বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ৯ হাজার সমবায় সমিতি বাতিল হচ্ছে
প্রায় ৪৫ হাজার বিভিন্ন প্রকার রেজিস্ট্রার সমবায় সমিতির মধ্যে প্রায় ৯ হাজার ভুয়া সমবায় সমিতি শীঘ্রই বাতিল হয়ে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে নির্ভরযােগ্য সূত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে আগামী কিছুদিনের মধ্যেই সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘােষণা করা হচ্ছে বলে আভাস পাওয়া গেছে। ভুয়া সমবায় সমিতি নিরূপণের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্ত অনুষ্ঠানের আংশিক রিপাের্টের ভিত্তিতেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেশে প্রায় ৯ হাজার ভুয়া সমবায় সমিতি রয়েছে বলে প্রকাশ করেছে। এই সব ভুয়া সমবায় সমিতির মধ্যে অধিকাংশই তাঁতি সমবায় সমিতি, ভােগ্যপণ্য সমবায় সমিতি এবং জেলে সমবায় সমিতি রয়েছে বলে জানা গেছে। উল্লেখযােগ্য যে, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের সমবায় সমিতিসমূহ থেকে ভুয়া সমবায় সমিতি খুঁজে বের করার জন্য সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতি এক জরুরি নির্দেশ প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উক্ত প্রশাসনিক নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং জাতীয় সমবায় সমিতির প্রতিনিধির সমন্বয়ে সংশ্লিষ্ট দফতর কর্তৃক একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত অনুষ্ঠান কমিটি গঠন করা হয়। এমনকি উক্ত তদন্ত অনুষ্ঠান কমিটিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খাটি এবং ভুয়া সমবায় সমিতি সম্পর্কিত চূড়ান্ত রিপোের্ট সংশ্লিষ্ট দফতরে পেশ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। উক্ত তদন্ত অনুষ্ঠান কমিটিও নাকি তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পালন করার কাজে সচেষ্ট ছিলেন।
তদন্ত অনুষ্ঠান প্রায় শেষ পর্যায়ে : নির্ভরযােগ্য সূত্রে জানা গেছে যে, খাটি এবং ভুয়া সমবায় সমিতি নিরূপণের জন্য তদন্ত কমিটি নির্ধারিত তদন্ত অনুষ্ঠান প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইতােমধ্যেই নাকি ঢাকাসহ কয়েকটি জেলার বিভিন্ন প্রকার সমবায় সমিতি সম্পর্কিত তদন্ত অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেছে। জানা গেছে যে, অন্যান্য কয়েকটি জেলায় তদন্ত অনুষ্ঠানের কার্যকলাপও আগামী কিছুদিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। অবশিষ্ট জেলাসমূহে তদন্ত অনুষ্ঠানের কাজও নাকি দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। সংশ্লিষ্ট মহল থেকে আশা প্রকাশ করা হয়েছে যে, খুব শীঘ্রই তদন্ত অনুষ্ঠান কমিটি চূড়ান্ত রিপাের্ট পেশ করতে সক্ষম হবে।
তদবির পার্টির সুবিধা হচ্ছে না : জানা গেছে যে, কিছু সংখ্যক রাজনৈতিক টাউট এবং পেশাদার সমবায় সমবায়ের সুযােগ সুবিধা লাভের জন্য গঠিত বিভিন্ন প্রকার ভুয়া সমবায় সমিতি তদন্ত অনুষ্ঠানের ফলে যাতে বাতিল না হয়ে যায় তার জন্য নানা রকম চেষ্টা তদবির করেছিল। কিন্তু এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কড়া নির্দেশের ফলে তদবির পার্টির কোনােরকম চেষ্টা তদবিরই সফল হচ্ছে না বলে জানা গেছে। অবশ্য তদবির পার্টির চেষ্টা তদবির যে শেষ হয়েছে তা নয়, এখন পর্যন্ত নাকি তারা বিভিন্ন কলাকৌশল অবলম্বন করে চেষ্টা তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে চেষ্টা তদবির কোনাে অবস্থাতেই সফল হবে না বলে সংশ্লিষ্ট মহল দৃঢ় অভিমত ব্যক্ত করেছেন।৩৩
রেফারেন্স: ১২ ডিসেম্বর ১৯৭৩, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৩, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ