞ্চম খণ্ড ॥ ষাটের দশক ॥ চতুর্থ পর্ব ॥ ১৯৬৯